এমন মানুষ জন্মেছিলেন বলে আমরা যেকোনো দুঃসময়ে দাঁড়িয়েও স্বপ্ন দেখতে পারি
Published: 26th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ, ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন আর নেই। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি মারা যান। একক পরিচয়ে সন্জীদা খাতুনের বহুমাত্রিক জীবনের পরিচয় দেওয়া যায় না। তিনি একাধারে ছিলেন শিক্ষক ও গবেষক, শিল্পী ও সংগীতজ্ঞ, দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় অধিকারকর্মী। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের শিল্প–সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। আত্মীয়স্বজনদের পাশাপাশি তাঁর সহযোদ্ধা, সহশিল্পী, শিক্ষার্থী ও গুণমুগ্ধরা শোক প্রকাশ করেন। তাঁকে নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ফারহীন খান জয়িতা। লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
সন্জীদা খাতুন, আমার মিনু নানু। আমার মায়ের বড় চাচি এবং মায়ের গুরু। কোনো এক অজানা কারণে তাঁকে আমি ভয় পেতাম। আর বরাবরই আমি একটু পালিয়ে বেড়ানো মানুষ। বড় মানুষদের ক্ষেত্রে তো আরও বেশি। কিন্তু আমার সাথে তাঁর এক অদ্ভুত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল হঠাৎ, যখন আমি সিক্স কি সেভেনে পড়ি। মা আমাকে নিয়ে প্রায়ই যাওয়া শুরু করল মিনু নানুর বাড়িতে। ভয় তখন কাটতে শুরু করেছে একটু একটু। যেতাম, টুকটাক গান শিখতাম আর নানান রকম গল্প শুনতাম। প্রথম যে গানটি শিখিয়েছিলেন, সেটি হলো ‘দেশে দেশে ভ্রমি তব দুখ গান গাহিয়ে.
তাঁর (সন্জীদা খাতুন) মুখ থেকে শুনলাম ছায়ানট গড়ে ওঠার গল্প। জানতে চাইলাম, ওই আমলে, ১৯৬১–৬২ সালের কথা, আমাদের নিজের দেশ হয়নি। রবীন্দ্রনাথের গান যখন নিষিদ্ধ করা হলো, তখন কী ভেবে ‘রবীন্দ্র জয়ন্তী’ করার সাহস হলো? গান গাইবার স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করার কথা মাথায় এলো কী করে? তার ওপর আবার তাঁর সরকারি চাকরি! এসব বিদ্রোহী কাজকর্মের জন্য তাঁকে ‘শাস্তিমূলক বদলি’ করা হয়েছিল ঢাকার বাইরে কোথাও। কোথায় এখন আর মনে পড়ছে না।
গল্পের মূল আকর্ষণ পয়লা বৈশাখ। ‘কেন? কী ভেবে?’ বললেন, মানুষের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব ছাড়া আর কিছু তখন ছিল না। একটা কিছু করতে হতো, যা সকল মানুষকে একটা সুতোয় বাঁধতে পারে। জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে! ১৯৬৭ সালে জায়গা খুঁজতে গিয়ে পেলেন রমনার অশ্বত্থগাছের মূল। কিন্তু তাঁরা নাম দিলেন বটমূল। সেটার কী একটা ব্যাখ্যা দিলেন, আজ পরিষ্কার মনে পড়ছে না। সেটা মুখ্য নয়।
মুখ্য হলো—সেই থেকে পয়লা বৈশাখ, একটা উৎসব, আপামর মানুষের হলো।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডায় নির্বাচন: মার্ক কার্নির লিবারেল সদর দপ্তরে উৎসব শুরু
কানাডায় ভোট গ্রহণ শেষে চলছে গণনা। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল আসতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। তবে এরই মধ্যে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কারণ, দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি বলেছে, এবার লিবারেল সরকার হতে চলেছে।
কানাডার ৩৪৩ আসনের হাউস অব কমন্সে লিবারেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি তাদের সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে মার্ক কার্নিই যে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। কানাডা সব সময় গর্বিত, সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ থাকবে এবং আমরা কখনো ৫১তম অঙ্গরাজ্য হব না।—পিয়েরে পলিয়েভর, বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতাপুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে গতকাল সোমবার ভোট দিয়েছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা দেশটিতে নির্বাচনের আগে প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি জনসমর্থন বেড়ে যায়।
লিবারেল ১৫৬টি আসনে এগিয়ে আগে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চাই ১৭২টি আসন। খুব একটা পিছিয়ে নেই প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি। দলটি ১৪৭ আসনে এগিয়ে।অথচ যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ও ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক কথাবার্তা শুরু হওয়ার আগে জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী পিয়েরে পলিয়েভরের কনজারভেটিভ পার্টি থেকে সামান্য পিছিয়ে ছিল কার্নির লিবারেল দল। ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলা শুরু করলে কানাডীয়দের মধ্যে দেশপ্রেমের জোয়ার ওঠে এবং জরিপের পূর্বাভাসে হঠাৎ বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ভোটের দিন সকালেও ট্রাম্প কানাডাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ট্রাম্প লিখেছেন, কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম কাঙ্ক্ষিত অঙ্গরাজ্য হয়, তবে শূন্য শুল্কের সম্মুখীন হবে।
লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে সমর্থকদের উল্লাস