বগুড়ায় বিএনপির সাবেক নেতা পরিমলের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র দাখিল
Published: 18th, February 2025 GMT
বগুড়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও বিএনপির সাবেক নেতা পরিমল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদক বগুড়ার উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান গতকাল সোমবার বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরিমল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ১ কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ।
পরিমল চন্দ্র দাস বগুড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ বিষয়ে জানতে আজ মঙ্গলবার তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পরিমল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের নভেম্বরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালে পরিমল চন্দ্র দাসের কাছে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে ১ কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার ৪১৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়া যায়। দুদকের বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর দুদক জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন।
পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান দুদকের বগুড়া জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)