উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে কুয়েটে কাফিন মিছিল
Published: 23rd, April 2025 GMT
উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) কাফিন মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে মিছিলটি বের করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলার পাদদেশের সামনে দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে যায়। সেখানে কিছু সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই মরছে ভিসি কেন হাসছে?’, ‘আমার ভাই শয্যায় ভিসি কেন ক্ষমতায়?’, ‘দেখ ভিসি চোখ খুলে আমরা গুটিকয়েক নারে’, ‘কুয়েটিয়ানরা দিচ্ছে ডাক, দালাল ভিসি নিপাত যাক’, ‘গদি ধরে মারো টান মাসুদ হবে খান খান’, ‘এক-দুই-তিন-চার ভিসি তুই গদি ছাড়’, ‘আমার ভাই অনশনে ভিসি কেন নিজ আসনে’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
আরো পড়ুন:
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ
কর্তৃপক্ষের আশ্বাস শিক্ষার্থীদের শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার
কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, খুলেছে হল
এদিকে, আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ১০২তম জরুরি সভায় কুয়েটের ৩৭ জন শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টির আবাসিক হলগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে। কুয়েটের উপাচার্যের নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার মো.
গত ১৩ এপ্রিল হল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষ ২ মে হল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। দুই রাত খোলা আকাশের নিচে কাটানোর পর গত ১৫ এপ্রিল ছয়টি হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন ছাত্ররা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ছাত্রীরা তাদের হলের তালা ভেঙে ফেলন। বর্তমানে কুয়েটের সব হলেই শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। ৩৭ জন শিক্ষার্থী ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পদত য গ উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।