বক্সের বাঁ কোনায় দৌড়ের ওপর উরুগুয়ের এক ডিফেন্ডারকে কাটালেন হুলিয়ান আলভারেজ। একটু এগিয়েই ঘুরে গেলেন বলটা নিয়ে। থিয়াগো আলমাদা ততক্ষণে উরুগুয়ে বক্সের সামনে। আলভারেজ হোমওয়ার্ক করে আসার মতো করে পাসটা দেন আলমাদাকে।

শরীরে ২৩ বছরের টগবগে রক্ত আর অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের রোমাঞ্চকর মন থাকলে যা হয়; আলমাদা দূরের পোস্ট তাক করে কিক নেন। সবাইকে স্থির দর্শক বানিয়ে বলটা বাতাসে ভাসতে ভাসতে আশ্রয় নেয় জালে। মাঠের অন্য প্রান্তে আর্জেন্টিনার পোস্টে দাঁড়ানো এমিলিয়ানো মার্তিনেজ গোলটি দেখে এমনভাবে বাঁ হাত নাড়ছিলেন যেন আগুনে ছ্যাকা খেয়েছেন। উরুগুয়ে গোলকিপার সের্হিও রসেটের জন্য তাঁর মায়াও লাগছিল বুঝি। সত্যিই চোখ ধাঁধানো এক গোল!

মন্টেভিডিওর সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে আলমাদার এই গোলই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের মধ্যে। স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত হলো আর্জেন্টিনার। শুধু তাই নয়, দেখা পেয়েছে ২০০০তম গোলেরও। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ক্লারিন জানিয়েছে, আলমাদার গোলটি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ইতিহাসে ২০০০তম গোল।

১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিওনেল স্কালোনির দল। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ইকুয়েডর। ১৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ব্রাজিলের বিপক্ষে আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। তার আগে প্রস্তুতিটা একদম খারাপ হলো না স্কালোনির দলের। যদিও আলমাদার গোলটি ছাড়া তেমন আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। চোটের কারণে লিওনেল মেসি, লাওতারো মার্তিনেজ, পাওলা দিবালাদের অনুপস্থিতি তার একপা কারণ। প্রায় ৫৫ হাজার দর্শকের সামনে উরুগুয়েও তেমন ভালো খেলতে পারেনি। বলার মতো আক্রমণই তৈরি করতে পারেনি মার্সেলো বিয়েলসার দল। তবে আর্জেন্টিনা শেষ বাঁশি বাজার পর ১১ জন নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। যোগ করা সময়ের ৪ মিনিটের মাথায় ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার নিকো গঞ্জালেস।

বিস্তারিত আসছে…।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন র আলম দ

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদে ব্যবসায়ীকে গাছে বেঁধে পেটালেন মহাজন

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় সুদের টাকা দিতে না পারায় এক ব্যবসায়ীকে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মহাজনের বিরুদ্ধে। এর একটি ভিডিও সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলার খরিয়া কাজীরচরের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খরিয়া কাজীরচরের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামের মাদ্রাসা পিয়ন ও ব্যবসায়ী নূর আমিন (৩৮) একই এলাকার সুদে কারবারি আব্দুল জলিলের কাছ থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা সুদের শর্তে ১ লাখ টাকা নেন। তিনি ১০ হাজার টাকা করে চার মাস সুদ দিয়ে আর দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। লাঞ্ছিত করা হয় ব্যবসায়ীকে।

জলিল মারধরের অভিযোগ এনে নূর আমিনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশও করেন। যদিও নূর অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। কিছুদিন পর ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখেন জলিল। এ নিয়ে নূর আমিন থানায় অভিযোগ দেন। এর পর তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এরই মধ্যে রোববার কয়েকজনকে পাঠিয়ে তাঁকে লঙ্গরপাড়া বাজার থেকে ধরে আনেন জলিল।

এক পর্যায়ে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে বাড়ির গাছে বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাড়ির সবাই মিলে তাঁকে লাঠিপেটা করেন। শরীরের কাপড়ও ছিঁড়ে ফেলা হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই হাত গাছে বাঁধা নূরের। এক নারী জামার কলার ধরে তাঁকে নির্যাতন করছেন।

নূর আমিনকে মারধরের সময় বলতে শোনা যায়, ‘এ ... একটা গরু চোর, তাই ধইরি (ধরে) বান্ধিছি। মাইনষের টাইন (কাছ থেকে) ট্যাহা নিছে। আংগর টাইন ৬ লাখ ট্যাহা নিছে।’ 

ঘটনা জানাজানি হলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা ঘটনাস্থলে যান। তিনি দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করেন। বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেখানে শত শত মানুষ ছিল। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী আগস্ট মাসে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে নূরকে মুক্ত করি।’ 

অভিযুক্ত আব্দুল জলিলের ভাষ্য, ‘অনেক দিন ধরে দেড় লাখ টাকা পাই। তাঁকে বাজার থেকে ধরে এনেছিলাম, নির্যাতন করা হয়নি। বাড়ি আনার পর খারাপ আচরণ করায় বেঁধে রেখেছিলাম। নেতারা সমঝোতা করে দেওয়ায় ছেড়ে দিয়েছি।’

ভুক্তভোগী নূর আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘জীবনে কোনোদিন এত অপমান কেউ করেনি। মারধর করেছে, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। সুদের টাকার জন্য এক বছর ধরে আমার মোটরসাইকেল আটকে রেখেছে। টাকাও দাবি করছে। মাসে ১০ হাজার করে চার মাস টাকা দিয়েছি। এখন আসল টাকা পাবেন ৬০ হাজার।’

এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ওসি মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তার আগেই স্থানীয় নেতারা সমঝোতা করেন। ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ