আইসিটি খাতের দুর্নীতি তদন্ত ও শ্বেতপত্র প্রণয়নে টাস্কফোর্স গঠন
Published: 24th, April 2025 GMT
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি তদন্তে এবং শ্বেতপত্র প্রণয়নে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
টাস্কফোর্স ও শ্বেতপত্র কমিটি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অর্থনীতিবিদ প্রফেসর নিয়াজ আসাদুল্লাহ। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন, প্রফেসর মুহাম্মদ মুস্তাফা হোসেন, আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার আফজাল জামি সৈয়দ আলী, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মাহমুদ সালাম মারুফ, সাংবাদিক মো.
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি সম্পর্কে গেজেটে বলা হয়, আইসিটি খাতে অনিয়ম এবং অপব্যবস্থাপনার তদন্ত এবং আইসিটি শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে ।
পাশাপাশি বিভাগের বিগত সরকারের সময়ে সম্পাদিত সকল ধরনের চুক্তি এবং প্রকল্পের ডিপিপি, সকল অডিট রিপোর্ট ও তদন্ত প্রতিবেদন খতিয়ে দেখবে এ ট্যাক্সফোর্স ।
‘আইসিটি শ্বেতপত্র টাস্কফোর্স’ সকল প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ এবং বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ২১ জুনের মধ্যে দাখিল করবে; টাস্কফোর্সের সদস্যরা বিধি মোতাবেক সম্মানী, সিটিং এলাউন্স প্রাপ্ত হবেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ টাস্কফোর্সকে লজিস্টিকস ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। বিভাগের উপ-সচিব মো. আবু নাছের টাস্কফোর্সকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে।
টাস্কফোর্স প্রধান প্রফেসর নিয়াজ আসাদুল্লাহ একজন বাংলাদেশি উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করে যুক্তরাজ্যের রিডিং, মালয়েশিয়ায় মোনাশ এবং থাইল্যান্ডের চুলালংকরন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। বর্তমানে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসরিয়াল ফেলো হিসাবে নিয়োজিত আছেন।
কমিটি সদস্য মুহাম্মদ মুস্তাফা হোসেন একজন সেমিকন্ডাক্টর ও আইওটি বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক । তিনি ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস এট অস্টিন থেকে ২০০৫ সালে পিএইচডি করেন।
ব্যারিস্টার আফজাল জামি সৈয়দ আলী ফৌজদারি প্রতিরক্ষা, দেওয়ানি মামলা, পাবলিক আইন এবং আন্তর্জাতিক আইনি পরামর্শে ব্যাপক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং উচ্চ মূল্যের জালিয়াতির বিচারে বিশেষজ্ঞ। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাপলান হলবর্ন কলেজ থেকে এলএলবি এবং যুক্তরাজ্যের উলভার হ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সাংবাদিক মো. শরিয়ত উল্যাহ দৈনিক ইত্তেফাক এবং দৈনিক বণিক বার্তায় প্রযুক্তি প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক আজকের বাংলার পরিকল্পনা সম্পাদক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন ।
গত ১৭ এপ্রিল টাস্কফোর্স গঠনের গেজেট প্রকাশিত হয়।
ঢাকা/হাসান/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ব তপত র তদন ত আইস ট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্তাবিত রাজস্ব নীতি বিভাগে সচিব হিসেবে শুল্ক ও কর কর্মকর্তা পদায়নের দাবি
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশের চূড়ান্ত খসড়ার কিছু অংশে আপত্তি জানিয়ে মতামত দিয়েছে ঢাকার বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন। প্রস্তাবিত রাজস্ব নীতি বিভাগে লোকবল নিয়োগের শর্ত নিয়ে তাদের এই আপত্তি। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এই আপত্তি জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি সাতটি বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদের সভায় রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদিত হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন অধ্যাদেশের যেসব বিষয়ে নিজেদের মতামত দিয়েছে, সেগুলো হলো—এক, বিসিএস (কর) অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্য হতে’ রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব নিয়োগের মতামত প্রদান করেছিল। কিন্তু খসড়ার অনুচ্ছেদে (৪২৩) ‘উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যে কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে’ রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব নিযুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। এতে রাজস্ব নীতি প্রণয়নে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যক্ষভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি মর্মে প্রতীয়মান। রাজস্ব নীতি প্রণয়নে কর রাজস্ব আহরণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রাজস্ব নীতি বিভাগের শীর্ষ পদে পদায়ন করা হলে রাজস্ব বিভাগকে পৃথক করার মূল উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হবে।
দুই, রাজস্ব নীতি বিভাগের মৌলিক পদগুলো বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডার থেকে পূরণের প্রস্তাব করা হলেও খসড়ায় আয়কর, কাস্টমস, ভ্যাট, অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, গবেষণা পরিসংখ্যান, প্রশাসন, নিরীক্ষা, আইনসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা থেকে পূরণের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। রাজস্ব আহরণ, ব্যবস্থাপনা ও নীতি প্রণয়নে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের রাজস্ব নীতি বিভাগে সুনির্দিষ্টভাবে পদায়নের সুযোগ রাখা হয়নি।
তিন, খসড়ার অনুচ্ছেদ ৯-এ রাজস্ব নীতি বিভাগে জনবল পদায়নের সুপারিশের লক্ষ্যে একটি কমিটির কথা উল্লেখ থাকলেও ধারা ৪(৪)–এ এমন কোনো কমিটির উল্লেখ নেই। উক্ত কমিটির গঠন উল্লেখ করা প্রয়োজন।
চার, খসড়ায় রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে কর আইন প্রয়োগ ও কর আহরণ পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ যুক্ত করা হয়েছে। এ বিধান রাখায় নীতি বিভাগকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের কার্যক্রম তদারকির সুযোগ থেকে যায়। এক বিভাগের কার্যক্রম সমমর্যাদাসম্পন্ন অপর বিভাগ কর্তৃক পরিবীক্ষণের বিধান রাখা হলে তা আইনের দৃষ্টিতেও সাংঘর্ষিক বিবেচিত হয়।
পাঁচ, খসড়ার অনুচ্ছেদ ৭(৩)–এ বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের থেকে রাজস্ব আহরণে ন্যূনতম ২০ বছরের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে পালাক্রমে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান—এই ধারা পরিবর্তনে রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদানের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এতে কর-রাজস্ব আহরণে দীর্ঘদিনের অর্জিত বিশেষায়িত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ সীমিত করবে।
ছয়, খসড়ায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদে প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা পদস্থ রয়েছেন, যা তাঁদের নির্ধারিত পদ।
সাত, সরকার গঠিত রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন অন্য সংস্কার কমিশনের মতো জনসমক্ষে প্রকাশ করা সমীচীন বলে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।
এর আগে ২৬ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টিপারপাস হলে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে সভায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাকাএভ) নির্বাহী কমিটির একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।