ছাত্রনেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে: নুরুল হক
Published: 23rd, March 2025 GMT
ছাত্রনেতাদের কয়েক দিনের নানা ধরনের বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক (নুর)। তিনি বলেন, ‘তাঁরা আমাদের পরিচিত ছোট ভাই। আমি অনুরোধ করব, যাঁরা দায়িত্বশীল আছেন, তাঁরা দায়িত্বের সঙ্গে কথা বলুন। এমন কোনো কথা বলবেন না, যাতে করে উসকানি তৈরি হয়, যড়যন্ত্রকারীদের ফায়দা লুটতে রাস্তা তৈরি করে দেয়।’
আজ রোববার বিকেলে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জেলা গণ অধিকার পরিষদের উদ্যোগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া, আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন নুরুল হক।
গণ অধিকার পরিষদের চাঁদপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী রাসেলের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব মো.
নুরুল হক বলেন, ‘গত ১৫ বছর গণতন্ত্র, ভোটাধিকার না থাকায় আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছে। আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। যাতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ পুনরায় ফিরে না আসতে পারে। আমরা যারা জুলাই ২৪–এর অভ্যুত্থানের সঙ্গে ছিলাম এবং আছি, আমাদের মধ্যে যেন সেই আওয়ামী অপকর্মের কোনো কিছু খুঁজে না পায়। কারণ, এ দেশের ছাত্র–তরুণেরা মিলে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে, জীবন দিয়ে দেশের এই পরিবর্তন এনেছেন। একটি গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি করেছেন। এটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী প্রশাসনের বড় একটা অংশ জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তাদের বিতর্কিত করা যাবে না। কারণ, তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। তারা আমাদের জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সে চলে। আগামীতে আমাদের রাষ্ট্র চালাতে হলে তাদের লাগবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
জ্বালানি অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করার অঙ্গীকার করেছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনোনীত যুব সংসদের সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা জনগণের মৌলিক অধিকার। জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে—এটাই সংগ্রামের অঙ্গীকার। জ্বালানি সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ক্যাব আয়োজিত প্রথম জ্বালানি যুব সংসদীয় অধিবেশনের শেষ দিনে আজ শনিবার এমন ঘোষণা পাঠ করে শপথ নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে শুক্রবার শুরু হওয়া দুই দিনের এ সংসদ শেষ হয় আজ।
শপথে আরও বলা হয়, জ্বালানি সংস্কার এই জ্বালানি অপরাধীদের বিচার দাবিকে জন–আন্দোলনের পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের এলাকায় লোডশেডিং একটা পরিচিত শব্দ। তারা শিক্ষিত না হলেও এটা জানে। একটা অসমতা রয়ে গেছে। আবার কৃষিতে বিদ্যুতের যে দাম, মাছ চাষ বা পোলট্রি খাতে সেই দামে দেওয়া হয় না। এটা করতে হলে ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে। অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি হয়েছে। এখন বিইআরসির অনুমোদন লাগবে।
যুব সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে টাকা লুটপাট করাই ছিল ফ্যাসিবাদের সময় মূল কাজ। গত সরকার নিজেদের পকেটে টাকা ঢোকাতে সেদিকে নজর দিয়েছে। পৃথিবীকে বাঁচাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতেই হবে। বিএনপির ৩১ দফায় স্পষ্ট করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে জ্বালানি খাতে দায়মুক্তির আইন করেছে দাবি করে ওই আইন বিলোপের দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, শুধু জ্বালানি নয়, সব খাতেই সমস্যা আছে। রাজনৈতিক নেতা যদি অসৎ হয়, অস্বাভাবিক উপায়ে নেতা হন, সবকিছু তাঁরা অস্বাভাবিক উপায়ে করেন।
যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে দুই দিনের সংসদের সারাংশ তুলে ধরা হয়।এতে বলা হয়, এতে ১০০ ‘সংসদ সদস্য’–এর অংশগ্রহণে ১৯টি প্রবন্ধ উপস্থাপনা ছিল দুই দিনের যুব সংসদে। এক হাজার নিবন্ধিত শিক্ষার্থী নিয়ে গত এক বছরে নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই সংসদ সদস্যদের বাছাই করা হয়।
দুই দিনের যুব সংসদে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মোট আটটি অধিবেশনে জ্বালানি খাতের আলাদা আলাদা বিষয়ের ওপর বেশ কিছু নিবন্ধ তুলে ধরা হয়। এতে বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ার সমালোচনা করা হয়। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানান অংশগ্রহণকারীরা।
শেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা হলে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত হবে।পরবর্তী যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এ আন্দোলনের দাবি মেনে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।