Risingbd:
2025-05-01@04:56:42 GMT

প্রসঙ্গ: আত্মকথা ইতিকথা

Published: 24th, February 2025 GMT

প্রসঙ্গ: আত্মকথা ইতিকথা

বইয়ের প্রথম লাইন ‘মাকে আমার মনেই পড়ে না।’ এই কথাটা যেকোনো মানুষের মন শূন্য করে দেবে নিঃসন্দেহে। গবেষক গোলাম মুরশিদের মৃত্যুর ঠিক ছয় মাস পর প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক বই ‘আত্মকথা ইতিকথা’র প্রথম লাইন এটি। এবং বইয়েই মাতৃহীন একটি মানুষের অস্থিরতা টের পাওয়া যায়। আত্মজীবনী পুরোটা শেষ করে যেতে পারেননি। যা পাওয়া গেলো তাই নিয়ে এই বই। ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’ এ এভাবেই নিজেকে মেলে ধরলেন গোলাম মুরশিদ। 

পাঁচ বছর হতে মাত্র কয়েক মাস, ঠিক এ সময় বসন্ত রোগে মারা গিয়েছিলেন গোলাম মুরশিদের মা। সেই থেকে তাঁর একাকী জীবন। নানুর স্নেহ, পিতার শাসন, বিয়ের পর স্ত্রী এলিজা মুরশিদের ভালোবাসা আর সারা জীবনের অধ্যাবসয় ‘আত্মকথা ইতিকথায়’ উঠে এসেছে। এতে রয়েছে এগারোটি বিষয়: মায়ের কথা, বাবার কথা, শিক্ষাজীবনের কথা, অশিক্ষার কথা, অসাংবাদিকতার ইতিকথা, বিবিসির কথা, প্রবাসের নানা কথা, বিলেতে শিক্ষকতার কথা, লেখালেখির কথা। 

জীবনের কতো প্রসঙ্গ বাদ রয়ে গেছে! মৃত্যুর মাসখানেক আগেও বলেছিলেন, যদি আরও কিছু দিন সময় পেতাম! কিন্তু সময় বড়ো নিষ্ঠুর। তাই সময় শেষ হয়ে গেলো। 

আরো পড়ুন:

বইমেলায় ঝুমকি বসুর তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ছাতিম ফুলের গন্ধ’

আমাদের একজন ডা.

জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী ছিলেন!

তবে ‘আত্মকথা ইতিকথা’য় যা পাওয়া গেছে, তা কম নয়। এই একনিষ্ঠ গবেষকের অনেক খামখেয়ালি কাজ এবং সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। জানা গেছে অনেক পাগলামির কথা। যেমন, আইএসসি পরীক্ষা চলাকালীন গণিত পরীক্ষার আগের রাতে রাত একটা পর্যন্ত ওস্তাদ গুল মোহাম্মদের উচ্চাঙ্গসংগীত শুনে নিজের হোস্টেলে ফিরেছিলেন। আবার তিনি ভালো রেজাল্ট করলে শিক্ষকতা করতে হবে এই ভয়ে এম. এ. ক্লাসে ভালোভাবে লেখাপড়া করেননি। তাঁর ‘অশিক্ষার ইতিকথা’ থেকে উদ্ধৃত করছি: ‘... আমার আশঙ্কা হইয়াছিল যে কোনো কারণে আমি যদি প্রথম শ্রেণী পাই, তাহা হইলে আমার কী হইবে? লোকে ভাবিবে, আমি লেখাপড়ায় ভালো, আমি ময়ূরপক্ষী। কিন্তু আমি তো জানি, আমি আসলে তিতির, ময়ূরের কয়েকটি পালক নিজের পাখায় গুঁজিয়া দিয়া ময়ূর সাজিতে চেষ্টা করিতেছি। ধরা যাউক, আমাকে কোনো কলেজে পড়াইতে বলিলে, কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার মূর্খতা এবং অজ্ঞতার সহিত আমার সত্যিকার চেহারা দাঁত মেলিয়া দেখা দিবে। সেই লজ্জা এবং দুর্গতি হইতে আমাকে তখন কে রক্ষা করিবে? সুতরাং ভাবিলাম, টেইক ইট ইজি। লেখাপড়া করার তেমন দরকার নাই!’ 

তারপরও তিনি প্রথম শ্রেণী পেয়েছিলেন! লিখেছেন, ‘আমার মূর্খতা এবং অজ্ঞানতা চারিদিকে ছড়াইয়া দেওয়ার প্রথম শ্রেণীর সনদ দেওয়া হইল। বস্তুত দশচক্রে বিদ্বান সাজিয়া কর্মপথে যাত্রা করিলাম।’ তাঁর কর্মযজ্ঞের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এর আড়ালের সেই পরিশ্রম, একনিষ্ঠতা, ছোটো ছোটো গল্পকথা, হাসি-কান্নার কথা কম মানুষেরই জানা আছে। ‘আত্মকথা ইতিকথা’য় সেই কথাগুলো রয়েছে। রয়েছে তাঁর বিভিন্ন গবেষণার নেপথ্যকথাও। 

গোলাম মুরশিদ আপদমস্তক গবেষক ছিলেন। গবেষককে কী কী করতে হয়, কতো দিকে দৃষ্টি দিতে হয়, কী ধরনের প্রশ্ন গবেষণাকে এগিয়ে নেয়  ইত্যাদি বিষয়গুলো রয়েছে এ বইয়ে। তাই যে কোনো গবেষকের জন্যও বইটি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া যাঁরা তাঁর জীবন সম্পর্কে জানতে চান, তাঁদের জন্য তো অবশ্যই। বইটি সম্পাদনা করেছেন স্বরোচিষ সরকার। এবং প্রকাশ করেছে অবসর। গোলাম মুরশিদের আরও কিছু অসম্পূর্ণ-অগোছালো পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত তা প্রকাশিত হবে।   

তারা//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ