Risingbd:
2025-05-01@05:00:09 GMT

নতুন ভাষা দ্রুত শেখার উপায়

Published: 21st, February 2025 GMT

নতুন ভাষা দ্রুত শেখার উপায়

নতুন একটি ভাষা শিখতে হলে প্রথমেই যে সত্য আপনাকে মেনে নিতে হবে তাহলো – উচ্চারণ ভুল হবে, বানান ভুল হবে কিন্তু ভেঙে পড়লে চলবে না। অনেকে বার বার ভুল হওয়ায় লজ্জায় অনুশীলন ছেড়ে দেন, কিন্তু ভুলগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য দ্বিগুণ উৎসাহে চেষ্টা চালিয়ে গেলে ঠিকই সফল হওয়া সম্ভব।

টেন মিনিট স্কুলের ব্লগে লেখা হয়েছে, নতুন কোনো ভাষা শেখার অন্যতম উপায় হচ্ছে সেই ভাষাভাষী কারও সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা। তাহলে শেখার প্রক্রিয়াটি সহজ এবং স্বতঃস্ফূর্ত হবে।

ভীনদেশি ভাষার মানুষে খুঁজে পেতে প্রযুক্তির সহায়তা নিতে পারেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ফোরাম ও ব্লগসাইটেই পেয়ে যাবেন সন্ধান। যেমন – HelloTalk, Reddit(/r/languagelearning), Linguaholic ইত্যাদি । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পেয়ে যেতে পারেন ভাষা শেখার গ্রুপ। 

আরো পড়ুন:

বইমেলায় মাহমুদুল আলম দিপুর ‘২৯৩ মিলিয়ন ডলার এবং আমি’

বইমেলায় ডা.

প্রিন্স ঘোষের ‘বিবর্ণ’

প্রতিদিনের সময় নির্দিষ্ট করুন: নতুন ভাষা শেখা শুরু করলে তার জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখুন। ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা প্রতিদিন ভাষা অনুশীলন করতে পারেন। এতে দ্রুত শেখা সম্ভব। ছোট ছোট সেশনে অভ্যাস গড়ে তোলাই গুরুত্বপূর্ণ।

শব্দভান্ডার বাড়ান: যে ভাষা শিখবেন সেই ভাষার শব্দভান্ডার জানা খুবই প্রয়োজন। এজন্য প্রতিদিন কিছু নতুন শব্দ শিখুন এবং সেগুলোর প্রয়োগ শুরু করতে পারেন। প্রথমে সাধারণ শব্দগুলো শেখা ভালো। যেমন নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় ক্রিয়া বা বস্তু, তারপর ধীরে ধীরে জটিল শব্দ রপ্ত করায় মনোযোগ দিতে পারেন।। 

প্র্যাকটিস:  বাস্তবজীবনে নতুন ভাষা ব্যবহার করার চেষ্টা করতে পারেন। যদি ইংরেজি ভাষা শিখতে চান, তাহলে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা শুরু করুন। শুরুতে ছোট ছোট বাক্য তৈরি করুন। প্রথমে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলুন তারপর শেখাটা পরিপূর্ণ করার জন্য বলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন: যে ভাষা শিখবেন সেই ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। ওই ভাষা সম্পর্কিত সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সিনেমা, গান ও সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার মাধ্যমে ভাষা শেখার মান অনেক উন্নত করা যায় এবং সেই ভাষার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। 

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীর কৃষকেরা কেন হাইব্রিড ধানবীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন

দুই একর জমিতে জিংকসমৃদ্ধ ব্রি-৭৪ জাতের ধান চাষ করেছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা এলাকার কৃষক মো. মোস্তফা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি উদ্ভাবিত এই জাতের প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ৯ দশমিক ২৩ মেট্রিক টন, যা বাজারে থাকা যেকোনো হাইব্রিড ধানের চেয়ে বেশি।

নিজের খেতে চোখজুড়ানো সোনালি ধান দেখে অনেক বেশি উচ্ছ্বসিত কৃষক মোস্তফা। কারণ, বাজার থেকে কেনা হাইব্রিড ধান থেকে বীজ করা যায় না। কিন্তু ব্রি উদ্ভাবিত এই ধান থেকে অনায়াসে বীজ তৈরি করতে পারবেন তিনি। এতে থাকবে না বীজ কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তা। সেই সঙ্গে ধানগুলো জিংকসমৃদ্ধ হওয়ায় পরিবারের জিংকের ঘাটতিও দূর হবে। মোস্তফা বলেন, আগামী দিনে তিনি আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এই ধান চাষ করবেন।

মোস্তফার মতো একই এলাকার আরেক কৃষক ওমর ফারুকও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট(ব্রি) উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান ব্রি-৯২ চাষ করেছেন দুই একর জমিতে। বীজ ও সারসহ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৬২ হাজার টাকা। খেতের ধান এরই মধ্যে পাকা শুরু করেছে। ফলনের যে অবস্থা দেখছেন, তাতে মনে হচ্ছে, একরে ফলন হবে কমপক্ষে ১৭০ মণ। যার বাজারমূল্য দেড় লাখ টাকার বেশি।

ওমর ফারুকের খেতে ব্রির এই উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ দেখে এরই মধ্যে আশপাশের এলাকার অনেক কৃষক যোগাযোগ করেছেন বীজ নেওয়ার জন্য। কারণ, তাঁরা হাইব্রিড চাষ করে ঝুঁকিতে পড়তে চান না। নিজের বীজে নিজেই স্বয়ংসম্পন্ন হতে চান। তাই ওমর ফারুক ঠিক করেছেন, উৎপাদিত ধান থেকে ২৫ মণ রেখে দেবেন বীজের জন্য। এই বীজ বিক্রি করে বাড়তি আয় হবে তাঁর।

শুধু কৃষক হাজি মোস্তফা কিংবা ওমর ফারুকই নন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকেরা চলতি বোরো মৌসুমে ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন। পাচ্ছেন হাইব্রিড ধানের চেয়েও বেশি ফলন। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর গ্রামের কৃষক মাহফুজা বেগম ও আশরাফ হোসেন দম্পতির খেতে চাষ করা ডায়াবেটিক রোগীদের সহনীয় ব্রি-১০৫ জাতের ধানের ফলন পাওয়া গেছে হেক্টরপ্রতি ৮ দশমিক ২ টন, যা বাজারের হাইব্রিড বীজের সমান। এই ধানেরও বীজ সংরক্ষণ করতে পারবেন কৃষকেরা।

চলতি বোরো মৌসুমে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলে নতুন জাতের ব্রি ধানের ৪৯০টি প্রদর্শনী খামার করেছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফের স্থানীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে এসব প্রদর্শনীতে ব্রি উদ্ভাবিত ৮ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এই জাতের ধানগুলো উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী এবং বিভিন্ন পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ।

কৃষকেরা জানান, এত দিন তাঁরা বাজার থেকে বিভিন্ন কোম্পানির হাইব্রিড ও দেশীয় উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাতের ধানের বীজ কিনে আবাদ করে আসছেন। এবার এসবের বাইরে ব্রি উদ্ভাবিত উফশী ২৮, ২৯, ৫০ ও ৫৫ ধান আবাদ করেছেন অনেকে। এর মধ্যে হাইব্রিড বীজের প্রতি কেজির দাম ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর ব্রির উফশী ধানের বীজ ৫০-১০০ টাকায় পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রতি একর জমিতে চাষ করতে হাইব্রিড ধানের বীজ লাগে ৬ কেজি এবং উফশী জাতের বীজ লাগে ১০ কেজি। এসব বীজের মধ্যে হাইব্রিড প্রতি একরে উৎপাদন হয় ৯০ মণ, উফশী (উচ্চ ফলনশীল) ব্রি-২৮, ২৯, ৫০ ও ৫৫ উৎপাদন হয় ৭০-৭৫ মণ।

পিকেএসএফের কৃষি ইউনিট পরিচালিত সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কৃষিবিদ শিবব্রত ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, নোয়াখালী অঞ্চলের ৯৫ শতাংশ কৃষক বোরো মৌসুমে মূলত বাজারের হাইব্রিড ধানের ওপর নির্ভর থাকেন। আর দেশীয় উদ্ভাবিত ব্রি ধান জাত আবাদ করেন মাত্র ৫ শতাংশ কৃষক। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, হাইব্রিড ধান রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এতে অনেক কৃষকই লোকসানের মুখে পড়ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে ব্রি উদ্ভাবিত নতুন ব্রি-ধানগুলোর ফলন হাইব্রিডের মতো ফলন দেয় এবং কিন্তু রোগবালাই নেই বললেই চলে। এতে কৃষকের খরচ কমে। লাভ হয়, আর বীজও থাকে নিজের হাতে।

ব্রির উচ্চফলনশীল জাতের নতুন জাতের ধান চাষের কথা বলতে গিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মীরা রানী দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ব্রি-উদ্ভাবিত বিভিন্ন পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ধানগুলো চাষাবাদে কৃষকদের মধ্যে তাঁরা ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ করছেন। এর প্রধান কারণ হলো, এসব ধান চাষ করলে একদিকে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে, অন্যদিকে কৃষকেরা নিজেরা নিজেদের বীজ সংরক্ষণ করতে পারবেন। তা ছাড়া ব্রি উদ্ভাবিত এসব ধানে রোগবালাইয়ের আক্রমণ হাইব্রিডের তুলনায় কম এবং ফলন হাইব্রিডের সমান কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে হাইব্রিড থেকেও বেশি।

এ বিষয়ে ব্রির ফেনীর সোনাগাজীর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্রি এ পর্যন্ত ১১৫টি জাত আবিষ্কার করেছে। আগে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল খাদ্যের অভাব দূর করা, ফলন বাড়ানো। বর্তমানে আমাদের উদ্দেশ্য খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা। খাবার যাতে পুষ্টিমানসম্পন্ন হয়। অধিকাংশই আমিষ ও ভিটামিনের উৎস মাছ, মাংস, ডিম এবং ফলমূল। কিন্তু এসব সবাই কিনে খেতে পারেন না। যেহেতু ভাত প্রধান খাদ্য, এখন আমাদের যে জাতগুলো, এগুলো উদ্ভাবনে পুষ্টির দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।’ নতুন জাতগুলো পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, সেই সঙ্গে হাইব্রিডের প্রতি নির্ভরতা কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ