জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
Published: 30th, April 2025 GMT
রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা প্রণব মজুমদার (৫৯) বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে সূত্রাপুর থানা মামলা করেন। মামলায় ইয়াছিন মজুমদার (২৩) নামের এক তরুণকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ বুধবার সূত্রাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। নিহত শিক্ষার্থী হলেন প্রত্যাশা মজুমদার অথৈ।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, ‘ইয়াছিন মজুমদার দীর্ঘদিন ধরে অথৈকে উত্যক্ত করছিল। স্কুলজীবনে তাদের মধ্যে পরিচয় ছিল। আমার মেয়ে ঢাকা চলে এলে ইয়াছিন তাকে অনুসরণ করে ঢাকায় আসে এবং লালবাগ থানা এলাকায় জমিদারী ভোজ নামক রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের চাকরি নেয়। সে আগের মতো আমার মেয়েকে উত্যক্ত করতে থাকে। পরবর্তীতে ইয়াছিন কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। একপর্যায়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত উৎসবের অনুশীলন শেষে মেসে ফেরার পথে ইয়াসিন অথৈকে গালমন্দ করে ও উৎসবে অংশ না নিতে চাপ দেয়। পরে তার (অথৈ) রুমের দরজা ভেঙে তাকে অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার। মেসের মালিকের স্ত্রী মোসা.
এজাহারে নিহতের বাবা প্রণব মজুমদার বলেন, ‘আমার ধারণা, বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের সহপাঠীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ছুটে আসি।’
এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ওসি বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। কোর্টে চালান দিয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘মেয়ের বাবার মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশাসনকে বলেছি, আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’