চট্টগ্রামে পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মানবন্ধন
Published: 8th, April 2025 GMT
প্রায় তিন যুগ পদোন্নতি বঞ্চিত বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের নন্দনকাননস্থ ফরেস্ট হিলে সমবেত হয়ে পদোন্নতি বঞ্চনা ও বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান তারা।
ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তারা জানান, বন বিভাগে ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা মাঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যুগ যুগ ধরে তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের জীবন বাজি রেখে বনভূমি ও বন্যপ্রাণী রক্ষার দায়িত্ব পালনসহ নতুন বনায়ন সৃষ্টি এবং রাজস্ব আদায় করার কাজটি করে থাকেন তারা। দুর্গম এলাকায় অবস্থানসহ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। এরপরও কর্তৃপক্ষ ফেরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছেন। ২০ থেকে ৩৫ বছর পদোন্নতি না দিয়ে একই পদে দাবিয়ে রাখছেন কর্তৃপক্ষ।
ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠক করার পরেও আমরা পদোন্নতি বঞ্চিত। এ কারণে চলতি বছরের গত ৬ মার্চ কর্তৃপক্ষকে এক মাসের মধ্যে আমাদের সমস্যা নিরসনের জন্য অনুরোধ জানাই। অন্যথায় আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনে যাব বলে ঘোষণা দেই। তবে, কর্তৃপক্ষ দাবি বাস্তবায়ন না করায়, আমরা মাঠের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় আবরার হত্যার রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন
মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার জনবল রাজস্বকরণের দাবিতে মানববন্ধন
তিনি আরো বলেন, “দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবারো নতুন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৫ এপ্রিল সারা দেশের বন বিভাগ ও অঞ্চলে পদোন্নতি বিষয় ও নিরসন কল্পে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। ২৮ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল দেশের বন বিভাগের নিয়ন্ত্রিত বনাঞ্চলের সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বিভাগীয় কার্যালয়ে জমা প্রদান। ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত সব ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড বিভাগীয় দপ্তর ও অঞ্চলে একটানা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন। ১৫ মে বন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় আগারগাঁও, ঢাকা অবস্থান করে সব ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, মোস্তফা কামাল, মোস্তফা জামাল, আরিফুল আলম, নাসিরুল আলম, সুলতান মাহমুদ টিটু, আসলাম হোসেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফর স ট র ও ফর স ট গ র ড অবস থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫