রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের মূলোৎপাটনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টেলিফোন আলাপের সময় পুতিন এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

বুধবার রাশিয়ার রাজধানীতে মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ এ কথাগুলো বলেন। ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের বৈঠকের বিষয় নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় বৈঠকের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বৈঠকে এ বিষয়ে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, সর্বোপরি এর মানে হলো ইউক্রেনকে ন্যাটোতে টেনে নিয়ে বহু বছর ধরে রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য যে হুমকি তৈরি হয়েছিল, তা দূর করা। যদিও বর্তমানে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য নয়। কিন্তু ২০০৮ সালে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ইউক্রেনের।

অপর দিকে রাশিয়া বারবার বলে আসছে, ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হলে তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তবে ন্যাটোর যুক্তি হলো প্রতিটি দেশেরই যেকোনো জোটে যোগ দেওয়ার অধিকার আছে।

আরও পড়ুনইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার টেবিলে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আলোচনায় বসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা। তিন বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেন সর্বাত্মক হামলা চালানোর পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হয়েছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৈঠকে দুই পক্ষের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে ইউক্রেন কিংবা ইউরোপের দেশগুলোর কাউকে এ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনযত দ্রুত সম্ভব মস্কো ও ওয়াশিংটনে দূতাবাস সচল করবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র ইউক র ন ল ভরভ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ