উইলিয়াম ওরর্ক এবং কাইল জেমিসন থাকার পরও নিউ জিল্যান্ডের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ম্যাট হেনরি। আসরে এখন পর্যন্ত ১০ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় শীর্ষে আছেন ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার। বিশেষজ্ঞরা তো বলেই দিয়েছিল, এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন হেনরিই। তবে ফাইনালের আগে স্পিডস্টারের ফিটনেস শঙ্কা জাগিয়েছে গোটা নিউ জিল্যান্ড শিবিরে।

লাহোরে দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে হেনরি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কাঁধে আঘাত পান। নিউ জিল্যান্ডের এই পেসার লং অনে হেনরাইখ ক্লাসেনের একটা ক্যাচ ধরতে গিয়ে আঘাত পান। তবে সেই ক্যাচ ধরতে না পারলে কিউদের হয়ত ফাইনাল খেলা সম্ভব হতো না। আসরের শীর্ষ উইকেট শিকারী হেনরি অবশ্য আঘাত পাওয়ার পরও দুই ওভার বোলিং করেন। এমনকি মাঠে তাকে ডাইভ দিতেও দেখা যায়। যা আশার সৃষ্টি করেছিল।

তবে ফাইনাল যতই ঘনিয়ে আসছে হেনরির ফিটনেস নিয়ে ততই কপালের ভাঁজ বাড়ছে কিউইদের। সেমি ফাইনালের পর পর, নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার হেনরির ফিটনেস নিয়ে আশাবাদী ছিলেন।

আরো পড়ুন:

আইসিসির মাস সেরা হওয়ার দৌড়ে আছেন স্মিথও

ফাইনালে আম্পায়ার থাকছেন যারা

তবে দলটির হেড কোচ গ্যারি স্টেড কোন নিশ্চয়তা দিলেন হেনরিকে নিয়ে, “ভালো দিক হলো যে সে (হেনরি) ফিরে এসে বোলিং করতে পেরেছে। আমরা স্ক্যান করিয়েছি তাকে ফাইনালে খেলানোর জন্য  যা যা করা লাগে করব। তবে এই মুহূর্তে, কিছুটা ধোঁয়াশায় আছি ওর ফিটনেস নিয়ে। সে স্পষ্টতই তার কাঁধের জয়েন্টে খুব যন্ত্রণা অনুভব করছিল। আশা করছি সে ঠিক হয়ে যাবে।”

হেনরি টুর্নামেন্টে ৪ ইনিংসে ১৬.

৭০ গড়ে ১০ উইকেট নিয়েছে। যার মধ্যে আছে দুবাইতে গ্রুপ পর্যায়ে ভারত বিপক্ষে ৫ উইকেট। যদি হেনরি ফাইনালে খেলতে না পারেন, তবে নিউ জিল্যান্ডের স্কোয়াডে পেসার জ্যাকব ডাফি রয়েছেন। যদিও এই ডানহাতি সিমার এখনও টুর্নামেন্টে কোন ম্যাচে খেলেননি। 
দুই আসর পর নিউ জিল্যান্ড আবারও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল খেলবে। 

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টন স ফ ইন ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ