কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা চুক্তি করতে চায় রাশিয়া
Published: 25th, March 2025 GMT
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ দাবি করেছেন, তার দেশ কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তার বিষয়ে একটি নতুন চুক্তি করতে আগ্রহী। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধবিরতির দিকে এটি একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ। তবে কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে এই প্রস্তাব সম্মান করার নির্দেশ দিলেই চুক্তি করা সম্ভব। মঙ্গলবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে কয়েক হাজার সেনা পাঠানোর পর দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পূর্ববর্তী একটি চুক্তি ২০২৩ সালে ভেঙে যায়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করে আসছে।
ল্যাভরভ রুশ টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমাদের স্পষ্ট গ্যারান্টির প্রয়োজন হবে। কিয়েভের সাথে চুক্তির দুঃখজনক অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে, গ্যারান্টিগুলো কেবল যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে হবে যা জেলেনস্কি এবং তার দলকে একটি কাজ করার এবং অন্যটি না করার নির্দেশ হতে পারে।”
তিনি বলেন, “এবং আমার মনে হচ্ছে আমাদের আমেরিকান অংশীদাররা এই সংকেত পেয়েছে। তারা বোঝে যে সন্ত্রাসী হামলা বন্ধে, বেসামরিক অবকাঠামো, সামরিক শিল্প কমপ্লেক্সের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন জ্বালানি অবকাঠামোতে গোলাবর্ষণ বন্ধে কেবল ওয়াশিংটনই ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করতে পারে।”
রয়টার্স জানিয়েছে, ল্যাভরভের মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে রাশিয়া সামুদ্রিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আগে জেলেনস্কির উপর মার্কিন চাপ আরো জোরদারের দাবি করবে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।