ওমানের মধ্যস্থতায় ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকের বিষয়ে ইতিবাচক মত দিয়েছে দু’পক্ষই। শিগগিরই দুই দেশ আবারও আলোচনার টেবিলে বসার কথা জানিয়েছে। তবে ইরান পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা হবে শুধু পরোক্ষভাবে, ওমানের মধ্যস্থতায়। সরাসরি বৈঠকে প্রবল আপত্তি তেহরানের। আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কেও গণমাধ্যমকে জানিয়েছে দেশটি।
ইরানের স্পষ্ট মতামত, এ আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া নিয়ে। এর বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় যাবে না তেহরান।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাঈল বাকাঈ রোববার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘ওমানের মধ্যস্থতায় আলোচনা পরোক্ষভাবেই চলবে। ভবিষ্যৎ আলোচনার স্থান এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’ আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বৈঠকে শুধুই পরমাণু কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হবে। অন্য কোনো ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলবে না ইরান।’
শনিবার মাসকাটে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি ভেঙে পড়ার পর দেশ দুটির সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ইসরায়েলবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি তেহরানের সমর্থনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করতে পারে। তবে শুরু থেকেই এসব বিষয়ে আলোচনায় অসম্মতি দেখিয়ে আসছে ইরান।
গত শনিবারের আলোচনা উভয় পক্ষই ‘গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে। আলোচনা মূলত ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় পরোক্ষভাবে হলেও ইরান জানিয়েছে, পরে আরাগচি ও উইটকফ কয়েক মিনিট সরাসরিও কথা বলেন। ইরানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনা খারাপ যাচ্ছে না। তবে যতক্ষণ কিছু চূড়ান্ত না হয়, সে পর্যন্ত কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ সূত্র: এএফপি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র পরম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা