চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পাশাপাশি আরেক দিক দিয়ে দেশটির ওপর চড়াও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনে নির্মাণ করা জাহাজ পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে ভিড়লে বাড়তি মাশুল আদায়ের পরিকল্পনা করছে তারা। নিজেদের জাহাজনির্মাণ শিল্প আবার চাঙা করার জন্য এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে ওয়াশিংটন।

এ নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতেই পরিকল্পনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তর। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, চীনে নির্মিত কোনো পণ্যবাহী জাহাজ প্রতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে ভিড়লেই ৩৫ লাখ ডলার করে দিতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

ইউএসটিআর জানিয়েছে, চীনা জাহাজের ওপর বাড়তি মাশুল আগামী ১৮০ দিনের মধ্যে কার্যকর হবে। এমন জাহাজে আমদানি করা প্রতি টন পণ্যের মাশুল ১৮ ডলার থেকে শুরু হবে। আর প্রতিটি কনটেইনারের জন্য মাশুল ১২০ দিতে হবে ডলার। সে হিসাবে একটি জাহাজে ১৫ হাজার কনটেইনার থাকলে মোট মাশুল দিতে হবে ১৮ লাখ ডলার।

মাশুলের পরিমাণ প্রতি পাঁচ বছর পরপর পর্যালোচনা করা হবে। আর চীনা জাহাজের মালিকানা থাকা কোনো প্রতিষ্ঠান যদি যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত জাহাজ কেনে, তাহলে মাশুল কমানো হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির বলেন, চীনের আধিপত্য কমাতে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ শৃঙ্খলে হুমকি মোকাবিলায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত জাহাজের চাহিদাসংক্রান্ত তথ্য পেতে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাহাজনির্মাণ শিল্পে আধিপত্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তবে বর্তমানে বিশ্বে চলাচল করা পণ্যবাহী জাহাজের মাত্র ১ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় পণ্যবাহী ১০টি জাহাজের বেশির ভাগই চীনে নির্মাণ করা। এ ছাড়া এশিয়ার অন্য দুই দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ারও জাহাজনির্মাণ শিল্পে বড় আধিপত্য রয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে ৯০ দিনের জন্য সেই শুল্ক স্থগিত করা হলেও ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না চীনের। দেশটির ওপর বরং ধাপে ধাপে শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশি পণ্যে আরোপিত মার্কিন শুল্ক আরও হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আজ সোমবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি জানান, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে ব্রেন্ডেন লিঞ্চকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে এ পদক্ষেপকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের একটি বড় মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তিন দিনের সফরে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় এসেছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা, সয়াবিনসহ কৃষিপণ্য আমদানি বাড়ানোর আগ্রহও প্রকাশ করেছে।

এ ছাড়া জ্বালানি খাতে সহযোগিতা জোরদার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি, বেসামরিক বিমান কেনা, মাদক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান আবুল কালাম আজাদ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আজ সোমবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরো গভীর বাণিজ্য সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা