Risingbd:
2025-09-18@07:39:05 GMT

প্রসঙ্গ: আত্মকথা ইতিকথা

Published: 24th, February 2025 GMT

প্রসঙ্গ: আত্মকথা ইতিকথা

বইয়ের প্রথম লাইন ‘মাকে আমার মনেই পড়ে না।’ এই কথাটা যেকোনো মানুষের মন শূন্য করে দেবে নিঃসন্দেহে। গবেষক গোলাম মুরশিদের মৃত্যুর ঠিক ছয় মাস পর প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক বই ‘আত্মকথা ইতিকথা’র প্রথম লাইন এটি। এবং বইয়েই মাতৃহীন একটি মানুষের অস্থিরতা টের পাওয়া যায়। আত্মজীবনী পুরোটা শেষ করে যেতে পারেননি। যা পাওয়া গেলো তাই নিয়ে এই বই। ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’ এ এভাবেই নিজেকে মেলে ধরলেন গোলাম মুরশিদ। 

পাঁচ বছর হতে মাত্র কয়েক মাস, ঠিক এ সময় বসন্ত রোগে মারা গিয়েছিলেন গোলাম মুরশিদের মা। সেই থেকে তাঁর একাকী জীবন। নানুর স্নেহ, পিতার শাসন, বিয়ের পর স্ত্রী এলিজা মুরশিদের ভালোবাসা আর সারা জীবনের অধ্যাবসয় ‘আত্মকথা ইতিকথায়’ উঠে এসেছে। এতে রয়েছে এগারোটি বিষয়: মায়ের কথা, বাবার কথা, শিক্ষাজীবনের কথা, অশিক্ষার কথা, অসাংবাদিকতার ইতিকথা, বিবিসির কথা, প্রবাসের নানা কথা, বিলেতে শিক্ষকতার কথা, লেখালেখির কথা। 

জীবনের কতো প্রসঙ্গ বাদ রয়ে গেছে! মৃত্যুর মাসখানেক আগেও বলেছিলেন, যদি আরও কিছু দিন সময় পেতাম! কিন্তু সময় বড়ো নিষ্ঠুর। তাই সময় শেষ হয়ে গেলো। 

আরো পড়ুন:

বইমেলায় ঝুমকি বসুর তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ছাতিম ফুলের গন্ধ’

আমাদের একজন ডা.

জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী ছিলেন!

তবে ‘আত্মকথা ইতিকথা’য় যা পাওয়া গেছে, তা কম নয়। এই একনিষ্ঠ গবেষকের অনেক খামখেয়ালি কাজ এবং সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। জানা গেছে অনেক পাগলামির কথা। যেমন, আইএসসি পরীক্ষা চলাকালীন গণিত পরীক্ষার আগের রাতে রাত একটা পর্যন্ত ওস্তাদ গুল মোহাম্মদের উচ্চাঙ্গসংগীত শুনে নিজের হোস্টেলে ফিরেছিলেন। আবার তিনি ভালো রেজাল্ট করলে শিক্ষকতা করতে হবে এই ভয়ে এম. এ. ক্লাসে ভালোভাবে লেখাপড়া করেননি। তাঁর ‘অশিক্ষার ইতিকথা’ থেকে উদ্ধৃত করছি: ‘... আমার আশঙ্কা হইয়াছিল যে কোনো কারণে আমি যদি প্রথম শ্রেণী পাই, তাহা হইলে আমার কী হইবে? লোকে ভাবিবে, আমি লেখাপড়ায় ভালো, আমি ময়ূরপক্ষী। কিন্তু আমি তো জানি, আমি আসলে তিতির, ময়ূরের কয়েকটি পালক নিজের পাখায় গুঁজিয়া দিয়া ময়ূর সাজিতে চেষ্টা করিতেছি। ধরা যাউক, আমাকে কোনো কলেজে পড়াইতে বলিলে, কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার মূর্খতা এবং অজ্ঞতার সহিত আমার সত্যিকার চেহারা দাঁত মেলিয়া দেখা দিবে। সেই লজ্জা এবং দুর্গতি হইতে আমাকে তখন কে রক্ষা করিবে? সুতরাং ভাবিলাম, টেইক ইট ইজি। লেখাপড়া করার তেমন দরকার নাই!’ 

তারপরও তিনি প্রথম শ্রেণী পেয়েছিলেন! লিখেছেন, ‘আমার মূর্খতা এবং অজ্ঞানতা চারিদিকে ছড়াইয়া দেওয়ার প্রথম শ্রেণীর সনদ দেওয়া হইল। বস্তুত দশচক্রে বিদ্বান সাজিয়া কর্মপথে যাত্রা করিলাম।’ তাঁর কর্মযজ্ঞের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এর আড়ালের সেই পরিশ্রম, একনিষ্ঠতা, ছোটো ছোটো গল্পকথা, হাসি-কান্নার কথা কম মানুষেরই জানা আছে। ‘আত্মকথা ইতিকথা’য় সেই কথাগুলো রয়েছে। রয়েছে তাঁর বিভিন্ন গবেষণার নেপথ্যকথাও। 

গোলাম মুরশিদ আপদমস্তক গবেষক ছিলেন। গবেষককে কী কী করতে হয়, কতো দিকে দৃষ্টি দিতে হয়, কী ধরনের প্রশ্ন গবেষণাকে এগিয়ে নেয়  ইত্যাদি বিষয়গুলো রয়েছে এ বইয়ে। তাই যে কোনো গবেষকের জন্যও বইটি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া যাঁরা তাঁর জীবন সম্পর্কে জানতে চান, তাঁদের জন্য তো অবশ্যই। বইটি সম্পাদনা করেছেন স্বরোচিষ সরকার। এবং প্রকাশ করেছে অবসর। গোলাম মুরশিদের আরও কিছু অসম্পূর্ণ-অগোছালো পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত তা প্রকাশিত হবে।   

তারা//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ