ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের উদ্দেশ্যে ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ বা ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজায় আটক থাকা সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে এবং গাজা ছেড়ে চলে যেতে হামাস নেতাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বিবিসি-র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় আটক থাকা সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে হামাসের উদ্দেশ্যে “শেষ সতর্কতা” জারি করেছেন এবং ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটির নেতাদের গাজা উপত্যকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বন্দিদের মুক্তি না দিলে “চড়া মূল্য দিতে হবে”।

একই পোস্টে তিনি লিখেছেন, “এটি আপনাদের জন্য শেষ সতর্কতা! (হামাসের) নেতৃত্বের এখনই গাজা ত্যাগ করা উচিত। আপনাদের জন্য এখনও সুযোগ রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “এছাড়াও, গাজার জনগণের কাছে (আমার বার্তা): আপনাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে, কিন্তু আপনারা যদি জিম্মিদের আটকে রাখেন তাহলে তেমনটি হবে না। যদি আপনারা তেমন কিছু করেন, তাহলে আপনি মৃত! স্মার্ট সিদ্ধান্ত নিন।”

মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এই হুমকিটি এমন এক সময়ে এলো যখন হোয়াইট হাউস ১৯৯৭ সালের পর প্রথমবারের মতো মার্কিন-ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজা যুদ্ধের অবসানের জন্য হামাসের সাথে সরাসরি আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে গাজা ভূখণ্ডের ওপর অবরোধ জারি করে রেখেছে ইসরায়েল। এতে সেখানকার ফিলিস্তিনিরা দিনে দিনে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ছে কারণ ইসরায়েলের অবরোধ খাদ্যের মূল্য ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং খাদ্য সংকটের সৃষ্টিও করেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, তাদের স্টকে যে খাবার রয়েছে তা দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে। 

আল জাজিরা বলছে, ওয়াশিংটন হামাসের সঙ্গে আলোচনায় নিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করার কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্স থেকে এই মন্তব্য করা হলো। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ‘দূত’ অ্যাডাম বোহেলার কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি এ আলোচনা ‘অভূতপূর্ব’ ঘটনা। কারণ দেশটি এর আগে কখনো সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেনি। ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দলটিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তকমা দিয়েছিল মার্কিন সরকার।

এই আলোচনার লক্ষ্য হলো হামাসের কাছে আটক থাকা মার্কিন বন্দিকে মুক্ত করা। এছাড়া সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। যেটির লক্ষ্য হলো সব বন্দিকে মুক্ত করা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন দ ক র জন য সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ