সাত খুনের মামলার রায় কার্যকরের দাবিতে আইনজীবীদের মানববন্ধন
Published: 27th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলা রায় অবিলম্বে কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আইনজীবী সমাজ। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় আইনজীবী সমাজ, নিহতের পরিবার ও নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানবন্ধনে আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আপনারা জানেন এ মামলার আসামিরা অন্তত প্রভাবশালী। ওই তারেক সাইদ হলো মোফাজ্জল হোসেন মায়ার মেয়ের জামাতা। এবং অন্য অন্যরা আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট ছিল। তারা উচ্চ আদালতে মামলাকে ভিন্ন খেতে প্রবাহিত করে।
আজকে ৫-৬ বছর হয়ে গেল এই মামলার এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আপিল অ্যাপিলেশনে সে মামলাটি দীর্ঘস্থায়ী করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই ৫ই আগস্ট এর মাধ্যমে ওই ফ্যাসিদের পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে অন্তবর্তী সরকার গঠন হয়েছে সেই সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপিল অ্যাপিলেশন ডিভিশনের মাধ্যমে আপনারা মামলাটিকে দ্রুত নিষ্পত্তি করুন।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সোনানীর মাধ্যমে এ রায় কার্যকরের ব্যবস্থা করবেন। এই কার্যকরের মাধ্যমে নিহতদের পরিবারদের যে দাবি তা পূর্ণ করবেন। এই ঘটনার যদি বিচার হয় তাহলে এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে আর পুনরাবৃত্তি হবে না। নারায়ণগঞ্জের ত্বকীসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড.
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ দুটি মামলার অভিন্ন চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি চার্জশিটভুক্ত আসামি নাসিক ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নুর হোসেন, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ৩৫ জনকে দণ্ড প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। এর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
উচ্চ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। বাকী ৯ জনকে দেওয়া কারাদণ্ডের রায় উচ্চ আদালত বহাল রাখেন। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ আইনজ ব ন র য়ণগঞ জ ক র যকর র আইনজ ব জন র ম ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় মানববন্ধন ও মিছিল করেছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। মানববন্ধন শেষে সমাবেশে নিরাপদ ও বাসযোগ্য মোহাম্মদপুর গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার অন্তত ৭০টি কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মোহাম্মদপুর-আদাবরের সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধন শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের মাঠে জড়ো হয়। রোদের মধ্যে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী স্লোগান দেয় তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও সেখানে আসেন।
দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় কলেজের শহীদ মিনারের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শুরু হয়। এতে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে মোহাম্মদপুরকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে চাই। আজকে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে না বলেছে। এভাবে এলাকায় যারা সন্ত্রাসী ও রাহাজানি করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।’
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। তবুও মোহাম্মদপুর সন্ত্রাসী এলাকা, এমন কথা শুনতে হয়। আজকে মাদক আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে। এ দৃষ্টান্ত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক। মোহাম্মদপুর থেকে যাত্রা শুরু হোক মাদক ও সন্ত্রাসকে না বলার।
এ আয়োজনের প্রধান সমন্বয়কারী আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, মোহাম্মদপুর ও আদাবরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও রাজনীতিবিদেরা একসঙ্গে কাজ করলে পরিবর্তন হতে বাধ্য।
সমাবেশ শেষে মিছিল করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এ সময় ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘যে মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক নয়’, ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’, ‘কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানা, মোহাম্মদপুরে হবে না’, ‘চাঁদাবাজের আস্তানা, মোহাম্মদপুরে হবে না’ স্লোগান দেওয়া হয়।
মিছিলটি কেন্দ্রীয় কলেজ থেকে বের হয়ে তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, আসাদ অ্যাভিনিউ, টাউন হল ও শের শাহ সূরী রোড ঘুরে কিশলয় উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।