কুয়েটে উপাচার্যের সমর্থনে কর্মচারীদের মানববন্ধন, সন্ধ্যায় পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশালমিছিল
Published: 17th, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কর্মচারী সমিতির উদ্যোগে উপাচার্যের সমর্থনে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে ওই কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় অভিযোগ করা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে আবারও কুয়েট ক্যাম্পাসে কতিপয় শিক্ষার্থী বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসিব সরদার। এ সময় বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি শেখ এরশাদ আলী, সাবেক সভাপতি ইমদাদ মোড়ল, মাস্টাররোল কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল হালিম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের যে এক দফা দাবি তুলেছেন, সেটা যৌক্তিক নয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁরা সব সময় ছিলেন, এখনো তাঁদের পাশে আছেন। সেদিন (১৮–১৯ ফেব্রুয়ারি) মার খেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর বিচারের ব্যবস্থা করছে। এখন উপাচার্য স্যারের পদত্যাগ দাবি করায় একধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁরাও পার পেয়ে যেতে পারেন।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, ‘আপনারা আলোচনার টেবিলে বসুন, আলোচনা করুন, সমাধান করুন। এই ভার্সিটি যেন সুন্দরভাবে চলে। বিশ্বের কাছে যাতে এই ভার্সিটির শিক্ষার্থীরা মাথা উঁচু করে পরিচয় দিতে পারেন।’
এদিকে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আজ সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলার পাদদেশে মশালমিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল ও একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিকে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা গত রোববার বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করেন।
শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। এরপর ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন তাঁরা। গতকাল বুধবার দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওই কর্মসূচির পর উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবির বিপক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আরও পড়ুনকুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবির বিপক্ষে মানববন্ধন, সমাবেশ১৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনকুয়েটে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল১৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর পাড় এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে সড়ক অবরোধ সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এতে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের উভয় পাশে যানবাহন বন্ধ হয়ে যানজটের সৃস্টি হয়।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুস্ঠিত হয়। ১১ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন আজ দুপুরের পর এলাকাবাসীর সাথে নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলবেন তাদের সমস্যার কথা শুনবেন এবং দ্রুতই তা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
এ সময় লালপুর পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মুসা বলেন জলাবদ্ধতার কারনে মুসুল্লিরা নামাজ পরতে পারছেনা,কর্মজীবিরা কাজে যেতে পারছেনা,স্কুল -কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা,নোংরা পানির কারনে ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পরেছে।
আমাদের কে আশ্বাস করেছিলো সেনাবাহিনী কতৃক যে পাম্প বসানো হয়েছিলো সেটা চালু হলে আমাদের দ্ঃূক কস্ট লাঘব হবে। কিম্ত সে পাম্প চালু হলেও আমাদের কস্ট শেষ হয়নি। সেই পাম্প আমাদের কোন কাজে আসেনি।
আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি দিয়েছি তারা এসে দেখেও গেছে কিন্ত আজো সমস্যার সমাধান করা হয়নি। বিগত সরকারের আমলে তখনকার চেয়ারম্যান, এমপি সাহেবের নিকট গিয়েছি। শামীম ওসমান এসে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তা শুধু কথার কথাই ছিলো। কিন্ত কোন কাজে আসেনি।
ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন জানায়, দীর্ঘদন যাবৎ আমরা এই সমস্যা আছি। মৃত মানুষের লাশ পযন্ত দাফন করতে পারছিনা। মসজিদের ভিতরে পানি নামাজ পরতে পারছিনা। রাস্তায় বের হতে পারছিনা।
আমাদের কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিতে হয় ছাদের ওপরে নতুবা অন্য এলাকায় গিয়ে। এ সব কিছুই সরকারের সকল বিভাগের কর্মরত কর্তার জানে। কিন্ত শুধু আশ্বাস পেয়ে গেছি। কোন সমাধান পাইনি তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে আমাদেরকে।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ফতুল্লায় এতো উন্নয়ন হয়, কিন্তু লালপুর পৌষাপুকুর পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হোক।
ব্যবসায়ী হাবিব জানায়, আমাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের কোন কাজ হয় নাই। আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্ত কোন কাজ হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন প্রকার টেক্স আর দিবোনা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, লালপুর- পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী, আজাদুর রহমান আজাদ,আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রফিক, লালপুর আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সভাপতি মো. জনি, শামীম।