৭২ ঘণ্টার বিরতি না দিলে ম্যাচ বয়কটের হুমকি রিয়াল মাদ্রিদের
Published: 16th, March 2025 GMT
ম্যাচটিতে জয়ই পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে ভিয়ারিয়ালকে তাদেরই মাটিতে হারিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। যে জয়ে লা লিগা পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে ফিরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে খেলা শেষে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে বিরক্তিই প্রকাশ করলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
শুধু বিরক্তি নয়, রীতিমতো হুমকিই দিয়েছেন। বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলার পর তিন দিনের মধ্যেই ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে নামতে হয়েছে রিয়ালকে। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ বলেছেন, এবারই শেষ। এরপর দুটি ম্যাচের মধ্যে ৭২ ঘণ্টার বিরতি না দিলে তাঁর দল ম্যাচ বয়কট করবে।
বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে রিয়াল-আতলেতিকো ম্যাচ শুরু হয় স্থানীয় সময় রাত ৯টায়। নির্ধারিত নব্বই মিনিটের পর খেলা চলে আরও ৩০ মিনিট। দুই ঘণ্টার খেলার সঙ্গে ছিল দুটি বিরতিও। এরপর ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে খেলা শেষ হতে হতে মধ্যরাত।
রিয়ালের পরের ম্যাচটি শুরু হয় শনিবার স্থানীয় সময় সাড়ে ছয়টায়। অর্থাৎ, ৭২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে। এমন ঘন সূচিতে খেলোয়াড়দের ওপর চাপ বেশি পড়ে বলে যারপরনাই বিরক্ত রিয়াল মাদ্রিদ। গতকাল ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগেই ক্লাবের টিভি চ্যানেলে বলা হয়, ঘন সূচি নিয়ে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সহায়তা চাইবে রিয়াল মাদ্রিদ। যাতে এমন কিছু আবার না ঘটে।
ম্যাচশেষে সংবাদ সম্মেলনে এলে রিয়াল মাদ্রিদ কোচকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। ক্লাবের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজই শেষবারের মতো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খেলতে নামলাম। ৭২ ঘণ্টার বিশ্রাম না দিলে আর খেলব না। ম্যাচের সময় বদলানোর জন্য লা লিগাকে আমরা দুবার বলেছি। কিন্তু তারা কিছু করেনি। এটাই শেষ বার।’
৭২ ঘণ্টার বিরতি না থাকলে রিয়াল আসলেই কি খেলবে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, কোনোমতেই খেলব না।’
খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফিফাও দুটি ম্যাচের মধ্যে ন্যূনতম ৭২ ঘণ্টা বিরতি রেখে সূচি করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কিন্তু চূড়ান্ত সূচি প্রণয়নের ক্ষমতা প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষের হাতে। স্পেনের লিগের খেলায় কর্তৃত্ব যেমন লা লিগার ওপর।
লা লিগা শিরোপা লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও আতলেতিকো চলতি সপ্তাহে একটি দিন বাড়তি বিশ্রাম পেয়েছে। দু দল মুখোমুখি হচ্ছে আজ রোববার।
এই মুহূর্তে লা লিগা পয়েন্ট তালিকায় রিয়াল শীর্ষে আছে ২৮ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে। তবে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা বার্সেলোনা দুটি ম্যাচ কম খেলেছে। আর ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা আতলেতিকো খেলেছে ২৭ ম্যাচ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আতল ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল