৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের
Published: 29th, April 2025 GMT
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ইলেকট্রনিক খাতের দেশীয় জায়ান্ট কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটনের ব্যবসা বেড়েছে ৩১২ কোটি টাকা বা সোয়া ৭ শতাংশের বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি ৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।
ব্যবসা বাড়লেও ওয়ালটনের মুনাফা কমে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ওয়ালটনের মুনাফা কমেছে ৬৬ কোটি টাকা বা সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি।
গত রোববার ওয়ালটনের পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানিটির মুনাফার তথ্য গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে কোম্পানিটি।
আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের বছরের চেয়ে ব্যবসা বা আয় বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে মূলত দুই কারণে। প্রথমত, কোম্পানিটির উৎপাদিত পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ আগের বছরের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকঋণের সুদ ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়মূল্যের কারণে আর্থিক খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪১০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে ১১৪ কোটি টাকা বা ২৮ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ওয়ালটনের ব্যাংক সুদ ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত আর্থিক খরচের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৩০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এই খাতে খরচ বেড়েছে ৫৮ কোটি টাকা বা ২৩ শতাংশের বেশি।
আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বা আয় ৩১২ কোটি টাকা বাড়লেও তার বিপরীতে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। একই সময়ের ব্যবধানে এই খরচ বেড়েছে ২১৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার আয়ের বিপরীতে ওয়ালটনের উৎপাদন খরচ ছিল ২ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছর ৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা।
এদিকে ৯ মাসের সমন্বিত আয়-ব্যয়ের হিসাবের পাশাপাশি সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে ওয়ালটন। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি ২ হাজার ৫১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তার বিপরীতে মুনাফা করেছে ৩৯২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ১ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। তার বিপরীতে মুনাফা করেছিল ৪২২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ৩০ কোটি টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর র একই সময় ট ক র ব যবস র ব পর ত খরচ ব ড় পর ম ণ উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল