নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলায় উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নিহতদের পরিবাররের স্বজনরা ও এলাকাবাসী।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় নিহতদের পরিবাররের স্বজনরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ও বিচার বিভাগের কাছে হত্যাকারীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবী জানান।

মানববন্ধনে স্বামী হত্যার বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে মামলার বাদী ও নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আমরা আমাদের স্বজনদের হারিয়েছি ১১ বছর পার হয়ে গেছে। অথচ এখন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট খুনিদের ফাঁসি দেননি।

বিচার বিভাগ ও অন্তর্র্বতী সরকার প্রধানের কাছে আমাদের একটাই দাবি, অন্তত আমাদের ৭ টা পরিবারের চিন্তা করে বিচার কার্যক্রম শেষ করা হোক। আমি আইন উপদেষ্টার প্রতি আবেদন করছি যে, আমরা ৭টা পরিবার কর্তাহারা হয়েছি।

আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচার কার্যক্রম শেষ করে দ্রুত মামলাটা নিষ্পত্তি করা হোক। আমরা এইটুকু দেখে যেতে চাই।

নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সামছুন নাহার নুপুর বলেন, আমার স্বামীর হত্যার সময়ে আমার মেয়ে গর্ভে ছিল। এখন আমার মেয়ের বয়স ১১ বছর। অথচ এখন পর্যন্ত আমার মেয়ে তার পিতা হত্যার বিচার পায়নি। উচ্চ আদালতে মামলা ঝুলে রয়েছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করছি যে, অন্তত আমাদেরকে এই হত্যার বিচারটা শেষ করে দেওয়া হোক। আমরা অসহায়।

নিহত তাজুলের পিতা আবুল খায়ের বলেন, বিগত ১১ বছর আমরা অপেক্ষা করতে এখন ক্লান্ত হয়ে গেছি। বর্তমান অন্তর্র্ব্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং এটর্নি জেনারেলসহ সকলের কাছে আমাদের আকুল আবেদন এই অপেক্ষার পালা থেকে আমাদের রেহাই দেওয়া হোক। উচ্চ আদালত যেই রায় হয়েছে সেটি দ্রুত কার্যকর করা হোক।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের ভাই সালাম,   মিজানুর রহমান, আহসান উল্লাহ মাষ্টার, খালেক, জালাল উদ্দিন, হারুন, নাসির উদ্দিন ও মাও.

সিহাবসহ প্রমূখ।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।

সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ দুটি মামলার অভিন্ন চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন।

২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি চার্জশিটভুক্ত আসামি নাসিক ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নুর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ৩৫ জনকে দণ্ড প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। এর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

উচ্চ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। বাকী ৯ জনকে দেওয়া কারাদণ্ডের রায় উচ্চ আদালত বহাল রাখেন। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বলে জানা গেছে।

 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ নজর ল ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ন উপদ ষ ট কর র দ ব ক র যকর জন র ম আম দ র পর ব র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সোনারগাঁয়ে বারদী ইউনিয়নের  বারদী নেছারিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় অবৈধ ও নির্বাচন ছাড়া কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উক্ত মাদ্রাসার সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, চারবারের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবক আব্দুর রাজ্জাক, মো. জসিম উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর হোসেনসহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকবৃন্দ।

এসময় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক চারবারের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, অবিভাবক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কমিটি গঠন করেছে যাহা আগামী ২ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে।

এসময় মাদ্রাসার গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক কমিটি ভেঙে দিয়ে পূনরায় সঠিকভাবে কমিটি করে ঘোষণা দেয়ার জন্য জোর দাবী জানান মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রসার একাধিক শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আমরা কোন কথা বলতে পারিনা। কমিটির বিষয়ে উনি নিজে নিজেই সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। আমরা কিছু বলতে গেলে আমাদের চাকরির হুমকি দেন।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমি সবাইকে জানিয়েই কমিটি করেছি, মনগড়া কমিটি করা হয়নি। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি করেছেন জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, আমি এখন অফিসিয়াল কাজে বোর্ড অফিসে ব্যস্ত রয়েছি, এবিষয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে পরে কথা বলবো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন