ইউক্রেনে আংশিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবার সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ান কর্মকর্তারা বৈঠক করছেন। ওয়াশিংটন ও কিয়েভের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার একদিন পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খবর এএফপির।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিন বছরের ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দ্রুত অবসানের জন্য জোর দিচ্ছেন এবং আশা করছেন রিয়াদে আলোচনা একটি অগ্রগতির পথ তৈরি করতে পারে। 

অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য উভয় পক্ষ বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহত রয়েছে।

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে মঙ্গলবার কথা বলবেন ট্রাম্প

ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা চলতি সপ্তাহে

গতকাল রবিবার সৌদি আরবের রিয়াদে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকটি গভীর রাতে শেষ হয়। কিয়েভের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ।

পরে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা জ্বালানিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইউক্রেন তার ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যকে বাস্তব রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, যেকোনো চুক্তি ‘পূর্ণাঙ্গ’ যুদ্ধবিরতির পথ প্রশস্ত করবে।

স্টিভ উইটকফ ফক্স নিউজকে বলেন, তিনি মনে করেন সোমবার সৌদি আরবের আলোচনায় কিছু বাস্তব অগ্রগতি দেখা যাবে।

তবে গতকাল ক্রেমলিন সংকটের দ্রুত সমাধানের বিষয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করেনি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, ‘আমরা এই পথের কেবল শুরুতে আছি।’

সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি কীভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে, তা নিয়ে অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন দিমিত্রি পেসকভ।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের যৌথ ৩০ দিনের পূর্ণ এবং তাৎক্ষণিক বিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেবল জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ বন্ধের প্রস্তাব করেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে পেসকভ বলেন, সামনে কঠিন আলোচনা রয়েছে।

আজ সোমবার রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, রিয়াদের রিটজ-কার্লটন হোটেল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে; হোটেল থেকে সাংবাদিকদের বের করে দিতে বলা হয়েছে।

তাস এবং আল আরাবিয়া উভয়ই জানিয়েছে, আলোচনা বন্ধ দরজার আড়ালে চলছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ