নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার বিচার ১১ বছরেও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন নিহতদের স্বজন ও আইনজীবীরা। আজ রোববার আলোচিত এই হত্যার ১১ বছর হলো।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন, মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আওলাদ হোসেন, মাহবুবুর রহমান, নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারহানা মানিক প্রমুখ।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাত খুনের ঘটনা নারায়ণগঞ্জের কলঙ্কিত অধ্যায়। আওয়ামী লীগের গডফাদার ও সাবেক সংসদ শামীম ওসমান এবং তাঁর অন্যতম সহযোগী নূর হোসেন বাংলাদেশের একটি প্রশিক্ষিত বাহিনীকে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করান। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেনের (মায়া) জামাতা র‍্যাব-১১–এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) তারেক সাঈদ ও অন্যরা আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট ছিলেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে ৮ বছরেও মামলাটির আপিল নিষ্পত্তি হয়নি। মামলাটি বিলম্বিত করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে মামলাটির শুনানির ব্যবস্থা করে রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।

মামলার বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বলেন, সাত খুনের ফলে সাতটি পরিবার তাদের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর আজ। অথচ এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ঝুলে আছে। দ্রুত রায় কার্যকরে উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁদের সাতজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ওই মামলায় নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন, কমান্ডার এম এম রানা ও সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালত আপিল করে। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট নূর হোসেন, র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখা হয়। বর্তমানে মামলাটি আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ল ইসল ম র সরক র র ক র যকর আইনজ ব আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ শহর শাখা দক্ষিণের আওতাধীন নাসিক ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বাবুরাইল ইউনিট কমিটির পূর্ণাঙ্গ গঠন ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সংগ্রামী মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা রেদোয়ান আহমেদ।

তিনি নবগঠিত কমিটির সদস্যদের শপথ পাঠ করান এবং সংগঠনের লক্ষ্য ও আদর্শ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

শনিবার বিকেলে বাবুরাইল মোবারক শাহ রোডে এক আয়োজনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহর শাখা দক্ষিণের সহ-সভাপতি মুফতি সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন হলো একটি আদর্শিক সংগ্রামের নাম। যারা একবার এই পথ বেছে নিয়েছেন, তাদেরকে ঈমান, তাকওয়া ও সমাজ পরিবর্তনের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহর শাখা দক্ষিণের সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি মোঃ আরিফ উল্লাহ জাদরান, ওয়ার্ড শাখার সভাপতি মোঃ সুলতান মাহমুদ এবং সেক্রেটারি মোঃ ইলিয়াস হোসাইন। অতিথিবৃন্দ নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানান এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা ও কর্মীবান্ধব মনোভাব বজায় রাখার পরামর্শ দেন।

নবগঠিত ইউনিট কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আলহাজ্ব মোঃ সোহেল (সভাপতি), মোঃ নূর আলম (সহ-সভাপতি), মোঃ রিমন (সেক্রেটারি), মোঃ রুবেল (জয়েন্ট সেক্রেটারি), মোঃ কাজী পলাশ (সাংগঠনিক সম্পাদক), মোঃ হাবিব (প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক), মোঃ আবুল বাশার (দফতর সম্পাদক), মোঃ আদনান (অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক), মোঃ শাওন (প্রশিক্ষণ সম্পাদক), মোঃ শহিদুল ইসলাম খোকন (মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক), মোঃ রাকিব (ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক)। কমিটির অন্যান্য সদস্য হিসেবে রয়েছেন মোঃ সাঈদ, মোঃ রোমান, মোঃ জিল্লু ও মোঃ শাহিন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেবল একটি রাজনৈতিক সংগঠন নয়, এটি একটি আদর্শিক বিপ্লবের নাম, যা সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার ও জনসেবামূলক রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বক্তারা নতুন নেতৃত্বকে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ইউনিট পর্যায়ে সংগঠনকে আরও গতিশীল ও জনসম্পৃক্ত করার নির্দেশনা দেন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে সংগঠনের লক্ষ্য ও করণীয় নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয় এবং দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি কি জামায়াতকে চাপে রাখার কৌশলে
  • সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
  • ৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
  • গৃহশ্রমিকদের সাপ্তাহিক ও মাতৃত্বকালীন ছুটি শ্রম আইনে রাখতে হবে
  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর