প্রায় তিন যুগ পদোন্নতি বঞ্চিত বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের নন্দনকাননস্থ ফরেস্ট হিলে সমবেত হয়ে পদোন্নতি বঞ্চনা ও বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান তারা।

ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তারা জানান, বন বিভাগে ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা মাঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যুগ যুগ ধরে তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের জীবন বাজি রেখে বনভূমি ও বন্যপ্রাণী রক্ষার দায়িত্ব পালনসহ নতুন বনায়ন সৃষ্টি এবং রাজস্ব আদায় করার কাজটি করে থাকেন তারা। দুর্গম এলাকায় অবস্থানসহ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। এরপরও কর্তৃপক্ষ ফেরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছেন। ২০ থেকে ৩৫ বছর পদোন্নতি না দিয়ে একই পদে দাবিয়ে রাখছেন কর্তৃপক্ষ। 

ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠক করার পরেও আমরা পদোন্নতি বঞ্চিত। এ কারণে চলতি বছরের গত ৬ মার্চ কর্তৃপক্ষকে এক মাসের মধ্যে আমাদের সমস্যা নিরসনের জন্য অনুরোধ জানাই। অন্যথায় আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনে যাব বলে ঘোষণা দেই। তবে, কর্তৃপক্ষ দাবি বাস্তবায়ন না করায়, আমরা মাঠের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।”

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় আবরার হত্যার রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন

মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার জনবল রাজস্বকরণের দাবিতে মানববন্ধন

তিনি আরো বলেন, “দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবারো নতুন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৫ এপ্রিল সারা দেশের বন বিভাগ ও অঞ্চলে পদোন্নতি বিষয় ও নিরসন কল্পে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। ২৮ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল  দেশের বন বিভাগের নিয়ন্ত্রিত বনাঞ্চলের সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বিভাগীয় কার্যালয়ে জমা প্রদান। ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত সব ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড বিভাগীয় দপ্তর ও অঞ্চলে একটানা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন। ১৫ মে বন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় আগারগাঁও, ঢাকা অবস্থান করে সব ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি।”

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, মোস্তফা কামাল, মোস্তফা জামাল, আরিফুল আলম, নাসিরুল আলম, সুলতান মাহমুদ টিটু, আসলাম হোসেন। 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফর স ট র ও ফর স ট গ র ড অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’