যুদ্ধ বন্ধে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন জেলেনস্কি
Published: 20th, March 2025 GMT
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের একদিন পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবার দুই নেতার মধ্যে এ ফোনালাপ হয়েছে। ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ফোনালাপে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি ট্রাম্পকে যুদ্ধ বন্ধে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দুই নেতার এ ফোনালাপকে ‘দুর্দান্ত’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের মুখোমুখি বৈঠকে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছিল। এরপর এই প্রথম দুই নেতা আবার কথা বললেন। ফোনালাপে জেলেনস্কির পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে তার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। সৌদি আরবে শান্তিচুক্তির আলোচনা নিয়ে কারিগরি দলের কাজের ব্যাপারে দুই নেতা একমত হয়েছেন।
আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপকে রাশিয়ায় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে৪৬ মিনিট আগেহোয়াইট হাউস জানায়, জেলেনস্কির পক্ষ থেকে ট্রাম্পের কাছে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকাতে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চাওয়া হয়। ট্রাম্প বলেন, তিনি ইউরোপে প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম খুঁজে পেতে সাহায্য করবেন।
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবারে পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে জেলেনস্কিকে জানানো হয়। ওই ফোনালাপে পুতিনের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের দেওয়া ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। ওই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল ইউক্রেন। তবে পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ না করলেও জ্বালানি অবকাঠামো হামলা বন্ধের বিষয়ে রাজি হন।
অবশ্য গতকাল বুধবার আবার জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় ওই যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সুযোগ নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় দুই দেশ ১৭৫ জন করে বন্দী বিনিময়ে রাজি হয়েছে। মস্কো জানিয়েছে, তারা শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে আরও ২২ জন আহত ইউক্রেনীয়কে মুক্তি দিয়েছে।
জেলেনস্কির পক্ষ থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপকে ইতিবাচক ও খোলামেলা বলে মন্তব্য করা হয়েছে। তিনি ট্রাম্পকে রুশ অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করার জন্য কিয়েভের প্রস্তুতি ও যুদ্ধবিরতির প্রতি তার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার কথা বলেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।