সোনারগাঁওয়ে সুলতানি শাসনামলে নির্মিত ৫০৬ বছরের পুরনো অনন্য মুসলিম নিদর্শন গোয়ালদী শাহী মসজিদ সংস্কার ও যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি’। 

শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার গোয়ালদী এলাকায় অবস্থিত গোয়ালদী শাহী মসজিদের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মী, কবি, লেখক, গণমাধ্যম কর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। 

সংগঠনটির আহ্বায়ক কবি ও সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সোনারগাঁওয়ে স্বাধীন সুলতানদের শাসনামলে ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেনশাহের আমলে গোয়ালদী শাহী মসজিদটি নিমার্ণ করা হয়।

এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন থাকলেও মসজিদটির বিভিন্ন অংশ বর্তমানে ঝঁকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনের স্তম্ভটি হেলে পড়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে।

এছাড়া মসজিদের চার কোনায় চারটি স্তম্ভের উপরের মাথার গোলাকার গম্বুজ ইতিমধ্যে ধসে গেছে। দ্রুত এর সংস্কার করা না হলে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো বিলীন হয়ে যাবে।এ ঐতিহাসিক মসজিদটি দ্রুত সংস্কার করে যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য দাবি জানান তারা। 

মানবন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির আহবায়ক, বিশিষ্ট কবি ও সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েস বলেন, প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁওয়ের প্রবেশ মুখগুলোতে যদি সোনারগাঁ অঞ্চলের প্রতিটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সিটিজেন চার্টার স্থাপন করা হয় তাহলে পর্যটকরা সহজেই এ স্থানগুলো পরিদর্শন করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাতে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করেন সেজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা,জোড় দাবী জানাই। 

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব লেখক ও সাংবাদিক রবিউল হুসাইন, উদীচী’র সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোফাখখার সাগর, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেনুল হক, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক খায়রুল আলম খোকন, কবি ও সাংবাদিক এরশাদ হুসাইন অন্য ও সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের নির্বাহী সদস্য রোকেয়া আক্তার বেবী ও শিক্ষিকা শামীমা নাসরিন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের অর্থ সম্পাদক সেলিম আহমেদ প্রধান, সংগঠক খাদিজা আক্তার, ইস্কান্দার আলী আলভী ও মোমেন মিয়া প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, সোনারগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পানাম সেতু সংরক্ষণের জন্য এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ‘সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি’ মানববন্ধন কর্মসূচু পালন  করে। পরে এ সেতু সংরক্ষণের জন্য গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কৃতি উপদেষ্টা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কাসটোডিয়ান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও মসজ দ ন র য়ণগঞ জ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’