সংসদ সদস্যদের নিজ দলের বিরুদ্ধে গিয়ে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা দিতে চায় না প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে—সংবিধান সংস্কার কমিশনের এই সুপারিশের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। এ তিনটি দলই চায় অর্থবিলের মতো আস্থা ভোটের ক্ষেত্রেও সংসদ সদস্যরা (এমপি) স্বাধীন থাকবেন না। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের নিজ দলের অবস্থানের পক্ষেই থাকতে হবে।

বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে।

আরও পড়ুনমুক্ত পরিবেশ, রাজনীতির মাঠে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী৩০ মার্চ ২০২৫

এই বিধানের ফলে সরকারের চাওয়ার বাইরে কোনো আইন বা প্রস্তাব সংসদে পাস হওয়ার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কারও বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হওয়ারও সুযোগ নেই।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় থেকেই অনুচ্ছেদটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। যাঁরা এর বিপক্ষে তাঁরা বলছেন, এই অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা খর্ব করে এবং প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্রভাবে ক্ষমতা দেয়। অন্যদিকে এটা রাখার পক্ষে যাঁরা, তাঁদের যুক্তি—এই বিধান বাদ দিলে সরকারের স্থিতিশীলতা থাকবে না। কিছুদিন পরপর সরকার ও সংসদ ভেঙে যেতে পারে। সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বড় ধরনের অর্থের অবৈধ লেনদেনও হতে পারে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে। তাতে বলা হয়েছে, আইনসভা হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে তাদের সুপারিশ হলো অর্থবিল ছাড়া নিম্নকক্ষের সদস্যদের তাঁদের মনোনয়নকারী দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।

এই সুপারিশসহ পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ইতিমধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অনেকগুলো দল তাদের মতামত জানিয়েছে। শিগগিরই এই তিন দলের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

আরও পড়ুনঈদের পর সংস্কার নিয়ে আলোচনার চিন্তা এনসিপির৩১ মার্চ ২০২৫

কমিশনের সুপারিশের যৌক্তিকতা

সংসদ সদস্যদের দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করার পেছনে যৌক্তিকতা নিজেদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের নিজ দলের প্রস্তাবিত যেকোনো নীতি বা সিদ্ধান্ত অকপটে মেনে নিতে বাধ্য করে। যদিও তাঁদের মতামত দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু দলের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি। সংবিধান দলের প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের নামে সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতে বাধা দেয়।

কমিশন বলেছে, যদিও দলত্যাগ (ফ্লোর ক্রসিং) আটকানো ছিল এই অনুচ্ছেদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য, কার্যত এর প্রভাব এই উদ্দেশ্য ছাপিয়ে গেছে। ৭০ অনুচ্ছেদে ফ্লোর ক্রসিংয়ের বিরুদ্ধে যে বিধান, তা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। স্থিতিশীলতার উদ্দেশ্যে এ বিধান রাখা হলেও এটি রাজনৈতিক আলোচনা এবং দলীয় জবাবদিহিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এটি সংসদ সদস্যদের তাঁদের নির্বাচনী এলাকার স্বার্থ প্রতিনিধিত্ব করা ও স্বাধীন ইচ্ছা প্রয়োগের ক্ষমতাকে সীমিত করে ফেলে।

আরও পড়ুননির্বাচনের পরের সরকার সংস্কারপ্রক্রিয়া চলমান রাখবে, সে নিশ্চয়তা নেই: নাহিদ ইসলাম২৮ মার্চ ২০২৫

ভিন্ন অবস্থান দলগুলোর

 সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রশ্নে ঐকমত্য কমিশনে দেওয়া লিখিত মতামতে বিএনপি বলেছে, সংসদে আস্থা ভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, এমন সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে না। এসবের বাইরে অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে মতামত দিতে পারবেন।

আস্থা ভোটে স্বাধীনতা দেওয়ার বিপক্ষে যুক্তি কী—তার ব্যাখ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে ১৯৫৪ সালের পর প্রায় প্রতিদিন সরকার পরিবর্তন হতো। উপমহাদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও ইতিহাস পর্যালোচনা এবং অনেক বিচার–বিশ্লেষণ করে বিএনপি এই প্রস্তাব বা মতামত দিয়েছে। যাতে সরকারের একটি স্থিতিশীলতা থাকে। তাঁরা মনে করেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনো আস্থা ভোটের স্বাধীনতা দেওয়ার মতো উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেনি, আস্থা ভোটে স্বাধীনতা দেওয়া হলে কোনো সরকার এক থেকে দুই মাসের বেশি টিকবে না। সরকারে স্থিতিশীলতা থাকবে না।

আরও পড়ুনরাষ্ট্রের নাম বদলে আপত্তি এনসিপির, মূলনীতি পরিবর্তনে একমত ২৮ মার্চ ২০২৫

সংবিধান সংস্কার কমিশন যখন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত চেয়েছিল, তখন জামায়াতে ইসলামী কমিশনকে দেওয়া প্রস্তাবে বলেছিল, ফ্লোর ক্রসিং এখন বন্ধ করা উচিত নয়। এটি সংসদীয় সরকারব্যবস্থা স্থিতিশীল করতে যুক্ত করা হয়েছিল। তারা এটি আরও দুই মেয়াদ পর্যন্ত রাখার পক্ষে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেওয়া মতামতেও অনেকটা একই বক্তব্য তুলে ধরেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঐকমত্য কমিশনে যে মতামত দিয়েছেন, সেখানে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। অর্থবিল, আস্থাভোটসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়ার কথা তাঁরা বলেছেন। তিনি বলেন, আস্থা ভোট দলের পলিসির (নীতি) বিষয়। একজন সংসদ সদস্য দলকে প্রতিনিধিত্ব করেন। দলের পলিসির সঙ্গে সংসদ সদস্যদের একই অবস্থান থাকতে হবে। সংসদ সদস্যরা যদি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির প্রতি অনাস্থা প্রস্তাবে দলীয় পলিসির অনুসরণ না করেন, তাহলে শৃঙ্খলা থাকবে না।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের দল এনসিপিও অর্থবিলের পাশাপাশি দলের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে। এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের বিধান না থাকলে সংসদ সদস্যদের কেনাবেচা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংসদ ও সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য তাঁরা অর্থবিল ও আস্থা ভোট ছাড়া অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলেছেন।

আরও পড়ুনসংসদের মেয়াদ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণার সুপারিশ বিষয়ে দ্বিমত বিএনপির২৫ মার্চ ২০২৫

যেভাবে যুক্ত হয় ৭০ অনুচ্ছেদ

১৯৭২ সালে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ কীভাবে যুক্ত হয়েছিল, তার বর্ণনা পাওয়া যায় প্রয়াত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বিপুলা পৃথিবী বইয়ে। ১৯৭২ সালের সংবিধানের বাংলা অনুবাদ করার দায়িত্ব ছিল অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের। তিনি লিখেছেন, ‘সংবিধানের বিষয়ে পরামর্শ দিতে বঙ্গবন্ধু দুই বার ডেকে পাঠিয়েছিলেন কামালকে—সঙ্গে আমিও ছিলাম। .

..তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান আমলে সরকার অস্থিতিশীল হয়েছিল মূলত পরিষদ-সদস্যদের দল বদলের ফলে কিংবা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের বিপক্ষে ভোটদানের ফলে। এটা বন্ধ করা দরকার। নির্বাচিত সদস্য যদি দলের কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত না হন কিংবা কোনো ক্ষেত্রে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তাহলে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত হবে কিংবা তাঁর সদস্যপদ চলে যাবে—এমন একটা নিয়ম করা দরকার। তবে এমন ক্ষেত্রে তিনি উপনির্বাচন বা পরবর্তী কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন না, সে ব্যবস্থাও থাকতে হবে। এই অভিপ্রায়ই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে প্রকাশ পেয়েছিল।’

তবে গণপরিষদেই ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। আনিসুজ্জামান তাঁর বইয়ে এ বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, (গণপরিষদ সদস্য) আ ক ম মোশাররফ হোসেন আকন্দ, আছাদুজ্জামান খান, আবদুল মুন্তাকীম চৌধুরী, হাফেজ হাবিবুর রহমান এই অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করেছিলেন। আনিসুজ্জামান লিখেছেন, ‘৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে সবচেয়ে কড়া ভাষায় আপত্তি জানান হাফেজ হাবিবুর রহমান—তাঁর মতে, এতে দলীয় একনায়কত্বের ও দলীয় নেতার একনায়কত্বের সৃষ্টি হবে।’

আরও পড়ুনকমিশনের প্রস্তাব গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করবে২৪ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দল র ব র দ ধ র স ব ধ নত ন জ দল র ব র প রস ত ব দল র প র সরক র র র সদস য র ক ষমত মত মত দ অন স থ ত ব কর হয় ছ ল ব এনপ এনস প ইসল ম দলগ ল হওয় র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে একমত হলেও বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় এনসিপি

সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) বিষয়ে একমত পোষণ করলেও এটি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঐকমত্যের বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন, যার পদ্ধতি এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। ফলে একটি অস্পষ্টতা থেকেই গেছে।’

আজ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আখতার হোসেন।

উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সেই রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনকে কার্যকর আলোচনা জন্য আহ্বান জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এনসিপির পক্ষ থেকে উচ্চকক্ষে সংবিধান সংশোধনের জন্য ‘টু-থার্ডস মেজরিটি’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিতরা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন—এমন কথা বলা হলেও, বিশ্বজুড়ে এফপিটিপি (যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান) ও পিআর উভয় পদ্ধতিতেই বৈধতা রয়েছে। পিআর পদ্ধতিতেও জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।

কমিশনের প্রস্তাবিত বাস্তবায়ন সময়সীমাকে এনসিপি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানান দলটির সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সিদ্ধান্তগুলো তৎক্ষণাৎ কার্যকর হোক।’ তিনি বলেন, ‘১ শতাংশ ভোট পেলেও যেন একটি দল একজন করে প্রতিনিধি উচ্চকক্ষে পাঠাতে পারে—এটি বহু মতের ও বহু দলের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। আইন পাসের আগে যদি উচ্চকক্ষে আলোচনা হয়, তাহলে ভুলত্রুটি ধরার সুযোগ তৈরি হবে এবং সংসদের বাইরে জনপরিসরেও আইন নিয়ে আলোচনা গড়ে উঠবে।’

‘বর্তমানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যেভাবে দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে, সেটা যেন না হয়’ উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব থাকলে, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রেও জনগণের বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।’

উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘অনেকে বলছেন, পিআর পদ্ধতিতে হলে তাঁরা উচ্চকক্ষ চান না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—তাঁরা আদৌ উচ্চকক্ষ চান কি না। আমরা বিশ্বাস করি, ১০০ আসনের এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশ একদল বা দুই দলের কর্তৃত্ব থেকে বেরিয়ে বহু দলের অংশগ্রহণে পরিচালিত হবে। এতে গণতন্ত্রচর্চার নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।’

আলোচনার সময় সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক নিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আখতার হোসেন। যদিও কিছু দল ভিন্নমত পোষণ করেছে, তবে সার্বিকভাবে একটি ঐকমত্যের জায়গায় কমিশন পৌঁছেছে বলেও তিনি দাবি করেন।

আলোচনার শেষভাগে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, ১০০ আসনের একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে, যেখানে প্রতিনিধিরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। এ কক্ষে নিম্নকক্ষ থেকে পাঠানো বিল সর্বোচ্চ দুই মাস আটকে রাখা যাবে এবং সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ‘সিম্পল মেজরিটি’র কথা বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৌলিক সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কার কী অবস্থান
  • সংবিধানের চার মূলনীতি প্রশ্নে কমিশনের সভা বর্জন বাম দলগুলোর
  • উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে একমত হলেও বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা চায় এনসিপি
  • সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের, সদস্য মনোনীত হবেন পিআর পদ্ধতিতে
  • ‘জুলাই সনদের’ দাবিতে শাহবাগে অবরোধ, যানজট
  • ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করলে এনসিবি তা করবে: আখতার হোসেন
  • খসড়া নিয়ে ৩ দলের আপত্তি
  • প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্যের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে
  • ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার প্রত্যাশা
  • ‘বাদ দেওয়ার চেষ্টা হলেও ঘোষণাপত্রে নিশ্চিত হবে জুলাই ছাত্র-জনতার ন্যায্য স্বীকৃতি’