মোহনপুরে সেচ দিতে গিয়ে ফেরেননি কৃষক, জমিতে রক্ত-মাংস
Published: 10th, March 2025 GMT
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় জমিতে সেচ দিতে গিয়ে আলতাফ শাহ (৫২) নামের এক কৃষক নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁর জমিতে মগজসদৃশ একখণ্ড মাংস এবং কিছুটা দূরে রাস্তায় ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আলতাফকে খুন করে লাশ গুম করে দেওয়া হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন। তাঁরা মাঠে আহাজারি করছেন।
আলতাফ শাহের বাড়ি মোহনপুর উপজেলার ধুরইল মণ্ডলপাড়া গ্রামে। পার্শ্ববর্তী সরকার পুকুর মাঠে তিনি নিজের জমি চাষ করেন। গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে তিনি জমিতে সেচ দিতে যান। আলতাফের জমির পাশেই তাঁর চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলামেরও জমি। ওই রাতে তিনিও জমিতে সেচ দিতে গিয়েছিলেন। শরিফুলের বাড়িটি তালাবদ্ধ দেখা যাচ্ছে। বাড়িতে কেউ নেই।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘রাতে দুই চাচাতো ভাই একসঙ্গেই জমিতে সেচ দিতে এসেছিলেন। তারপর দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক ব্যক্তি এসে দুজনকে থামিয়েও দেন। তারপর দুই চাচাতো ভাইকে রেখে তিনি চলে গেছেন। পরে কী হয়েছে বলা যাচ্ছে না।’
ওসি জানান, রাতে আলতাফ শাহ বাড়ি না ফিরলে সকালে পরিবারের লোকজন জমিতে আসেন। তাঁরা জমির একটি জায়গায় মগজের মতো একটি মাংস দেখতে পান। এ ছাড়া পাশে পুকুরের পাড় দিয়ে যাওয়া একটি রাস্তায় ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ খুঁজে পান তাঁরা। এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হলে অনেক মানুষ মাঠে ভিড় করতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশও যায়।
ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘জমিতে পাওয়া মাংসখণ্ডটা আমার কাছেও মগজের মতোই লাগছে। কিন্তু পরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত করে বলা যাবে না। আমরা এটা পরীক্ষার জন্য পাঠাব।’
তিনি বলেন, ‘আলতাফের পরিণতি কী হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা তাঁকে খুঁজছি। তাঁর চাচাতো ভাই শরিফুলকেও খোঁজা হচ্ছে। দেখা যাক কী হয়।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে
১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।
নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।
এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।