হাতে এখনও পাঁচটি ম্যাচ। তালিকার তৃতীয়তে থাকা ব্রাজিলের জন্য হয়তো বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়াটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু এটাও ঠিক, ১৩ ম্যাচের চারটিতে হারার পর ব্রাজিলের কোচ দরিভাল জুনিয়রকে নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নন সে দেশের ফুটবল সংস্থা। তাঁর অধীনে ১৫ ম্যাচ খেলে জয় মাত্র ছয়টিতে, যা কিনা ব্রাজিল ফুটবলের সঙ্গে মোটেই মানানসই না। 

বিশ্বকাপের আগেই হয়তো তাঁকে পরিবর্তন করে অন্য কাউকে আনতে পারে ব্রাজিল। সেই জায়গায় ফিলিপ লুইসের নাম শোনা যাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান মিডিয়াগুলোতে। তবে চাকরি বাঁচাতে একটি শেষ সুযোগ হয়তো পাবেন দরিভাল। আর সেটি অবশ্যই আর্জেন্টিনাকে হারানো। 

বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় বুয়েন্স আয়ার্সে আলভারেজদের মুখোমুখি হবে ভিনিসিয়ুসরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্বে দারুণ কোনো অর্জনই কেবল স্বস্তি দিতে পারে ব্রাজিল সমর্থকদের। সেটা দরিভাল নিজেও জানেন। আর সে কারণেই কলম্বিয়াকে হারানোর পরই বলেছিলেন, ‘দলের এখনও কেউ স্বস্তিতে নেই। কারণ, আমাদের ফাইনাল মোমেন্ট এখনও বাকি। পরের ম্যাচ জিততে পারলে হয়তো সন্তুষ্টির কথা বলতে পারব।’

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কৌশল সাজানো নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ত রয়েছেন দরিভাল। যার সব কিছু তিনি অবশ্যই মিডিয়ার সামনে বলবেন না। তবে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডই যে তাঁর চিন্তার কারণ, সেটুকু ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন। ‘আর্জেন্টিনা আমাদের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের মিডফিল্ড যথেষ্ট দক্ষ, তীব্র ও ব্যালান্সড। তাদের টেক্কা দিতে হলে আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলই খেলতে হবে।’ 

ফার্নান্দেজ, পারদেস, ম্যাক অ্যালিস্টার, জুলিয়ানো, আলমাদা, আলভারেজদের সঙ্গে ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলতে পারেন ডি পলও। সব মিলিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়দের মিডফিল্ড প্রতিপক্ষের কাছে আতঙ্ক ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। 

তবে দরিভালকে আশ্বস্ত করেছেন তাঁর দলের অভিজ্ঞ লেফট ব্যাক গিয়ের্মে আরনা। ‘আমরা জানি, আর্জেন্টিনা দারুণ একসময় কাটাচ্ছে। তবে আমাদেরও মানসম্পন্ন পেশাদার খেলোয়াড় আছে। তাদের কিছু ভিডিও দেখেছি এবং তাদের খেলোয়াড়দের যে মান, তাতে আমাদের সবার খুব মনোযোগী থাকতে হবে এবং আর্জেন্টিনা আক্রমণভাগকে অকার্যকর করে রাখতে হলে আমাদের ভালো অবস্থায় থাকতে হবে। তবে আমাদের ফল প্রয়োজন। সেখানে রক্ষণে ভালো করে আমরা জয় নিশ্চিত করতে চাই।’

আরনার কথাতেই পরিষ্কার, ডিফেন্স সামলে গোল করার জন্য প্রস্তুত তাঁর দল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র জ ল আর জ ন ট ন ব শ বক প ব ছ ই আর জ ন ট ন দর ভ ল আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও