সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপিকে টার্গেট করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে টার্গেট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা প্রচারণা চলছে যে বিএনপি আগে নির্বাচন চায়, পরে সংস্কার অথবা বিএনপি সংস্কার চায় না, নির্বাচন চায়। এটা দিয়ে জনগণের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে বিষয়ে জোর দিচ্ছি, সে বিষয়ে অনেকেই বুঝতে সক্ষম হচ্ছেন না। আমরা কখনই এটা বলছি না—আগে নির্বাচন, পরে সংস্কার। আমরা বলে আসছি; প্রথমত, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য মিনিমাম সংস্কার যেটুকু দরকার, তা করতে হবে। যেমন নির্বাচন ব্যবস্থাকেন্দ্রিক যে সংস্কার, তা করতে হবে; দ্বিতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে; তৃতীয়ত, জুডিশিয়াল রিফর্ম (বিচার ব্যবস্থার সংস্কার) করতে হবে। এই তিনটি বিষয়ে সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আজ যে সংস্কার দাবি উঠেছে, তা বিএনপিরই দাবি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি যে ৩১ দফার প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে সংবিধান সংস্কার বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে মতামত দিয়েছে। কতগুলো বিষয় আছে যা মীমাংসিত, সেগুলোতে বিএনপি হাত দিতে চায় না।

আরও পড়ুনসংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে কী বলছে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যরা১৭ জানুয়ারি ২০২৫

ফ্যাসিবাদীদের বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা আছে কি না—প্রশ্ন করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরস্পরবিরোধী মতামত নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা নেই। কারণ, গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হচ্ছে ভিন্ন মত। সব রাজনৈতিক দলের যদি একই রকম মতামত হয়, তবে তো একই ধরনের হয়ে গেল। এখানে একেক দলের একেক মত থাকবে। দেশের জনগণ বেছে নেবেন, কোনটা তাঁদের জন্য প্রযোজ্য।’ এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘দেশের জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক রয়েছে। আর যাঁরা সংস্কার নিয়ে এসেছেন, তাঁরা জ্ঞানী লোক, পণ্ডিত লোক; বিশাল বিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। তাঁদের আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। কিন্তু তাঁরা যদি জনগণের বাইরে গিয়ে কিছু করেন, তবে আমরা সেটাকে সমর্থন করতে পারি না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গোটা পৃথিবীতে ডানপন্থীদের একটা উত্থান হয়েছে। তাঁরা এখন বলছেন, ‘গণতন্ত্র ইজ গোয়িং ডাউন।’ জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশ সফরে এলে বিএনপি তাঁর সঙ্গে বৈঠক কর। সেখানে তিনি বলেছিলেন যে ‘গণতন্ত্র এখন বিপদের সম্মুখীন।’ এখন বিভিন্ন দেশে ডানপন্থীদের উত্থান হচ্ছে, কর্তৃত্ববাদের উত্থান হচ্ছে, গণতন্ত্র নিচে নামছে। কিন্তু তারপরও গণতন্ত্রই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা, শাসনের জন্য, সুশাসনের জন্য।

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রচারণাসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের মিডিয়ায় যেসব প্রচার হচ্ছে, সেগুলো যে ডাহা মিথ্যা, এটা আপনারা ভালো করে জানেন। ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম দিকে কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরে অন্যায় হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে কী এসব হয়েছে? অথচ ভারতের মিডিয়ার বয়ানে দেখবেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চরম অন্যায় হচ্ছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সোশ্যাল মিডিয়া দেখি না। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে একটা মিস ইনফরমেশন, মিথ্যা প্রচার ও অপপ্রচারের কারখানা।’

আরও পড়ুনবিএনপির সংস্কার প্রস্তাব: ক্ষমতার ভারসাম্য, একজন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় ২৩ নভেম্বর ২০২৪

দলীয় নেতা-কর্মীদের অপরাধ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইতিমধ্যে দলীয় কিছু ব্যক্তি, কিছু কিছু কাজ (অপরাধ) করেছিল, যা আমরা প্রশ্রয় দিই না; তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও সংগঠনের কমিটি ভেঙে দিয়েছি, দলের নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছি।’

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওয়াদুল্লাহ মাসুদ, আবু তাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র ব যবস থ ব এনপ র র জন য ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ

ভিয়েতনাম সরকারের আমন্ত্রণে দেশটির রাষ্ট্রপতি তো লামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা। 

দক্ষিণ ভিয়েতনামের স্বাধীনতা এবং দেশটির জাতীয় ঐক্য দিবসের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেশটির হো চি মিন সিটিতে ২৯-৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে যোগ দেন সিপিবির সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকসহ দেশটির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনাম সরকারের আমন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সরকারের প্রতিনিধিগণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ভিয়েতনামের সরকার এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে। সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড তো লাম অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন। 

অনুষ্ঠানের ঘোষণায় বলা হয়েছে, সাম্রাজ্যবাদ এবং নয়া উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির এ আয়োজন এক শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে। সেটি হলো, এশিয়ার নিপীড়িত জনগণ আজ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত। আগ্রাসন, যুদ্ধ এবং সহিংসতা আজ সাধারণ জনগণের প্রতিরোধে সম্মুখীন। এ সংগ্রামে জনগণের জয় অবধারিত।

ঢাকা/সুমি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’
  • মিয়ানমারকে মানবিক করিডর দেওয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই: সিপিবি
  • সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ 
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
  • জনগণ গণতন্ত্রের জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়: আমীর খসরু
  • নতুন কর্মসূচি দিল যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল