নাগরিকদের প্রথমে ট্যাক্স (কর) পরিশোধ করে পরে সামাজিক খাত এবং জনকল্যাণে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

ট্যাক্স দেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্যাক্স দেওয়ার পর যেটা থাকবে, সেটা দিয়ে এবার চিন্তা করবেন জনকল্যাণে কত ব্যয় করবেন এবং নিজের জন্য কত ব্যয় করবেন এবং কত টাকা সঞ্চয় করবেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত ‘গুণীজন সম্মাননা ও বর্ষবরণ ১৪৩২’ অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে তাঁকে লক্ষ্মীপুর জেলার কৃতী সন্তান হিসেবে গুণীজন সংবর্ধনা দেয় ‘লক্ষ্মীপুর জেলা যুব কল্যাণ সমিতি, ঢাকা।’

মো.

আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের দেশের জনগণ অনেকে মনে করেন সামাজিক খাতে ব্যয়ের পর, জাকাত-সদকা দেওয়ার পর কর দিতে হয় না।’

রাজস্ব আহরণের ভঙ্গুর ব্যবস্থা তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এদিক থেকে অনেক পেছনে আছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনো গরিব জনগণ থেকে কর নিই, আমাদের মোট করের দুই–তৃতীয়াংশ এখনো গরিবদের থেকে আদায় হয় ‘পরোক্ষ করের’ মাধ্যমে। আয়কর থেকে আমরা মাত্র এক–তৃতীয়াংশ আদায় করতে পারি। এই জায়গাগুলোতে আমাদের প্রচুর কাজ করার সুযোগ আছে।’

সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করে আমরা একটা উন্নত জাতি প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের যাতে ঋণ করতে না হয়, আমরা যাতে নিজের টাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি চালাতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি।’

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহীনুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান (বিটিএ) মো. শাহীন আহমেদ, লক্ষ্মীপুর জেলা সমিতি, ঢাকার সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, গ্রেট ওয়াল সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামছুল হুদা, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরীকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র ক জ কর করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত সরকার না হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। সবাই একটা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘রংপুর বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের রাজনৈতিক অধিকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আমীর খসরু এ কথা বলেন।

রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে চেম্বার ভবনে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশ থেকে যারা আসে তারা আমাদের জিজ্ঞেস করে, আপনাদের নির্বাচনটা কবে হবে। সব কথা শোনে, শোনার পর বলে, নির্বাচন কবে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এত বড় কমিটমেন্টে কেউ যাবে না। তাদের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বিনিয়োগ করে। এটা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। সুতরাং সবাই বসে আছে হাত গুটিয়ে। সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য।’

‘এক একটা দিন আমরা নষ্ট করছি ও পিছিয়ে যাচ্ছি’—এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছি। এখন সবাইকে শক্তিশালীভাবে বলতে হবে, আমরা নির্বাচিত সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধ। এর বাইরে অন্য কোনো সরকারের জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ হলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। যে কারণে কেউ কাজ করছে না। পুলিশ কাজ করছে না, সরকারি কর্মকর্তারা কাজ করছে না। কোনো জায়গায় কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে না, হবে না।’

নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের মালিকানার প্রতিফলন ঘটাতে যার জন্য গত ১৭ বছর যুদ্ধ করেছি। ‎শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের রাজনীতিতে একটি মানসিক পরিবর্তন এসেছে। এখন আমাদের প্রত্যাশা ও দায়িত্ব বাড়ছে। আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তবে জনগণের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করব।’

রংপুরের অর্থনীতি প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রংপুরের হস্ত ও তাঁতশিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। কামারের পণ্য রপ্তানিযোগ্য হলেও তা রপ্তানি হচ্ছে না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমাদের লক্ষ্য রংপুরে কলকারখানা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় উদ্যোক্তা তৈরি করা। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে উদ্যোক্তাদের আর্থিক সুবিধা ও কাঁচামাল সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিদেশে সোনার অলংকার রপ্তানি এবং ডায়মন্ড কাটিং সেক্টরেও কাজ করার পরিকল্পনা আছে।’

রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এমদাদুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন হায়দারসহ বিএনপির স্থানীয় নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া সভায় রংপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন। রংপুরের পিছিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙা করতে করণীয়, শিল্প-বাণিজ্য প্রসার, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তি অবিলম্বে প্রকাশের দাবি সিপিবির
  • ১৬ বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরে ঘুমাতে পারেনি: নিপুণ রায়
  • বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • জুলাই যোদ্ধাদের মারামারি আমাদের ব্যথিত করে: এ্যানি
  • জুলাই ঘোষণাপত্র আসছে, উপদেষ্টা আসিফের ফেসবুক পোস্ট
  • রোকেয়া হল ও একটি চিঠি 
  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • ভারতের কাছে তেল বিক্রি করতে পারে পাকিস্তান, খোঁচা দিলেন ট্রাম্প