দেরিতে প্রবন্ধ প্রকাশ হলেও সঠিক সময়ে প্রকাশ দেখিয়ে পদোন্নতি নিয়ে চাকরি স্থায়ীকরণের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন, ঢাবির জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে পদান্নতি নিয়ে চাকরি স্থায়ী করতে সক্ষম হন।

তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ কলেছেন একই বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মো.

জাহাঙ্গীর আলম।

আরো পড়ুন:

‘১৬ বছর তারেক রহমান আন্দোলন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে’

বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক সৈকত

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বরাবর এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগপত্রে সঙ্গে তিনি বিভিন্ন প্রমাণাদিও যুক্ত করেছেন।

‘জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ও ভুল তথ্য দিয়ে ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন-এর চাকরি স্থায়ীকরণ প্রসঙ্গে’ শীর্ষক ওই অভিযোগপত্রে জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, “সম্প্রতি একটি ইমেইল এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এর (প্রবন্ধ জালিয়াতি) সত্যতা জানতে পেরেছি। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সময়মতো লেখা প্রকাশ করতে না পেরে সংশ্লিষ্ট জার্নালের এডিটরের সঙ্গে যোগসাজশে অনৈতিক পন্থায় ভূয়া তারিখ দেখিয়ে ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লেখা প্রকাশিত হয়েছে’ এমন ভুল তথ্য দিয়ে চাকরিতে স্থায়ী হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন। ড. মামুন জালিয়াতির মাধ্যমে তার প্রকাশনার ভূয়া তারিখ দেখিয়ে চাকরিতে স্থায়ী হন এবং তার সিনিয়রিটি ধরে রাখেন।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে স্থায়ীকরণের নিয়ম হলো- প্রার্থীর পদোন্নতির ঠিক এক বছরের মধ্যে ডিজিটাল অবজেক্ট আইডেন্টিফাইয়ার (ডিওআই) সম্বলিত জার্নালে প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে হবে। উল্লেখ্য যে, জার্নালের ইস্যু, ভলিউম, মাস এখানে মুখ্য নয়। জার্নাল প্রকাশিত হতে হবে ওই নির্দিষ্ট প্রবেশন সময়ের মধ্যে। ড. মামুন ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পদোন্নতি পান এবং ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখের মধ্যে প্রকাশিত প্রবন্ধ জমা দেওয়ার কথা ছিল।”

“জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের তিনজন শিক্ষক একইদিনে সহযোগী অধ্যাপক হন এবং একই তারিখে সকলের প্রবেশন দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির নিয়ম অনুযায়ী চাকরি কনফার্মেশনের নির্দিষ্ট সময়ে যদি জ্যেষ্ঠ কেউ প্রবন্ধ প্রকাশনা করতে না পারেন এবং অন্যরা করে ফেলেন, তবে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বাকিদের থেকে জুনিয়র হয়ে যাবেন। ড. মামুনের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেছে। ফলে তিনি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে তার সিনিয়রিটি অবৈধভাবে ধরে রেখেছেন,’ যুক্ত করে জাহাঙ্গীর।

অভিযোগপত্রে তিনি দাবি করেন, “২০২৩ সালের ২৯ মে স্থায়ীকরণ কমিটির সভা হয় এবং ড. মামুনের প্রবন্ধ বিলম্বে প্রকাশিত হওয়ায় তাকে বাকি দুইজন থেকে জুনিয়র করা হয়। এটা জেনে ড. মামুন জালিয়াতির আশ্রয় নেন এবং জার্নাল অব গভার্নেন্স, সিকিউরিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর এডিটরের যোগসাজশে একটি প্রবন্ধ প্রথমে অনলাইনে প্রকাশ করেন এবং সেখানে প্রকাশের তারিখ দেখান ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি। ওই ভুয়া তথ্য দিয়ে নতুন করে প্রবন্ধ জমা দিয়ে তিনি চাকরিতে স্থায়ী হন এবং বাকি দুইজন শিক্ষকের থেকে আবারো সিনিয়র হন।”

তিনি বলেন, “কিন্তু ড. মামুন জানেন না যে, ডিওআই এর জার্নালে ভুল তারিখ বসিয়ে বাঁচা যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ীকরণের সময় ডিওআই সম্বলিত প্রবন্ধ চাওয়া হয়, যেন কেউ প্রবন্ধ প্রকাশের তারিখ নিয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন বা জালিয়াতি করতে না পারে। এখন প্রশ্ন হলো, ড. মামুনের এই প্রবন্ধ যদি ১ জানুয়ারি, ২০২৩ তারিখে প্রকাশিত হয়ে থাকে, তবে ২৯ মে, ২০২৩ তারিখে স্থায়ীকরণের আগে তিনি এই প্রবন্ধ জমা দিলেও কেন স্থায়ীকরণ হয় নি? কারণ তখন ঐ DOI দিয়ে অনলাইনে প্রকাশিতই হয় নি, যা Meta Data দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যায়।”

তিনি আরো বলেন, “তিনি এই প্রবন্ধে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ২০২৩ সালের ১ জুন। তাই এর আগে অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ নাই। ড. মামুন ২৯ মে স্থায়ীকরণ সভায় যখন দেখলেন, প্রকাশিত প্রবন্ধ জমা দিতে পারেননি এবং জুনিয়র হয়ে গেলেন, তখন তিনি জালিয়াতির আশ্রয় নিলেন। ওই প্রবন্ধের Meta Data চেক করে দেখা যায় যে, তিনি ডিওআই এর জন্য আবেদন করেছেন ২০২৩ সালের ১ জুন এবং সেদিনই তার প্রবন্ধ অনলাইনে আসে। অর্থাৎ এই লেখা অনলাইনে তার স্থায়ীকরণ শর্তানুযায়ী ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির প্রায় সোয়া ৩ মাস পর প্রকাশিত হয়।”

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ওই জার্নালের হার্ড কপিতেও এই একই ডিওআই নাম্বার দেওয়া আছে। এর অর্থ হলো- ১ জুন ডিওআই নাম্বার পাওয়ার পরই হার্ড কপি প্রিন্ট করা হয়েছে। এর আগে ডিওআই সম্বলিত জার্নাল প্রিন্ট করা অসম্ভব, কারণ হার্ড কপির পেজ নাম্বার (৩১-৫৪) ও অনলাইন কপির পেজ নাম্বারে (১-১৯) গরমিল আছে। এর মানে হলো- উক্ত জার্নালের অনলাইন ভার্সন বা হার্ড কপি দুটোই জুন মাসের ১ তারিখ বা তারপর প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং বাকি দুইজন শিক্ষক যদি নির্দিষ্ট সময়ে লেখা প্রকাশ করে থাকেন, তবে ড. মামুন তাদের চেয়ে জুনিয়র হতে বাধ্য- এটাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা।”

জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, “এর একটিই ব্যাখ্যা দাঁড়ায়, ড. মামুন ব্যক্তিগতভাবে তার লেখার ডিওআই নিয়ে পরে তিনি জার্নালে জমা দিয়েছেন এবং অন্য প্রবন্ধের ডিওআই করে দিয়েছেন। একই জার্নাল এবং এর প্রোডাকশন বিভাগ ডিওআই রেজিস্ট্রেশনের কাজ করলে তার প্রবন্ধের সিরিয়াল ও পৃষ্ঠা নাম্বার ঠিক থাকত।”

তিনি বলেন, “এ ধরনের ভুয়া তথ্য প্রদান করে চাকরি স্থায়ীকরণ অত্যন্ত অনৈতিক কর্মকাণ্ড, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি রাখে। এই ধরনের অনৈতিক কাজ একাডেমিক ক্ষেত্রে চরম নৈতিক স্খলন। ড. মামুন নিজে এ ধরনের হীন কাজ করার পাশাপাশি আরো কিছু শিক্ষকদের ভুয়া তারিখ দিয়ে ডিওআই করিয়ে দিয়েছেন বলেও চাউর রয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, কমিটি গঠন করে যথাযথ তদন্ত করলে ড. মামুনের দুর্নীতি ও জালিয়াতির বিষয় সামনে আসবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত বাকি দুইজন শিক্ষকের জ্যেষ্ঠতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি “

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। অভিযোগের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলেও তিনি কোন প্রত্ত্যুত্তর দেননি।

জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. দিলরুবা শারমিন বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। উনি যে উপাচার্য স্যারের কাছে আবেদন করেছেন, সে বিষয়েও আমি কিছু জানি না।”

চাকরি স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে ডিন অফিসের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান বলেন, “প্রমোশনসহ সবকিছু তো ডিপার্টমেন্ট থেকেই শুরু হয়। ডিপার্টমেন্টেও একটা কমিটি আছে। ওখানেই প্রথম ডিসিশন হয় যে, কারো ক্রাইটেরিয়া পূরণ হয়েছে কিনা।”

তিনি বলেন, “ডিন অফিসের রোল খুবই সীমিত। যখন প্রমোশন হয়, তখন একটা বোর্ড তো বসেই। ওখানে ডিন কমিটির একজন মেম্বার। সেই হিসাবে ওনার রোল তো ওই লেভেলের থাকেই। তবে কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।”

সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ডিন বলেন, “আমি আপনার মাধ্যমে এটা প্রথম জানলাম। জাহাঙ্গীর আলম স্যার যদি কোনো অভিযোগ উপাচার্য স্যারের কাছে করেন, তাহলে সেটা তো আগে ডিন অফিসে যাওয়ার কথা। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ হলে ওটা আমার লেভেলে কোনো না কোনোভাবে আসবে। আমার দেখার সুযোগ হবে, তখন আমি নিশ্চয়ই দেখব।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান এবং মুখপাত্র ও উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা উভয়ের সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ হ ঙ গ র আলম ২০২৩ স ল র প রবন ধ জ উপ চ র য কর ছ ন চ কর ত করণ র দ ইজন সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র‌্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র‌্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।

আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।

আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩

কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেত্রী গ্রেপ্তার , দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের
  • কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
  • ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা
  • গাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়ালো
  • আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার