রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস চত্বরের গাছ কাটা ও পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 10th, March 2025 GMT
রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের শতাধিক গাছ কাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির সামনে ‘বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি’ রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতারের কাছে দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।
বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাসের সাধারণ সম্পাদক মো.
বক্তারা বলেন, আগে সবুজে ভরা ছিল রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস। কয়েক দিনে সেখানের প্রায় কয়েক শ গাছ নির্বিচার কেটে ফেলা হয়েছে। বিশাল আকৃতির পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। বছর তিনেক আগে নওদাপাড়াতে অবস্থিত বন বিভাগের প্রায় ২০৫টি গাছ কর্তন করা হয়েছিল নানা অজুহাতে। এভাবে নগরের একের পর এক অক্সিজেন ভান্ডার ধ্বংস করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বক্তারা বর্তমান সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় পরিবেশবাদীদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা দরকার। বৃক্ষনিধন ও পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এবং এর অসাধু কর্মকর্তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা, ভরাটকৃত পুকুরটি অতি দ্রুত পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া, ঐতিহ্যবাহী এই টেক্সটাইল মিলটির লিজ বাতিল, সেখানে বিদ্যমান বৃক্ষগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং আর একটিও গাছ না হত্যা করার দাবি জানানোর পাশাপাশি কাটা বৃক্ষের জায়গায় দেশি জাতের বনজ, ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ লাগানোর জোর দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ‘রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন’ ও ‘জুলাই ৩৬ পরিষদ’ রাজশাহীর সদস্য মাহবুব জামাল কাদেরী, পরিবেশ আইন গবেষক মো. শহিদুল ইসলাম, সেভ দ্য নেচার অ্যান্ড লাইফের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহী মহানগরের সভাপতি উপেন রবিদাস, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, ভাইব্রেন্ট ভিশিওনারিজ নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা হাসিবুল হাসনাত রিজভি, স্থানীয় বাসিন্দা মমিনুজ্জামান টেকন প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা মামলার বাদীকে হুমকি, স্বজনদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মাকসুদুল হাসান জনি হত্যা মামলার বাদী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে নিহতের পিতা শুক্কর আলী ও স্ত্রী ইভা আক্তার এ অভিযোগ করেন। এসময় মামলার পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তারা।
নিহতের স্ত্রী ইভা আক্তার বলেন, আমাকে যারা অল্প বয়সে বিধবা ও ৩ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে জুনায়েদকে এতিম করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। আসামিরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে এখন আবার হুমকিও দিচ্ছে।
মামলার বাদী নিহতের পিতা শুক্কুর আলী বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মামলার এজাহার নামীয় ৩ জন আসামি গ্রেফতার হলেও মূল পরিকল্পনাকারী মহাসিন ভূঁইয়াসহ ৪ জন এখনো গ্রেফতার হয়নি।
তারা পলাতক থেকে তাদের লোকজনের মাধ্যমে মিমাংসা করে মামলা তুলে দেয়ার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। এতে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের মা মাজেদা বেগম বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমি ও ছেলের বউ ইভা তার সন্ধান করতে নূরুল আনোয়ারের নির্মাণাধীন তাকওয়া ভবনের সামনে গেলে নিরাপত্তারক্ষী আলমগীর আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।
অথচ সে জানতো আমার ছেলেকে ওই ভবনের একটি কক্ষে হত্যা করেছে। লাশ ভনের লিফটের হাউজের নর্দমা পানিতে রয়েছে। আমি এ পাষাণদের ফাঁসি চাই। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নিহতের ভাই জুয়েল, ফাহিম ও বোন সুমাইয়া।
মানববন্ধনে নিহতের স্বজন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আফজাল হোসেন, ফজলুল হক মাদবর, লিটন, মাসুদ, জসিম, আব্দুল মজিদ, সুমন, শাহিন, আসলাম ও বাধনসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের ৩ দিন পর গত মাসের ১৮ জুলাই দুপুরে নিমাইকাশারী এলাকার নির্মাণাধীন তাকওয়া ভবনের লিফটের জন্য রাখা ফাঁকা জায়গায় জমে থাকা নর্দমা পানি থেকে জনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ১৯ তারিখে নিহতের পিতা শুক্কুর আলী বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজাহার নামীয় আসামি আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আকাশ হোসেনকে গ্রেফতার করে র্যাব ও পুলিশ।
গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম। গ্রেফতাররা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।