১ মে থেকে ডিম-মুরগির খামার বন্ধ ঘোষণা
Published: 17th, April 2025 GMT
আগামী ১ মে থেকে সারা দেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারী খামার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। দেশের পোলট্রি শিল্প সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
বিপিএ বলেছে, গত দুই মাসে ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারী প্রান্তিক খামারিরা প্রায় ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছেন। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচি চলবে।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিপিএর সভাপতি মো.
পবিত্র রমজান ও ঈদের বাজারেও প্রান্তিক খামারিরা লোকসান দিয়েছেন বলে দাবি করেছে বিপিএ। উদাহরণ টেনে তারা বলেছে, ঈদের আগে প্রতিটি এক দিনের বাচ্চা ২৮-৩০ টাকায় উৎপাদন করে করপোরেট কোম্পানিগুলো তা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি করেছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানে পড়েন প্রান্তিক খামারিরা।
করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো খাদ্য, বাচ্চা ও ওষুধের পাশাপাশি ডিম ও মুরগির বাজারও নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও অভিযোগ সংগঠনটির। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিদিন খামার বন্ধ হচ্ছে। তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক খামারিদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বা চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যা মানা হবে না।
বিবৃতিতে বিপিএ ১০ দফা দাবিও জানিয়েছে। সেগুলো হলো পোলট্রি পণ্যের জন্য জাতীয় মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ও নির্ধারণ কমিটি গঠন করা, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন করা, পোলট্রি বাজার রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়া, খামারিদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দেওয়া, করপোরেট কোম্পানিগুলোকে কেবল কাঁচামাল উৎপাদনে সীমাবদ্ধ রাখা, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও কোম্পানির খামার নিষিদ্ধ করা, কেজিভিত্তিক ডিম ও মুরগি বিক্রির নীতিমালা প্রণয়ন করা, ডিম ও মুরগির রপ্তানির সুযোগ বাড়ানো এবং পূর্ণাঙ্গ পোলট্রি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ম ও ম রগ করপ র ট
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদযাত্রায় নিহত ৩৯০, মৃত্যু বেড়েছে ১৬ শতাংশ: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
আগের বছরের তুলনায় এবারের ঈদুল আজহায় সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এসব ঘটনায় প্রাণহানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। ঈদের আগে-পরে ১৫ দিনে ৩৭৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক হাজার ১৮২ জন।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এতে জানানো হয়, ঈদযাত্রার সময়ে রেলপথে ২৫ দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন মারা গেছেন। ৩১ মে থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪১৫ দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত ও এক হাজার ১৯৪ জন আহত হয়েছেন।
রমজানের ঈদ নির্বিঘ্ন হলেও এবারের ঈদযাত্রায় উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ বিভাগের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহান। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই তথ্য তুলে ধরে বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা ও মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে হলে ঈদের আগে কমপক্ষে চারদিন ছুটি থাকা দরকার। ঈদের যাতায়াত ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। গণপরিবহন ও ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে, ছোট যানবাহন মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। প্রশিক্ষিত দক্ষ চালক, মানসম্মত সড়কের পাশাপাশি আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। ফিটনেসবিহীন যানবাহন বিষয়ে কঠোর হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সড়ক-মহাসড়কের বৃষ্টির কারণে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বেপরোয়া যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। ঈদের পরে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা বিরামহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালাতে গিয়ে হয়েছে। এবারের ঈদেও ভাড়া নৈরাজ্য হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণে সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৩৪ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। ঈদযাত্রায় ৩৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ঈদযাত্রায় নিহতদের ৬১ জন চালক, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৮ জন পথচারী, ৪০ জন নারী, ৩০ জন শিশু।
সমিতির পর্যবেক্ষণে দুর্ঘটনার জন্য ঈদের আগে কম ছুটি, সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল-ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলসহ ৯ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে মোটরসাইকেল ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি বন্ধ করা, মহাসড়কে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণসহ ১১ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক আরমানা সাবিয়া হক, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাসুদ প্রমুখ।