ভারতে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংককে নিতে ব্যাপক তোড়জোড় চলছে। এ লক্ষ্যে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এয়ারটেল ইতিমধ্যে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। এবার মুকেশ আম্বানির জিও প্ল্যাটফর্মও প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে।

আজ বুধবার জিও প্ল্যাটফর্ম থেকে এই চুক্তি সইয়ের ঘোষণা আসে। মাত্র এক দিন আগেই টেলিকম ব্যবসায় আম্বানিদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতী এয়ারটেল স্পেসএক্সের সঙ্গে একই ধরনের একটি চুক্তি সইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।

স্টারলিংক পরিষেবা ভারতে আনার বিষয়ে কয়েক মাস ধরে ইলন মাস্ক ও মুকেশ আম্বানির কোম্পানির মধ্যে আলোচনা চলছিল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি স্পেসএক্সের স্টারলিংক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে থাকে।

কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে হওয়ায় দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও স্টারলিংকের ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়। তবে এই সেবা পেতে কতটা বেশি দাম দিতে হবে, তা নিয়ে ভারতের বাজারে বিতর্ক রয়েছে।

যদিও মনে হচ্ছে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ জনসংখ্যার দেশ ভারতের টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো স্পেসএক্সের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সেখানে স্যাটেলাইটভিত্তিক উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে আসতে প্রস্তুত।

জিওর পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্পেসএক্সের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে জিও তাদের খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে ভবিষ্যতে স্টারলিংকের যন্ত্রাংশ বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছে।

এ ছাড়া গ্রাহকদের স্টারলিংকের ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া এবং সেটির রক্ষণাবেক্ষণ কাজেও জিও সহায়তা করতে চায়। তবে জিওর সঙ্গে স্পেসএক্সের এই চুক্তি ভারতে মার্কিন কোম্পানিটির স্টারলিংক পরিষেবা বিক্রির অনুমোদন পাওয়ার ওপর নির্ভর করছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

স্টারলিংক ইন্টারনেট বিক্রির জন্য স্পেসএক্সকে ভারত সরকারের কাছ থেকে অনুমতি পেতে হবে। গত মাসে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছিল, ভারতে স্পেসএক্সের স্টারলিংক ব্যবসার নিবন্ধনের আবেদন প্রাথমিক অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে মুকেশ আম্বানির কোম্পানি এ-সংক্রান্ত আরও কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে আলাদাভাবে কাজ করছে। জিও ২০২২ সালে লুক্সেমবার্গের কোম্পানি এসইএসের সঙ্গে একটি যৌথ উদ্যোগ ঘোষণা করেছিল।

গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলে ওয়াশিংটনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইলন মাস্ক। যদিও বর্তমানে ভারতের বাজারে ইলন মাস্কের কেবল সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এর ব্যবসা রয়েছে।

মাস্কের আরেক প্রতিষ্ঠান টেসলাও ভারতের বাজারে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প সএক স র স ইলন ম স ক আম ব ন র

এছাড়াও পড়ুন:

শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বড় অনিশ্চয়তা থেকে রেহাই পেল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ১ আগস্ট সময়সীমার আগেই বাংলাদেশের ওপর ধার্য করা পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ফেলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে বাংলাদেশ বড় ধরনের একটি অনিশ্চয়তা থেকে রেহাই পেয়েছে।

তৃতীয় দফার আলোচনা শেষে ১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন ডিসি থেকে খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে এ কথা বলেন।

ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এই দলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও ছিলেন। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এই শুল্কহার ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কথা জানিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। সে হিসেবে শুল্ক ১৫ শতাংশ কমিয়ে নতুন হার ঘোষণায় করা হলো।

আরও পড়ুন১৫ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ ৬ ঘণ্টা আগে

খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন ১ আগস্ট সময়সীমার আগেই বাংলাদেশের ওপর ধার্য করা শুল্ক কমিয়ে ফেলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে আমরা বড় ধরনের একটি অনিশ্চয়তা থেকে রেহাই পেয়েছি। ওই সময়সীমার মধ্যে শুল্কসংক্রান্ত জটিল আলোচনা আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলাম। তা না হলে আমরা এ সিদ্ধান্তটি পেতাম না; এবং গত এপ্রিলে ধার্য করা ৩৫ শতাংশ শুল্কের গুরুভার আমাদের বহন করে যেতে হতো।’

আরও পড়ুনরপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই, প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব: বাণিজ্য উপদেষ্টা৪ ঘণ্টা আগে

খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছেন, যা আমাদের প্রধান প্রতিযোগী দেশগুলোর সমান অথবা যত্সামান্য বেশি; এবং ভারতের থেকে ৫ শতাংশ কম। সুতরাং আমেরিকার বাজারে আমাদের রপ্তানি পণ্য প্রতিযোগিতামূলক থাকবে। তৈরি পোশাকশিল্প ও এর ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত স্বস্তিকর ঘটনা।’

আরও পড়ুনএটা আমাদের পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল লাখো মানুষের জন্য সুসংবাদ: খলিলুর রহমান২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ