আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের অর্ধবছর পার হয়ে গেল। সরকারের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলটিরও পতন ঘটেছে, বললে ভুল হবে না। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতা হয় দেশত্যাগী, না হয় দেশেই আত্মগোপনে অথবা কারাগারে। এর মধ্যে দলটি নিষিদ্ধের দাবিও উঠেছে। সর্বশেষ, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘গণহত্যায় জড়িত নয়– আওয়ামী লীগের এমন কেউ নির্বাচন করতে চাইলে বাধা নেই’ (সমকাল, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)।

তার মানে, আওয়ামী লীগের সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনও রয়েছে। শুধু এবারই নয়; ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি বারবার পরীক্ষার মধ্যে পড়েছে; বিপদের খাদে গিয়ে ঠেকেছে। সেই খাদ থেকে আবার ঠিক ঠিক সাংগঠনিক কৌশল দিয়ে দলের কর্মী-সমর্থককে সংগঠিত করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
একইভাবে বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টিরও ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস রয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে এর নেতৃত্বের যেমন, তেমনি অপরাপর দলেরও শেখার আছে। কারণ সময়ের পালাবদলে স্রোতের অনুকূলে যত কথাই চলুক, ইতিহাস বিজয়ী এবং পরাজিত উভয় পক্ষকেই পরীক্ষার মধ্যে রাখে। প্রশ্ন হচ্ছে, এবার কি আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? পারলে, সেটা কীভাবে সম্ভব?

১.

দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের দরকার আত্মবিশ্লেষণ ও আত্মশুদ্ধির প্রত্যয়। ১৫ বছর ভালো বা মন্দ যা-ই করেছেন; অকপটে অতীতের সব ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কেবল বিবৃতি নয়; ভুল স্বীকারের জন্য মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হলে গণতান্ত্রিক আবহের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, তা যেমন ঠিক; তাই বলে বসে থাকাও চলবে না। বিশেষত গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। তাদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে সমঝোতায় আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশ ও দলের স্বার্থে আপসরফা ইতিবাচক রাজনীতিরই অংশ। রাজনীতিকে মনে করা হয় ‘আপসরফা শিল্পের চূড়ান্ত রূপ’। রাজনৈতিক বৈরিতা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত সম্পর্কের মাধ্যমে বরফ গলানোর দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনেও অনেক রয়েছে।
১৯৭৫ সালের পর ক্ষমতার বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের জন্য প্রথম নির্বাচনী রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন প্রয়াত মেয়র হানিফ। ১৯৯৪ সালে ঢাকা নগর সংস্থার প্রথম নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিএনপি প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন। মানুষ আওয়ামী লীগ এবং তাঁর কথায় আস্থা রেখেছিল। তিনিও সেই বিশ্বাস রেখেছিলেন। অতীতের সব ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে ঢাকাবাসীর কাছে একটি সুযোগ চেয়েছিলেন। 
আওয়ামী লীগ নেতাদের নিজের ঢোল পেটানোর চর্বিতচর্বণ বক্তৃতা যথেষ্ট হয়েছে। এসব বক্তৃতার কারণে বরং নবীন প্রজন্মের বড় অংশের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের কথা, মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ফারাক দূর করার জন্য বরং করণীয় নির্ধারণ করতে হবে।

২. পুঁজিপতিদের খপ্পর থেকে মুক্তি 
মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ ছিল মূলত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের দল। কিন্তু গত দেড় দশকের সুসময়ে এক দল অলিগার্ক বা লুটেরা পুঁজিপতি দলটিতে নেতাগিরি ফলিয়েছে। দলের বিপদের সময় এই ধনিক চক্র নিরাপদে চলে গেছে বা নতুন প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে আলগোছে ভিড়ে গেছে। গরিব কর্মী-সমর্থকই মার খাচ্ছে; জেল-জুলুমের মুখে পড়েছে; মারাও পড়ছে। বিপদ কেটে গেলে সেই ধনিক শ্রেণি যদি আবার দলের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তাহলে দলটির ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেখি না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গত সাড়ে চার দশকে দলের মধ্যে ধনিক শ্রেণির নিয়ন্ত্রণ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে এবং শেষতক কুৎসিত পর্যায়ে চলে এসেছিল, যা সরকার ও দলের বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। এ চর্চা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।  
আমরা আমআদমি যা জানি, আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব তা জানে না, এমন নয়। আম আদমিদের কথা ধরে দলটি কর্মপরিধি ও করণীয় ঠিক করবেন, তা মনে করার কারণ নেই। কিন্তু মনে করিয়ে দিতে চাই, রাজনীতিতে ‘আমি’ আর ‘আমার’ আত্মঘাতী আত্মকেন্দ্রিক চেতনা এক ধরনের বালাই। রাজনীতি হচ্ছে সমষ্টিকে নিয়ে চলা। সমষ্টিকে নিয়ে চলতে হলে অন্যের ভাবনার সঙ্গে আত্তীকরণ বা কাছাকাছি আসার কৌশল রপ্ত করতে হয়।  

৩. নেতৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ
রাজনৈতিক দল ও সরকার যদি এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক আর গোয়েন্দানির্ভর হয়, তার পরিণতি যে আখেরে ভালো হয় না– আওয়ামী লীগ তার সর্বসাম্প্রতিক উদাহরণ। দেশে দেশে এমন নজির ভূরি ভূরি।  
একজন মানুষ বা একজন নেতা সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন; সমাধান দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন– তাতে দোষের কিছু না। তিনি সব কৃতিত্বের ভারও নিতে পারেন। কিন্তু সব দোষ ও ব্যর্থতার ভার প্রকারান্তরে অবস্থা বুঝে যখন সেই একজনের ওপর এসে বর্তায়, তখন তিনি সেই ভার সইতে পারেন না। এই অবস্থায় সবকিছু ভেঙে পড়ে। আওয়ামী লীগের এমন বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দলীয় কাঠামো নিয়ে ভাবার দরকার। তবে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো, একজন মুখপাত্র বেছে নেওয়া।
গত ছয় মাসে একজন মুখপাত্র থাকলে দেশ-বিদেশের কূটনীতিকসহ নানা পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ কাজে লাগানো যেত। এতে দলটি আস্তে আস্তে পরিস্থিতির পক্ষে অনুকূল আবহ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারত। এর বদলে দলটি হয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমনির্ভর। এটি আওয়ামী লীগের জন্য আত্মঘাতী হচ্ছে। কারণ সামাজিক মাধ্যমের অনিশ্চয়তায় যে কোনো সময় দলটি যোগাযোগের শেষ হাতিয়ারও হারিয়ে ফেলতে পারে।

৪. থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পুনর্গঠন
ক্ষমতার দেড় দশকে দলটির ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ হিসেবে পরিচিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) যথেষ্ট তৎপর ছিল ইংরেজিনির্ভর ভাবনা উৎপাদন করতে। অথচ গরিব মানুষের সমর্থননির্ভর দলটির কয়জন মানুষ ইংরেজি পড়ে– সুসময়ের ঠিকাদাররা খোঁজ রাখেন? ভাষা আন্দোলনের গর্বিত ইতিহাসের অধিকারী দলটির থিঙ্ক ট্যাঙ্কারদের বাংলা ভাষায় বিরাগ ছিল কেন? সিআরআই টানা ছয় মাস ধরে ঘুমন্ত। এর কুশীলবরা সম্ভবত অপেক্ষায় আছেন– আবার দল কবে ক্ষমতায় ফিরবে; তখন তারা স্যুট-টাই পরে ইংরেজি ফলাতে ক্যামেরার সামনে হাজির হবেন।
আওয়ামী লীগকে নতুন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গঠন করতে হবে এবং দেশের ভাষা, সমাজ, রাজনীতি ও কূটনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ও দক্ষ মানুষকে দিয়ে তা সাজাতে হবে।   

৫. দলের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দূর 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত দেড় দশক ধরে বক্তৃতা করলেও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। দুর্নীতি সরকারি পর্যায়ে যেমন ছিল, তেমনি দলীয় পদ-পদবি ও কমিটি গঠনেও ছিল। দলীয় কমিটি গঠনে ছিল স্বজনতোষণ-পোষণ ও ঘুষ বাণিজ্য। এসব প্রবণতা বন্ধ করে সবার মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। দলের ভেতরে দুর্নীতির জন্যও দলীয় পর্যায়ে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক পরিবারতন্ত্র নয়; জেলায় জেলায় এমনকি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যে পরিবারতান্ত্রিক দাপট, সেসব থেকেও দলকে যথাসম্ভব উদ্ধার করতে হবে।  
দলীয় ফোরামে ও বাইরে কে বলল, তার চেয়ে কী বলল, সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নেতাদের তৈলমর্দন আর চামচামি ত্যাগ করে কর্মীদের বক্তব্য দেওয়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। এভাবে স্থানীয় পর্যায়ে সৎ, যোগ্য ও দুর্নীতিমুক্ত নেতা তুলে আনতে হবে। সৎ নেতৃত্বকে দল পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দলীয় তহবিল এবং দলীয় সদস্যদের নিয়মিত চাঁদা ও স্বচ্ছ অনুদান প্রথা চালু করতে হবে।  

৬. দলের ভেতরে বিতর্কে উৎসাহ
দলের মধ্যে বিতর্কের চর্চা থাকতে হবে। দ্বিমত পোষণকে উৎসাহিত করার উষ্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। এই পরিবেশ নিশ্চিত করা একান্তই নির্ভর করে শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর। সাড়ে চার দশকে শেখ হাসিনার মত ও সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন তেমন কারও দলের ভেতরে পরিণতি ভালো হয়েছে– এমন কোনো আভাস নেই। এ অবস্থার পরিবর্তন হতে হবে।  
পাশের দেশ ভারতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ছিলেন গান্ধী পরিবারের পছন্দের প্রার্থী। বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন শশী থারুর। শেষতক সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন খাড়গে। তাই বলে দলের ভেতরে নিগৃহীত হননি থারুর। অন্যদিকে রাহুল গান্ধী দলীয় ব্যর্থতার দায় নিয়ে নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করে দেশের এবং দলের দুঃসময়ে সারা ভারতে পদযাত্রা করেছেন, মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। মানুষ এবং দেশকে বোঝার চেষ্টা করেছেন। শেষতক দলকে মর্যাদাপূর্ণ একটি কাঠামোর ভেতরে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। 
আওয়ামী লীগের নতুন প্রজন্মের সম্ভাব্য নেতাদের মধ্য থেকে এ রকম একাধিক মুখ তুলে ধরার সুযোগ কাজে লাগানো আওয়ামী লীগে বিদ্যমান শীর্ষ নেতৃত্বের আখেরি দায় এখন।

৭. সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভ্রাতৃত্ববোধ 
একটি গণমুখী রাজনৈতিক দলের জন্য কর্মী-সমর্থকই শেষ কথা নয়। এর বাইরেও থাকতে পারে অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী। আওয়ামী লীগকে সেই শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভাবনাকেও সম্মান করার ইচ্ছা থাকতে হবে। দম্ভের তুড়ি মেরে এতকাল তা উড়িয়ে দিয়েই এই বিপর্যয়কর অবস্থা ডেকে আনা হয়েছে। ইতিহাস পরিক্রমায় যার যার প্রাপ্য অবদানকে স্বীকার করে নেওয়া ও তুলে ধরার মতো উদারতা প্রয়োজন হবে।  
সারাদেশে অগণিত প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নামে ঢালাওভাবে নামকরণ দূরদর্শিতার পরিচায়ক নয়। এ বিষয়ও বিবেচনায় নিতে হবে। টাঙ্গাইল জেলা সদরের মেডিকেল কলেজের নাম কোন যুক্তিতে শেখ হাসিনার নামে রাখা হয়েছিল? এতে কারও জন্যই তা মঙ্গল বয়ে আনেনি। যে জেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ছিলেন। এসব বিষয় দলীয় পর্যায়ে পর্যালোচনা দরকার অতীব গুরুত্বের সঙ্গে।

অতীতে না শুনলেও আওয়ামী লীগকে এবার তরুণ প্রজন্মের কথা শুনতে হবে। প্রান্তিক জনপদের দরিদ্র পরিবারের সন্তান তরুণ থেকে রাজধানীর বড়লোকের সন্তান পর্যন্ত তরুণদের মনের প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করতে হবে। শুনতে হবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কথা। তারপর ঠিক করতে হবে– দলীয় নীতি ও কর্মসূচি কী হবে। ঠিকাদারিনির্ভর সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিকল্প উদ্ভাবন প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অন্য দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমীক্ষার সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে। বিশেষত, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ এবং শ্রীলঙ্কার জনকল্যাণমুখী কর্মপরিকল্পনার সঙ্গে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের প্রয়োজন জাতীয় সংস্কৃতির ম্যানিফেস্টো রচনা করা। এটি হতে পারে সত্যেন সেনের উদীচী ম্যানিফেস্টোর আলোকে।

৮. ঘুরে দাঁড়ানো মানে ক্ষমতা নয় 
উপযুক্ত নেতৃত্ব ও কৌশলে বিপুল কর্মী-সমর্থকপুষ্ট আওয়ামী লীগের মতো রাজনৈতিক দল ঘুরে দাঁড়াতেই পারে। তবে এই ঘুরে দাঁড়ানোর মানে এই নয়– দলটি এক লাফে ক্ষমতায় বসে যাবে। ঘুরে দাঁড়ানোর অর্থ মানুষের কাছে যাওয়া, তাদের আস্থা ফেরানোর কার্যক্রমে শামিল হওয়া ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে দলের অস্তিত্বের জানান দেওয়া। পরিবেশ যদি গণতান্ত্রিক হয়, তাহলে সব বাধা উতরে গণতান্ত্রিকভাবেই আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াবে। এর ব্যত্যয় হলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো গণভিত্তি দলটির আছে; নেতৃত্বের গলদ কাটিয়ে ওঠা সদিচ্ছার ব্যাপার মাত্র। 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব গত পাঁচ দশকে বারবার ভুল করলেও, সেসব ভুল থেকে শিক্ষা নেয়নি। প্রকারান্তরে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়েছে; গোয়েন্দানির্ভর হয়েছে। এবারও যদি ভুল থেকে শিক্ষা না নিতে পারে, আখেরে মুসলিম লীগের পরিণতি হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

আনিসুর রহমান: কবি ও নাট্যকার, সুইডিশ লেখক সংঘের পরিচালনা পরিষদ সদস্য  
anisur.rahman@studieframjandet.se

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত র জন ত ক র জন য পর ব র কর ছ ন পর ব শ র পর ব পর য য় র র জন ন করত দলট র আওয় ম অবস থ সরক র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন আগামীকাল মঙ্গলবার। ‘বিশ্বের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত এই শহরে প্রথমবার এমন একজন মেয়র পদে নির্বাচিত হতে পারেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির চলতি ধারার একদম বিপরীতমুখী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর রিপাবলিকান পার্টি এক ‘শ্বেতকায়, খ্রিষ্টান ও রক্ষণশীল’ আমেরিকার কথা বলছেন।

জোহরান মামদানি শ্বেতকায় নন, তিনি বাদামি রঙের দক্ষিণ এশীয়। তিনি খ্রিষ্টান নন, একজন মুসলিম। তিনি অবশ্যই রক্ষণশীল নন, তিনি খোলামেলাভাবে একজন প্রগতিশীল, যিনি নিজেকে সমাজতন্ত্রী বলতে দ্বিধা করেন না।

‘মামদানি একজন ভয়ানক মানুষ’, সাবধান করে বলেছেন অ্যান্ড্রু কুমো, মঙ্গলবারের নির্বাচনে যিনি মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী। সারা জীবন ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য থাকলেও বাছাইপর্বে পরাজিত হয়ে তিনি এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।

ব্যালটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম না থাকলেও এই নির্বাচনে তিনি একজন অদৃশ্য প্রার্থী। কুমোর পক্ষ নিয়ে তিনিও এই নির্বাচনের একজন অংশগ্রহণকারী। বড় ব্যবধানে মামদানির বিজয় হলে অনেকেই তা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনাস্থা হিসেবেই দেখবেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কের আদি বাসিন্দা। তিনি কোনোভাবেই চান না মামদানি এই শহরের মেয়র নির্বাচিত হোন। তাঁর বিবেচনায় মামদানি শুধু একজন পাক্কা কমিউনিস্টই নন, রীতিমতো উন্মাদ। এমন একজনকে নির্বাচিত করা হলে তিনি নিউইয়র্ক সিটির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল আটকে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, মামদানি একজন অবৈধ অভিবাসী। তা প্রমাণিত হলে তাঁকে বহিষ্কার করা হবে। মেয়র নির্বাচিত হয়ে মামদানি যদি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের চলতি অভিযানে বাধা দেন, তাহলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

শহরের প্রতিটি প্রধান কেন্দ্র হেঁটে জনসংযোগ সেরেছেন মামদানি। ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক, যাঁদের অধিকাংশই নবীন, শহরের প্রতিটি বাসায় কড়া নেড়েছেন। টিকটক ও ইউটিউবে তাঁর উপস্থিতি অভূতপূর্ব। মামদানির এই ‘মাঠপর্যায়ের খেলা’ ঠেকাতে কুমো বেছে নিয়েছেন একদিকে ঘৃণা, অন্যদিকে ভীতি।

ট্রাম্পের ব্যাপারে জনরায়

শুধু নিউইয়র্কে নয়, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আরও অন্তত তিনটি রাজ্যে নির্বাচন হবে আগামীকাল, যার ফলাফল ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের ব্যাপারে একটি রেফারেন্ডাম বা জনরায় হবে ভাবা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নিউ জার্সি ও ভার্জিনিয়ায় গভর্নর পদে নির্বাচন। এই দুই রাজ্যে প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চ পরিষদেও ভোট গ্রহণ করা হবে। উভয় রাজ্যই ডেমোক্রেটিক রাজনীতির সমর্থক, বা ‘ব্লু স্টেট’। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই দুই রাজ্যেই ট্রাম্পের হার হয়, কিন্তু ২০১৬ সালের তুলনায় তিনি অনেক ভালো ফল করেন। দেখার বিষয়, দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে এই দুই রাজ্যে ট্রাম্পের জনসমর্থন এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে।

এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ায় গভর্নর গেভিন ন্যুসাম নির্বাচনী ম্যাপ পরিবর্তনের অনুমতি চেয়ে একটি গণভোটের আয়োজন করেছেন। আগামী বছরের নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে রিপাবলিকান পার্টি বড় রকমের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে। তা ঠেকাতেই ট্রাম্পের নির্দেশে টেক্সাসের নির্বাচনী ম্যাপ ঢেলে সাজানো হয়েছে, যার ফলে রিপাবলিকান দল কংগ্রেসে আরও পাঁচটি আসন নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হবে ভাবা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ‘ব্লু স্টেট’ ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ন্যুসামের নির্দেশে নির্বাচনী ম্যাপ বদলানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে সেখানে ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য কংগ্রেসে পাঁচটি আসনে বিজয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

এই তিনটি নির্বাচনের প্রতিটিতেই ভোটারদের মনে থাকবেন ট্রাম্প, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আইনি বাধা উপেক্ষা করে বিভিন্ন ডেমোক্রেটিক শহরে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানের নামে সেনাসদস্যদের পাঠাচ্ছেন তিনি। যেসব ডেমোক্রেটিক নেতাকে শত্রু মনে করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছেন। কোনো যুক্তি বা কারণ ছাড়াই ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর পক্ষে ভোট দেয়নি এমন ডেমোক্রেটিক রাজ্যের কেন্দ্রীয় অনুদান বাতিল করছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই একাধিক সরকারি দপ্তর আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে মাদক পাচার বন্ধের নামে ভেনেজুয়েলার সমুদ্রসীমায় সামরিক হামলা চালাচ্ছেন। আমদানি শুল্কের নামে যে বাণিজ্যযুদ্ধ তিনি শুরু করেছেন, তার ফলে নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যের দাম বাড়া শুরু হয়েছে।

গ্যালপ জানাচ্ছে, ২০২১ সালে দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ ধনতন্ত্রের সমর্থক ছিল, তা এখন কমে ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই যে পরিবর্তিত আমেরিকা, ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা সে কথা জানেন না বা জানতে চান না। গাজা প্রশ্নে তাঁদের রক্ষণশীল অবস্থান দলটির প্রতি নবীন প্রজন্মের ভোটারদের অবজ্ঞার জন্ম দিয়েছে।

এসব কার্যকলাপের ফলে সারা দেশে ট্রাম্পের জনসমর্থন কমেছে। অধিকাংশ জনমত জরিপে তাঁর প্রতি সমর্থন ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশের বেশি নয়। সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র ১০ মাসের মাথায় অন্য আর কোনো প্রেসিডেন্টের জনসমর্থনে এমন ধস নামেনি।

এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প কোনো রাজ্যেই ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি প্রচারে আসেননি। এমনকি রিপাবলিকান প্রার্থীদের পক্ষে সরব সমর্থনও জানাননি। এর একটা সম্ভাব্য কারণ, জয়ী হবেন এমন প্রার্থীর সমর্থন দিতেই ট্রাম্প ভালোবাসেন। আগামীকালের নির্বাচনে তেমন সম্ভাবনা কম।

এই নির্বাচন যে ট্রাম্পের ব্যাপারে জনরায়, তার আরেক প্রমাণ নির্বাচনী প্রচারণায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অংশগ্রহণ। ডেমোক্রেটিক পার্টিতে জাতীয় নেতা বলতে তিনিই সবেধন নীলমণি। শনিবার নিউ জার্সির ডেমোক্রেটিক গভর্নর পদপ্রার্থী মাইকি শেরিলকে পাশে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। একই দিন ভার্জিনিয়ায় ডেমোক্রেটিক গভর্নর পদপ্রার্থী এবিগেইল স্প্যানবার্গারের পক্ষেও প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। উভয় রাজ্যেই ওবামা কঠোর ভাষায় ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেন, ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী নীতির কারণেই আমেরিকা আজ এক দুঃসময়ের মুখোমুখি।

জনমতে এগিয়ে মামদানি

ওবামা মামদানিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দেননি। তবে তিনি যে মামদানির পাশে আছেন, সে কথাও গোপন রাখেননি। মামদানির ক্যাম্পেইন থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ওবামা নিজেই ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁর (মামদানির) বিজয়ের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তিনি বলেছেন, মামদানির নির্বাচনী প্রচার ‘ইম্প্রেসিভ’ বা নজরে পড়ার মতো।

কুমো ক্যাম্প থেকে অহোরাত্রি তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’ ও ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ হিসেবে প্রচার সত্ত্বেও মামদানি যেসব জনমত জরিপে এগিয়ে, তার একটি বড় কারণ মাঠপর্যায়ে তাঁর এই ‘ইম্প্রেসিভ’ প্রচারণা। শহরের প্রতিটি প্রধান কেন্দ্র হেঁটে জনসংযোগ সেরেছেন মামদানি। ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক, যাঁদের অধিকাংশই নবীন, শহরের প্রতিটি বাসায় কড়া নেড়েছেন। টিকটক ও ইউটিউবে তাঁর উপস্থিতি অভূতপূর্ব। মামদানির এই ‘মাঠপর্যায়ের খেলা’ ঠেকাতে কুমো বেছে নিয়েছেন একদিকে ঘৃণা, অন্যদিকে ভীতি। এতে তিনি ফল পাচ্ছেন, গত দুই সপ্তাহে মামদানির সঙ্গে তাঁর ব্যবধান ১০ শতাংশের মতো কমে এসেছে। নিউইয়র্কের চলতি মেয়র নির্বাচন থেকে এরিক অ্যাডামস সরে দাঁড়ানোয় কুমোর লাভ হয়েছে সন্দেহ নেই, তবে এখনো মামদানির সঙ্গে যে ১৬-১৭ পয়েন্টের ব্যবধান রয়েছে, তা অতিক্রম করা কার্যত অসম্ভব, এই মত অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের।

ভূমিধস পরিবর্তন

একটা বিষয় স্পষ্ট। মেয়র নির্বাচনে মামদানি জয়ী হলে তা মার্কিন রাজনীতিতে প্রজন্মগত ও নীতিগত পরিবর্তনের সূচনা করবে। ভূমিধস পরিবর্তন আসবে ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনীতিতে। মধ্যপন্থী ও ডানঘেঁষা রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে এই দল অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে কম জনপ্রিয়। এই দলে যাঁরা নেতৃত্বে, তাঁদের অধিকাংশই বয়োবৃদ্ধ, করপোরেট আমেরিকার কাছে এদের হাত-পা বাঁধা। ইসরায়েল প্রশ্নে তাদের সমর্থন এখনো আগের মতো নতজানু।

পিউ রিসার্চের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েল প্রশ্নে এখন নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে এমন আমেরিকানের সংখ্যা ৫৩ শতাংশ, যা তিন বছর আগের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। একইভাবে ধনতন্ত্রের প্রতিও আমেরিকানদের সমর্থন নিম্নগামী। গ্যালপ জানাচ্ছে, ২০২১ সালে দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ ধনতন্ত্রের সমর্থক ছিল, তা এখন কমে ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই যে পরিবর্তিত আমেরিকা, ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা সে কথা জানেন না বা জানতে চান না। গাজা প্রশ্নে তাঁদের রক্ষণশীল অবস্থান দলটির প্রতি নবীন প্রজন্মের ভোটারদের অবজ্ঞার জন্ম দিয়েছে।

অন্যদিকে ট্রাম্পের নেতৃত্বে রিপাবলিকান পার্টি খোলামেলাভাবে অভিবাসনবিরোধী, দক্ষিণপন্থী, খ্রিষ্টবাদী ও রক্ষণশীল। চলতি সপ্তাহের নতুন উদ্বাস্তু নীতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন শ্বেতকায় ও ইউরোপীয় আশ্রয়প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেবে। এই অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতকায় নাগরিকবৃন্দ, ট্রাম্প প্রশাসনের চোখে যারা সে দেশের সরকারের বৈষম্যের শিকার।

এই প্রতিক্রিয়াশীল রিপাবলিকান পার্টির বিপরীতে একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল ডেমোক্রেটিক আন্দোলন গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ও কংগ্রেস সদস্য ওকাসিও-কর্তেজ ইতিমধ্যে এই আন্দোলনের প্রধান মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। সবাই মানেন, মামদানির মতো তরুণ ও বুদ্ধিমান নেতৃত্ব এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে।

এই সম্ভাবনার কথা খুব স্পষ্ট করে বলেছেন বার্নি স্যান্ডার্স। তাঁর কথায়, এই দেশ করপোরেট আমেরিকার নির্দেশে চলবে, না তার রাজনীতির কেন্দ্রে থাকবে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ—এ মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ‘যদি আমরা দ্বিতীয় পথটি বেছে নিতে চাই, করপোরেট আমেরিকার বদলে সাধারণ মানুষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিই, তাহলে আমাদের মামদানির পাশে দাঁড়াতে হবে।’

কোন পথ বেছে নেবে নিউইয়র্ক, মঙ্গলবারেই তা নিশ্চিত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স