চ্যাম্পিয়নের ছবি হৃদয়ে আঁকছেন তারা
Published: 18th, February 2025 GMT
আট দল, ১৫ ম্যাচ, একটি শিরোপা; ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। আটটি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়বে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই আসরে। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে। এরপর ৯ মার্চ ফাইনাল।
আট দলের আট অধিনায়ক হৃদয়ে আঁকছেন চ্যাম্পিয়নের ছবি। নিজেদের দিনে সেরা ক্রিকেট উপহার দিয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার রণকৌশল প্রত্যেকের। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে আট অধিনায়কের ভাবনা মিশে গেছে এক বিন্দুতে, চ্যাম্পিয়নশিপে।
হাশমতউল্লাহ শাহীদি (আফগানিস্তান):
২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে আফগানিস্তান নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস খুঁজে বেড়াতে চাইবে। ভারতে সেবার ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তারা চমক দেখিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়াকেও প্রায় তারা মাটিতে নামিয়ে এনেছিল। সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিল। ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা সেমিফাইনাল খেলেছিল। তারা অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়েছিল। সবশেষ দুই আইসিসি ইভেন্টে তারা দুর্দান্ত পারফর্ম করায় এবারও তারা ডাকহর্স হিসেবেই থাকবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে।
আরো পড়ুন:
দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ে শুরু চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
বড় প্রত্যাশা নিয়ে নারীদের ঢাকা লিগ
হাশমতউল্লাহ শাহীদি, ‘‘আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। কারণ, আমাদের কাছে প্রতিটি ফরম্যাটে প্রতিটি দলকে হারানোর প্রতিভা আছে। আমাদের পরবর্তী বড় চ্যালেঞ্জ হলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, এটি আমাদের জন্য একটি বড় টুর্নামেন্ট এবং আমরা এটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’’
স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া):
২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথ। এবার কাকতালীয়ভাবে আবার অসিদের দায়িত্বে তিনি। প্যাট কামিন্স চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না থাকায় স্মিথ পেয়েছেন দলকে পরিচালনার দায়িত্বে। সেবার সেমিফাইনালে তুলতে পারেননি দলকে। এবার নিশ্চিতভাবেই বড় কিছুর খোঁজে থাকবেন।
‘‘আমার জন্য অধিনায়কত্ব করা মানে দলের প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সঠিক ব্যক্তিকে কাজে লাগানো। আমি বিশ্বাস করি দলের প্রত্যেকেরই সেই সামর্থ্য রয়েছে।’’
নাজমুল হোসেন শান্ত (বাংলাদেশ):
আইসিসি ইভেন্টে তৃতীয়বারের মতো নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন। ২৬ বছর বয়সী শান্ত প্রথম শিরোপার খোঁজে আছেন, ‘‘শিরোপা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আসার আগে, আমরা সবাই এবার ট্রফি জিততে চেয়েছিলাম। কারণ, গত কয়েকটি টুর্নামেন্টে আমরা ভালো করতে পারিনি। এবার আমরা ট্রফি জেতার কথা ভাবতে পারি। কারণ, আমাদের একটি খুব ভালো দল আছে। আমরা জানি কাজটা কঠিন। কিন্তু আমরা যদি নিজেদের কাজটা নিজেদের দিনে করতে পারি তাহলে আমরা জিততেও পারব।’’
জস বাটলার (ইংল্যান্ড):
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর কোনো শিরোপা জেতেনি ইংল্যান্ড। অধিনায়ক জস বাটলার অপেক্ষার পালা শেষ করতে চান পাকিস্তানেই, ‘‘আমি মনে করি আমরা এখনও আমাদের সম্ভাবনার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারিনি অথবা আমরা যেখানে থাকতে পারি সেখানে ব্যক্তিগতভাবে বা সম্মিলিতভাবে যেতে পারিনি। আমাদের প্রত্যাশা অনেক উচুঁতে। আমরা বিশ্বাস করি আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারি এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একটি বিপজ্জনক দল হতে পারি।’’
রোহিত শর্মা (ভারত):
ভারতের জন্য এই আসরটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। কেননা তাদের জন্য আইসিসি এই প্রতিযোগিতাকে বিভাজন করেছে পাকিস্তান ও দুবাইয়ে। সরকার থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়ায় ভারত দল পাঠায়নি পাকিস্তানে। এজন্য তাদের ম্যাচগুলো হবে দুবাইয়ে। স্বাগতিক হয়েও পাকিস্তানকে খেলতে হবে দুবাইয়ে। ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারত শিরোপা জিততে পারেনি। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে নিজেদের অপেক্ষা দূর করে। এবার তাদের চোখ শিরোপায়। রোহিত শর্মা বলেছেন, ‘‘দলে কিছুটা স্বাধীনতা আছে। ছেলেরা যেভাবে খেলতে চায় সেভাবেই যেন খেলতে পারে। বিশ্বকাপ তার একটি নিখুঁত উদাহরণ ছিল এবং আমরা এটি চালিয়ে যেতে চাই এবং এর উপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে চাই। এমন সময় আসবে যখন সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে না, তবে তা ঠিক হয়ে যাবে।’’
মিচেল স্যান্টনার (নিউ জিল্যান্ড):
যেকোনো আইসিসি ইভেন্টেই নিউ জিল্যান্ড অপ্রতিরোধ্য। নকআউট পর্ব তো বটেই প্রতিযোগিতার ফাইনালও খেলে তারা। সবশেষ ২০২৩ বিশ্বকাপের দারুণ পারফরম্যান্সে সেমিফাইনাল খেলেছিল দলটি। এবার দলটির নেতৃত্ব নতুন কাঁধ মিচেল স্ট্যানারের কাছে। ভালো শুরুর অপেক্ষায় তিনি, ‘‘এটা দারুণ জয় ছিল (ত্রিদেশীয় সিরিজ)। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন খেলোয়াড়রা এগিয়ে এসে পারফর্ম করেছে। আমরা এখন প্রথম ম্যাচটি খেলার অপেক্ষায় আছি।’’
মোহাম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান):
ঘরের মাঠে ১৯৯৬ সালের পর প্রথম কোনো আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করছে পাকিস্তান। এর আগে একাধিকবার সুযোগ আসলেও তারা পারেনি। সেজন্য পাকিস্তানের কাছে প্রত্যাশা আকাশচুম্বি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সবশেষ আসরে তারা চ্যাম্পিয়ন। এবারও শিরোপা ধরে রাখতে চান তারা।
পাকিস্তান দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান বলেছেন, ‘‘ক্রিকেটপ্রেমী দেশ হিসেবে, আমরা সবাই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ আয়োজনের জন্য খুবই রোমাঞ্চিত। সম্প্রতি ওয়ানডেতে ভালো পারফর্ম করায় এই মেগা-ইভেন্টের প্রতি আমাদের আবেগ এবং উৎসাহ বাড়িয়েছে, এবং আমরা আমাদের ঘরের দর্শকদের সামনে খেলার এবং আট দলের টুর্নামেন্টে সেরা হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।”
টেম্বা বাভুমা (দক্ষিণ আফ্রিকা):
২০২৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা শিরোপার ছোঁয়া পায়নি। ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম আসরে তারাই জিতেছিল শিরোপা। ২৭ বছর পর আরেকটি শিরোপার অপেক্ষায় তারা, ‘‘বিশ্বকাপে, আপনার কাছে পর্যালোচনা করার এবং এগিয়ে যাওয়ার সময় আছে। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে, আপনি তা করতে পারবেন না। তবে আমরা টুর্নামেন্টে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার আশাবাদী।’’
ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল খ ল স ম ফ ইন ল আম দ র র জন য প রথম আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
জুন মাসের মাঝামাঝি আসতেই এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্য জুনে পরিস্থিতি এমন হয়নি। সে বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুও সবচেয়ে বেশি ছিল।
গতকাল শনিবার আরও ১৬৯ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। আরও একজনের মৃত্যুর কথাও বলেছে। এই নিয়ে এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ৫ হাজার ৫৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর মারা গেছেন ২৯ জন।
গত বছর এই সময়ে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ১৯৩ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এই সময়ে ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ৩৯ জন।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯। আর মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৭০৫ জন। ওই বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০২। আর ওই সময়ের মধ্যে মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন।
সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, তিন বছরের মধ্যে এ বছরের জুনে রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি রোগী বাড়ছে।
ঢাকা মহানগরে কমঅন্য প্রায় সব বছরে দেখা গেছে, ডেঙ্গু প্রকোপ প্রথমে ঢাকা শহরে বা দেশের বড় শহরগুলোতে দেখা দেয়। এরপর তা ক্রমান্বয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ বছর দেখা যাচ্ছে, বেশি রোগী ঢাকা শহরের বাইরে, বিশেষ করে বরিশাল বিভাগে। এর মধ্যে বরগুনা জেলায় রোগী বেশি। দেশের দক্ষিণের এই জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৫০ জন।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক মো. হালিমুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরগুনা শহরে ডেঙ্গু বেশি হওয়ার তিন কারণ আমরা আপাতত শনাক্ত করতে পেরেছি। পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে কোনো কাজ করেনি। শহরে জলাবদ্ধতা আছে। এ ছাড়া মানুষ বৃষ্টির পানি ধরে রাখে। এগুলো মশার বংশ বৃদ্ধিতে সহায়ক।’