জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে চলছে শিক্ষক সংকট ও প্রশাসনিক স্থবিরতা। এছাড়া গত ৮ বছর ধরে একই শিক্ষক বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা গত ৮ বছর ধরে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন, যা ২০০৫ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ২৪(২) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আইন অনুযায়ী, বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে পালাক্রমে ৩ বছরের জন্য চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে একই ব্যক্তির দায়িত্ব পালন করায় এর কার্যক্রম ও জবাবদিহিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে চালু হওয়া বিভাগটিতে বর্তমানে ছয়টি ব্যাচে প্রায় ১৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। কিন্তু শিক্ষক রয়েছেন মাত্র নয়জন, এর মধ্যে তিনজন শিক্ষা ছুটিতে রয়েছে। ফলে মাত্র ছয়জন শিক্ষককে এই পুরো বিভাগ সামলাতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষকদের বারবার শিক্ষা ছুটিতে যাওয়া পাঠদানের ধারাবাহিকতা ভেঙে দিচ্ছে এবং একাডেমিক সহায়তায় তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগে নেই সুনির্দিষ্ট ক্লাস রুটিন বা একাডেমিক গাইডলাইন। ফলে সেশনজট তীব্র হয়ে উঠেছে। যেখানে অন্যান্য বিভাগে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে স্নাতকোত্তরের শেষপ্রান্তে, সেখানে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখনো স্নাতক সম্পন্ন করতে পারেনি। এমনকি ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স এখনও চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিভাগের সবচেয়ে বড় সমস্যা নেতৃত্বের অভাব। চেয়ারম্যান বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সময় দিতে পারেন না। পক্ষপাতমূলক আচরণও চোখে পড়ার মতো।”


এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড.

লাইসা আহমদ লিসা বলেন, “আপনি আমাদের বিভাগের অফিসে কথা বলুন। সেখান থেকে সব জানতে পারবেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “সমস্যা সম্পর্কে আমরা জানি। শিক্ষক সংকট রয়েছে। তবে নিয়োগ দিতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন পেলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সহ-সভাপতি এবং খ্যাতিমান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। তিনি ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক, আনন্দধ্বনীর সদস্য এবং জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড (২০০৭) এবং বাংলা একাডেমির ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ (২০২৪) লাভ করেছেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি