‘কারাগার’ নির্মাতা শাওকীর সিরিজে শাশ্বত ও চঞ্চল
Published: 25th, April 2025 GMT
‘তাকদীর’ ও ‘কারাগার’ সিরিজ বানিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী। এরপর বেশ খানিকটা বিরতি। ২০২৩ সালে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফিল্ম সিন্ডিকেট সাত সিরিজ ও পাঁচ সিনেমার ঘোষণা দিয়েছিল; যার মধ্যে ছিল নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকীর ওয়েব সিরিজ ‘গুলমোহর’। ঘোষণার পর সিরিজটির আর খবর পাওয়া যায়নি। শুটিং তারিখও পেছানো হয়। এবার সিরিজটির বিষয়ে নতুন খবর জানা গেল। শিগগিরই ওটিটিতে মুক্তি পাচ্ছে এই ‘গোলমোহর’। সিরিজটির মাধ্যমে প্রায় ৩ বছর পর নতুন সিরিজ নিয়ে ফিরছেন শাওকী।
রহস্য সিরিজ ‘গুলমোহর’-এর কাহিনি একটি পরিবার ঘিরে আবর্তিত হবে। বাবার মৃত্যুর পর সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারার মধ্যে পরিবারটিকে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। এর বেশি প্রকাশ করতে চাননি এই নির্মাতা।
শাওকী বলেন, ‘‘আগের দুই সিরিজ দেখে দর্শকের যে প্রত্যাশা, সেগুলো মাথায় রাখিনি। ওগুলো মাথায় রাখলে, আবার আগের কাজের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ওটিটির দর্শকরা বারবার নতুন কিছু দেখতে চায়। ‘গুলমোহর’ সিরিজে নতুন বিষয় নিয়ে ডিল করেছি। পরিবারের চেনা একটা পরিস্থিতি রয়েছে গল্পে। এর সঙ্গে রহস্য, সন্দেহ ও রাজনীতি জড়িয়ে গল্পটি এগিয়ে গেছে।’’
নির্মাতার ভাষ্যে, ‘নির্মাতা হিসেবে গুলমোহর আমার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় স্কেলের কাজ। এমন একটা ফিকশনের জন্য সময়টা দরকার ছিল।’
সিরিজটিতে কারা অভিনয় করেছেন সে বিষয়ে মুখ খোলেননি নির্মাতা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ওয়েব সিরিজ দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো সিরিজে অভিনয় করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। বাংলাদেশের চঞ্চল চৌধুরীও রয়েছেন এতে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, সিরিজটিতে সুষমা সরকার, ইন্তেখাব দিনার, এফএস নাঈম ও সারিকা সাবাহ অভিনয় করেছেন। যদিও অফিসিয়ালি এখনও ঘোষণা আসেনি তাদের বিষয়ে। তবে জোর গুঞ্জন তারাই থাকছেন সিরিজটিতে। শিগগিরই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাবে ‘গুলমোহর’।
‘কথা হবে তো?’ নাটক দিয়ে নিজের দক্ষতার ছাপ রাখা তরুণ নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী ২০২০ সালে ‘তাকদীর’ সিরিজটি দিয়ে বাংলাদেশ তো বটেই ভারতীয় দর্শকের কাছেও প্রশংসা এবং ভালোবাসায় জায়গা করে নেন। এই সিরিজটি পরবর্তী সময়ে তেলেগু ভাষায়ও রিমেক করা হয়। এরপরে ‘কারাগার’ দিয়েও কিস্তি মাত করেছিলেন এ নির্মাতা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জট
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।