সাতক্ষীরায় জেলি পুশ করা ৩০০ কেজি চিংড়ি জব্দ, জরিমানা
Published: 2nd, May 2025 GMT
সাতক্ষীরায় ক্ষতিকর জেলি বা অপদ্রব্য পুশ করা ৩০০ কেজি বাগদা ও গলদা চিংড়ি জব্দ করেছে বিজিবি। এসময় জেলি পুশের অপরাধে চার ব্যবসায়ীকে ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ মে) সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আশরাফুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে শহরের আলিয়া মাদ্রাসার মোড়ে অভিযান চালিয়ে জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি পিকআপ থেকে ৯০০ কেজি বাগদা ও গলদা চিংড়ি জব্দ করা হয়। পরে জব্দ করা চিংড়ি সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এবং বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত পর্ষদ সরেজমিনে পরীক্ষা করেন। এসময় ৩০০ কেজি চিংড়িতে ক্ষতিকর জেলি বা অপদ্রব্য পাওয়া যায়।
চিংড়িতে ক্ষতিকর দ্রব্য পুশ করার অপরাধে মৎস্য ব্যবসায়ী জয়দেব মন্ডলকে ২৪ হাজার টাকা, আনন্দ মিস্ত্রিকে ১০ হাজার টাকা, রবিন সর্দারকে ১০ হাজার টাকা এবং আনিসুর রহমানকে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া, জেলি পুশ করা চিংড়ি পুড়িয়ে ধ্বংস ও বাকি ৬০০ কেজি চিংড়ি ব্যবসায়ীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস