প্রযুক্তি আমাদের জীবনের প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এই পরিবর্তনের একটি বড় অংশ। বিশ্বাস ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণ, দেখিয়ে দিচ্ছে যে, এআই কীভাবে পবিত্র রমজান মাস পালনের ধরনকে বদলে দিচ্ছে। ইতিহাস বলছে, প্রতিটি প্রযুক্তিগত পরিবর্তন রমজানের ওপর ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলেছে। একসময় রেডিও ধর্মীয় বাণী ঘরে পৌঁছে দিত, টেলিভিশন নিয়ে আসে বিশেষ রমজান প্রোগ্রাম, আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্বব্যাপী রোজাদারদের সংযুক্ত করেছে। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে এই বিবর্তনের পরবর্তী ধাপ।

 বদলে দেওয়ার আশঙ্কা কেন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন ভার্সনগুলো ব্যাপকভাবে মানুষের ব্যক্তিগত জীবন ও কর্মতৎপরতা বিশ্লেষণ করে, আমাদের ভাষার প্রতিটি টোন, সামাজিক মাধ্যমের ক্লিক, এমনকি ভিউ বা পরিদর্শন ব্যাপকভাবে অ্যালগরিদমে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে এআই-চালিত বিশ্লেষণ ব্যবহার করে হাইপার-পারসোনালাইজড বিজ্ঞাপন তৈরি করা, ভোক্তার আচরণ পূর্বানুমান করা এবং লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণা চালানোর মাধ্যমে রমজানকে বাণিজ্যিকীকরণের ঝুঁকি রয়েছে।

আরও পড়ুনঈদের দিনের আমল১০ এপ্রিল ২০২৪

যেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এআই

 এআই-এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি কাজ করছে বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে। পবিত্র রমজান মাসে ব্র্যান্ড ও ভোক্তাদের সম্পৃক্ততার ধরন জেনে ব্যক্তিগত কেনাকাটায় এমনসব কনটেন্ট তৈরি করে দিচ্ছে এআই, যা আগে এতটা সূক্ষ্মভাবে সম্ভব ছিল না। এআই-চালিত কনটেন্ট এখন বিভিন্ন শিল্প-উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল রমজান’ বাস্তবতা নিয়ে এসেছে।

 এ ছাড়া এআই ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ইফতার নিমন্ত্রণপত্র তৈরি করা, আবার দান-সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করে মানুষের জাকাত দেওয়ার সর্বোত্তম উপায় সুপারিশ করছে এআই। যেহেতু আমরা প্রযুক্তিকে অতিমাত্রায় বিশ্বাস করছি, ফলে তার দেওয়া সুপারিশ ইসলামিক পণ্ডিতদের সুপারিশের তুলনায় বেশি মানবিক মনে হতে পারে।

আরও পড়ুনচাঁদরাত ও ঈদের দিনের আমল২১ এপ্রিল ২০২৩

 এফএমসিজি ও সৌন্দর্য খাতে পরিবর্তন

 দ্রুত বিক্রীত ভোগ্যপণ্য শিল্প বিশ্বব্যাপী এআই গ্রহণে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ব্যবহার করে বাজার সম্প্রসারণ, প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডিং ও বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য এআই ব্যবহার করা হচ্ছে। এআই-চালিত অনুভূতি বিশ্লেষণ ও পূর্বাভাসমূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ব্র্যান্ডগুলো এমন গল্প তৈরি করতে পারে, যা ভোক্তাদের পূর্বেকার আচরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষ করে রমজানের প্রচারণায় সাংস্কৃতিক অভিনবত্বের জন্য আমরা আরও বেশি করে এআই নির্ভর হয়ে পড়তে পারি।

 ২০২৫ সালে এআই-নির্ভর অতি-ব্যক্তিগতকৃত বিপণন আরও বেশি প্রচলিত হবে। রমজানে ব্র্যান্ড ও ভোক্তাদের সংযোগ তৈরির জন্য দানশীলতা, সহনশীলতা ও পরিবারের মূল্যবোধ এনে ‘ইমোশনাল মার্কেটিং’ কৌশল স্থান পাবে; যাতে ধর্মীয় নির্দেশনায় যেই আধ্যাত্মিকতার কথা বলা হয়, তা বাদ দিয়ে বরং মানুষের নিজস্ব অভ্যাসগত মূল্যবোধকে বেশি অনুসরণ করার সম্ভাবনা থাকবে।

আরও পড়ুনরমজানে ৬টি অভ্যাস১০ মার্চ ২০২৫

কী করা উচিত

 ব্র্যান্ড ও ভোক্তা উভয়কে এটির প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে। ব্র্যান্ডগুলোকে অবশ্যই চিন্তাশীল, শ্রদ্ধাশীল ও ব্যক্তিগতকৃত কৌশল গ্রহণ করতে হবে, যাতে এআই ধর্মীয় ঐতিহ্যকে ব্যাহত না করে বরং সমৃদ্ধ করে। ব্যবসাগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে, এআই-চালিত বিপণন ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। অন্যদিকে, ভোক্তাদেরও সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা রমজানে কতটা প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।

  সূত্র: ক্যাম্পেইন এশিয়া

আরও পড়ুনরোজার নিয়ত কখন করবেন১০ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর এআই চ ল ত রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির

চট্টগ্রামের সাগরিকায় উপস্থিত থাকা দর্শকরা গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাপোর্ট করেছে এমন কথা শুনলে অবাক হবেন নিশ্চিয়ই? অবাক হওয়ার কিছু নেই। সত্যিই এমন কিছুই হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে।
ধারাবাহিকভাবে ব‌্যর্থ বাংলাদেশ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা আপাতদৃষ্টিতে এমনটাই মনে হয়েছে। লাল-সবুজের পতাকা গ‌্যালারিতে উড়তে দেখা যায়নি তেমনটা নয়। কিন্তু ম‌্যাচ যত গড়িয়েছে সেই পতাকা উড়ানোও তত কমেছে। টিকিটের মূল‌্য একেবারে হাতের নাগালে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তবুও ভরেনি গ‌্যালারি।

লিটন, জাকের, তাসকিন, শরিফুল, সাইফদের পারফরম‌্যান্স এমন গড়পড়তা যে সমর্থকরা প্রতিপক্ষের ব‌্যাটিং-বোলিং দেখেই বেশি আনন্দিত হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যে নিবেদন, যে চাহিদা তা রোস্টন চেজ, আকিম আগাস্তের ব‌্যাটে পাওয়া গেলে সমর্থকদের দোষ কোথায়? তাদের চার-ছক্কায় গ‌্যালারিতে তালির ঝড় উঠে। উল্লাস, উদ্দীপনায় মাততে দেখা যায়।
আর স্বাগতিক দলের জন‌্য উড়ে আসে দুয়ো ধ্বনি। ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান চললো পুরো ম‌্যাচ জুড়েই। বিশেষ করে সীমানায় থাকা ক্রিকেটাররা দর্শকদের রোষানলে পড়লেন বেশি। শুধু তা-ই নয়, স্টেডিয়ামের যাওয়া-আসার পথেও সেই সমর্থকরাই ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে এলোমেলা করে দেন ক্রিকেটারদের।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে এসব স্লোগান একেবারেই পছন্দ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ড‌্যারেন স‌্যামির। ক্যারিয়ারে নানা সময় বাংলাদেশে আসায় কিছুটা বাংলা শব্দ তারও জানা। তবে ভুয়া অর্থটা জেনেছেন এবারই। তাইতো তার হৃদয়ে কিছুটা দহনও হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন‌্য, “তারা (দর্শকরা) ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, সেটা আমার ভালো লাগেনি। আমি শুনেছি তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলছে। এর অর্থও আমি জেনেছি। কিন্তু আমি মনে করি না, হোম টিমের দর্শক হিসেবে এমন করা উচিত। কারণ আপনারা তখন সমর্থক। প্রত্যেক ক্রিকেটারই মাঠে আসে তাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য। তাই আপনাদের উচিত, তাদের সমর্থন করা।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতানো স‌্যামি কঠিন সময়ে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা বললেন, ‘‘তবুও তারা (দর্শকরা) ভালো। তারা নিজেদের দলকে পারফর্ম করতে দেখতে চায়। তবে যত বেশি সমর্থন ও উৎসাহ দেবেন, তারা তত দূর যেতে পারবে। ক্রিকেটারদের অযথা চাপে ফেলবেন না। ফ্যানদের বলব, তাদের (ক্রিকেটারদের) সঙ্গে সুন্দর আচরণ করুন।”

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হবিগঞ্জে কনসার্টে বিশৃঙ্খলার পর নারীদের হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ
  • পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
  • অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের
  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির