নতুন একটি ভাষা শিখতে হলে প্রথমেই যে সত্য আপনাকে মেনে নিতে হবে তাহলো – উচ্চারণ ভুল হবে, বানান ভুল হবে কিন্তু ভেঙে পড়লে চলবে না। অনেকে বার বার ভুল হওয়ায় লজ্জায় অনুশীলন ছেড়ে দেন, কিন্তু ভুলগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য দ্বিগুণ উৎসাহে চেষ্টা চালিয়ে গেলে ঠিকই সফল হওয়া সম্ভব।
টেন মিনিট স্কুলের ব্লগে লেখা হয়েছে, নতুন কোনো ভাষা শেখার অন্যতম উপায় হচ্ছে সেই ভাষাভাষী কারও সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা। তাহলে শেখার প্রক্রিয়াটি সহজ এবং স্বতঃস্ফূর্ত হবে।
ভীনদেশি ভাষার মানুষে খুঁজে পেতে প্রযুক্তির সহায়তা নিতে পারেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ফোরাম ও ব্লগসাইটেই পেয়ে যাবেন সন্ধান। যেমন – HelloTalk, Reddit(/r/languagelearning), Linguaholic ইত্যাদি । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পেয়ে যেতে পারেন ভাষা শেখার গ্রুপ।
আরো পড়ুন:
বইমেলায় মাহমুদুল আলম দিপুর ‘২৯৩ মিলিয়ন ডলার এবং আমি’
বইমেলায় ডা.
প্রতিদিনের সময় নির্দিষ্ট করুন: নতুন ভাষা শেখা শুরু করলে তার জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখুন। ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা প্রতিদিন ভাষা অনুশীলন করতে পারেন। এতে দ্রুত শেখা সম্ভব। ছোট ছোট সেশনে অভ্যাস গড়ে তোলাই গুরুত্বপূর্ণ।
শব্দভান্ডার বাড়ান: যে ভাষা শিখবেন সেই ভাষার শব্দভান্ডার জানা খুবই প্রয়োজন। এজন্য প্রতিদিন কিছু নতুন শব্দ শিখুন এবং সেগুলোর প্রয়োগ শুরু করতে পারেন। প্রথমে সাধারণ শব্দগুলো শেখা ভালো। যেমন নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় ক্রিয়া বা বস্তু, তারপর ধীরে ধীরে জটিল শব্দ রপ্ত করায় মনোযোগ দিতে পারেন।।
প্র্যাকটিস: বাস্তবজীবনে নতুন ভাষা ব্যবহার করার চেষ্টা করতে পারেন। যদি ইংরেজি ভাষা শিখতে চান, তাহলে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা শুরু করুন। শুরুতে ছোট ছোট বাক্য তৈরি করুন। প্রথমে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলুন তারপর শেখাটা পরিপূর্ণ করার জন্য বলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন: যে ভাষা শিখবেন সেই ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। ওই ভাষা সম্পর্কিত সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সিনেমা, গান ও সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। ভাষার সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার মাধ্যমে ভাষা শেখার মান অনেক উন্নত করা যায় এবং সেই ভাষার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জামিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে হাতাহাতি, স্টেনোগ্রাফার আহত
লক্ষ্মীপুরে আদালতে একটি জামিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন বিচারকের আদালত বর্জন করেছে আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবীদের সাথে আদালতের কর্মচারীদের হাতাহাতি ও এজলাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে আহত হন ওই এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আদালত বর্জন করায় ভোগান্তিতে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা।
জানা গেছে, রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামান (৩৫) এর বিরুদ্ধে গত ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর গত ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আইনজীবীরা।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, বাদী এবং আসামিদের মধ্যে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। ৫ জুন দিবাগত গভীর রাতে আসামিরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাদীর ভবনের সামনে থাকা একটি লোহার গেট কেটে নিয়ে এবং গেটের পিলার ভেঙে একটি পিক-আপ গাড়িতে করে রায়পুরের দিকে নিয়ে যায়। রায়পুর বাসাবাড়ি এলাকায় গেলে পিকআপ গাড়িটি টহল পুলিশ আটক করে। পরে গাড়িটি জব্দ ও চালক রুবেলকে আটক করে পুলিশ। মামলায় বাদী আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
আদালত সূত্র জানায়, গত ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থণা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদি আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নয়। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা অন্য আইজীবীদের দ্বারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। অন্যদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন।
আদালত সূত্র আরও জানায়, আসামিরা ৯ জুন জামিনের জন্য আবেদন করলে পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্ত সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার বন্ধে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং গ্রেপ্তারের পর থেকে আসামিরা জামিনের শুনানির সুযোগ পাননি। চারদিন তাদের হাজতবাস হয়েছে। ৬ জুন আসামি গ্রেপ্তার হলেও বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা জামিন শুনানির জন্য কোন আইনজীবী পাননি এবং লিগ্যাল এইড অফিসের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নিতে অনীহার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিন অযোগ্য ধারায় গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে উভয় দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হলো।
আদালত আসামিদের রিমান্ড না মঞ্জুর করে চারদিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনা করে আসামি কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকা বন্ডে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের জামিন হওয়ায় পর থেকেই আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এ ঘটনায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিচারকের অপসারণের দাবি জানান।
ঈদের বন্ধ শেষে রবিবার (১৫ জুন) আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবী সমিতি বৈঠক করে ওই আদালতের বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালতের বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিন সকাল থেকে ওই বিচারকের কক্ষে বিচারপ্রার্থীরা এসে উপস্থিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বিচারপ্রার্থী জানান, আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এ সময় ৭-৮ জন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে হট্টগোল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এ সময় আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক।
আহত আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘‘আইনজীবীরা হট্টগোল করায় বিচারকের নির্দেশে আমি দরজা বন্ধ করতে গেলে আমার ওপর আইনজীবীরা হামলা করে। এতে আমার বাম চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম হয়।’’
উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান জানান, কয়েকজন আইনজীবী এজলাসে গিয়ে আদালত বর্জনের বিষয়টি জানিয়ে দিতে গিয়েছেন। আদালত কর্মচারীরা উল্টো তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে তিনি নিজেও আহত হন।
ঢাকা/লিটন/টিপু