চলতি বছরের শেষ মাস অর্থাৎ ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করছে বিএনপি। 

আগামী এক মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ হলে এই নির্বাচন করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

আরো পড়ুন:

৫০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ শোধ করা হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ইরানকে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে: মার্কিন বিশেষ দূত

বৈঠক শেষে বেরিয়ে সংবাদিকদের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, “আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছি। নির্বাচন ডিসেম্বরের আগেও হতে পারে, সেটাও বলেছি। এখানে সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজে বলেছেন, যেসব বিষয়ে সকলের ঐকমত্য থাকবে সেসব বিষয়ে সংস্কার করা হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা তার দেওয়া বক্তৃতায় বারবার নির্বাচনের একটি টাইমলাইনের কথা বলছেন, আর সেটি হলো- ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে। তবে বিএনপি তাতে একমত নয়। দলটি চাইছে নির্বাচন আগেই হোক, ডিসেম্বরে বা তারও আগে। অবশ্য জামায়াত এতদিন সংস্কার শেষে নির্বাচনের কথা বললেও বুধবার দলটির আমির বলেছেন, আগামী রমজানের আগেই তারা নির্বাচন চান। 

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক অভিযোগ করেন, দেশের অনেক জায়গায় প্রশাসন বিএনপির পক্ষ নিচ্ছে। ফলে তাদের দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এনসিপি আগে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার চায়; তাদের বিবেচনার দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে নির্বাচন। 

তবে বিএনপি মনে করছে সংস্কার দ্রুত শেষ করার সুযোগ রয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে আমীর খসরু বলেন, “সহজ বিষয়- আমরা সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছি। সকলের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য আছে আমরা সেটি দিয়েছি। ঐকমত্য হলে সেটা এক মাসের মধ্যেই হয়ে যাবে।”

গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে এই সাক্ষাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।

 আমীর খসরু বলেন, “মার্কিন প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছে বিএনপির পলিসি কী হবে। অর্থনৈতিক পলিসি কী হবে, সেটা আমরা তাদেরকে বলেছি। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কার করার সময় হয়েছে বিএনপির। আমরা তাদের বলেছি, আগামী দিনে আরো বড় অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে যাব আমরা। সেটাতে তারা আশ্বস্ত হয়েছেন।”

এর আগে দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করে।  

সেখান থেকে বেরিয়ে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, “তারা আশা করেন আগামী রমজানের আগে অর্থাৎ মধ্য ফেব্রুয়ারি মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

এই প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “নভেম্বর-ডিসেম্বর বিষয় না। বর্তমানে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে সেখান থেকে গণতান্ত্রিক সরকারে ফেরা দরকার দ্রুত। সেটা করতে কতদিন সময় লাগে, সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।”

বুধবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এ বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় জানতে চায় বিএনপি।

তবে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো সময় দেননি জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সুনির্দিষ্ট কোনো ডেটলাইন আমাদের দেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান। আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।”

তবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আলোচনায় বিএনপিকে খুশি মনে হয়েছে। তবে তারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চান।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ব এনপ ড স ম বর র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ