মার্কিন সংবিধানকে কি চ্যালেঞ্জ করছেন ট্রাম্প
Published: 8th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে সংবিধানের বাইরে গিয়ে তৃতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। হয়তো ট্রাম্পের নিজ শিবিরের অনেকে একে কৌতুক হিসেবে নিয়েছেন, রিপাবলিকান নেতারা হেসেছেন। তবে, সাংবাদিকরা ট্রাম্পের এ কথা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ায় হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা তাদের উপহাস করেছেন।
বাস্তবতা হচ্ছে, ট্রাম্প যে ধারণার কথা বলেছেন, তা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। প্রায় ২৫০ বছর আগে স্বাধীনতার পর এই সাংবিধানিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অতীতে কখনও ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা ও আইনের শাসনের প্রতি একজন প্রেসিডেন্টের যে প্রতিশ্রুতি, তা এতটা প্রশ্নের মুখে পড়েনি। ট্রাম্পের সমালোচকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ট্রাম্পের সংবিধান অমান্য করার চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও একবার তিনি সংবিধান অমান্য করে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়ার পর তিনি ফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। পরে ট্রাম্প নতুন নির্বাচন ছাড়াই হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার জন্য সংবিধান বাতিলের দাবিও করেছিলেন।
জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের পর ১১ সপ্তাহে তিনি যত নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, আধুনিককালে তাঁর পূর্বসূরিদের কেউ এমনটা করেননি।
ডেমোক্র্যাট নেতা ড্যানিয়েল গোল্ডম্যান এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে বলেছেন, আমার মনে হয়, তিনি এরই মধ্যে যা শুরু করেছেন, এটা তারই চূড়ান্ত নাটকীয় রূপ। গণতন্ত্রকে অস্থিতিশীল ও দুর্বল করার এটি একটি পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা, যেন তিনি আরও বেশি ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে পারেন। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ করে তোলপাড় শুরু করেছেন তিনি। এভাবে আসলে গণতন্ত্রের ওপর হামলা হচ্ছে বলে মনে করেন গোল্ডম্যান। এই ডেমোক্র্যাট নেতা বলেন, এখন আর কাল্পনিক বা অমূলক নেই। আসলেই গণতন্ত্রের ওপর হামলা শুরু হয়েছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব