সীমান্তের ইছামতী নদীতে বাংলাদেশি যুবকের লাশ, নিয়ে গেছে বিএসএফ
Published: 12th, April 2025 GMT
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর বিওপি–সংলগ্ন হুদাপাড়া এলাকায় ইছামতী নদীতে এক বাংলাদেশি যুবকের লাশ ভেসে ওঠে। লাশটি ভারতের সীমানার মধ্যে ছিল। গতকাল শুক্রবার রাতে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) লাশটি নিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় হুদাপাড়া এলাকার ইছামতী নদীতে একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাংলাদেশি কৃষকেরা। পরে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে নিশ্চিত হন, মৃতদেহটি ভারতের অংশে রয়েছে। তাঁরা বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) জানালে বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটিকে ভারতীয় অংশে পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহতের লাশ পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার ধানতলা থানার হাবাসপুর এলাকায় নদীতে ভেসে ওঠে বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানার পর বিজিবি বিএসএফকে জানায়। রাত ১০টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা মৃতদেহটি নদী থেকে নিয়ে যান।
মহেশপুর উপজেলার নেপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন, মৃতদেহটি বাংলাদেশি এক যুবকের। তবে তাঁর পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয়ভাবে শোনা যাচ্ছে, লাশটি উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা ওয়াসিম আলীর হতে পারে। ওয়াসিম কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হতে পারে।
বিজিবি-৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, মৃতদেহটি নদীর ভারতীয় অংশে ছিল বলে শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ বা দাবি নিয়ে আসেননি। বিএসএফের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তাঁরা বিএসএফের পক্ষ থেকে তথ্য জানার অপেক্ষায় রয়েছেন।
কয়েক দিন আগে ওয়াসিমসহ কয়েকজন অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। তখন বিএসএফ তাঁদের ধাওয়া করে। অন্যরা পালিয়ে দেশে ফিরলেও ওয়াসিমের আর খোঁজ মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়াসিম বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ র
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।