প্রথমে ‘ট্যাক্স’ দিয়ে পরে অন্যান্য ব্যয় করার পরামর্শ এনবিআর চেয়ারম্যানের
Published: 3rd, May 2025 GMT
নাগরিকদের প্রথমে ট্যাক্স (কর) পরিশোধ করে পরে সামাজিক খাত এবং জনকল্যাণে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
ট্যাক্স দেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্যাক্স দেওয়ার পর যেটা থাকবে, সেটা দিয়ে এবার চিন্তা করবেন জনকল্যাণে কত ব্যয় করবেন এবং নিজের জন্য কত ব্যয় করবেন এবং কত টাকা সঞ্চয় করবেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত ‘গুণীজন সম্মাননা ও বর্ষবরণ ১৪৩২’ অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে তাঁকে লক্ষ্মীপুর জেলার কৃতী সন্তান হিসেবে গুণীজন সংবর্ধনা দেয় ‘লক্ষ্মীপুর জেলা যুব কল্যাণ সমিতি, ঢাকা।’
মো.
রাজস্ব আহরণের ভঙ্গুর ব্যবস্থা তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এদিক থেকে অনেক পেছনে আছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনো গরিব জনগণ থেকে কর নিই, আমাদের মোট করের দুই–তৃতীয়াংশ এখনো গরিবদের থেকে আদায় হয় ‘পরোক্ষ করের’ মাধ্যমে। আয়কর থেকে আমরা মাত্র এক–তৃতীয়াংশ আদায় করতে পারি। এই জায়গাগুলোতে আমাদের প্রচুর কাজ করার সুযোগ আছে।’
সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করে আমরা একটা উন্নত জাতি প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের যাতে ঋণ করতে না হয়, আমরা যাতে নিজের টাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি চালাতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি।’
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহীনুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান (বিটিএ) মো. শাহীন আহমেদ, লক্ষ্মীপুর জেলা সমিতি, ঢাকার সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, গ্রেট ওয়াল সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামছুল হুদা, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরীকে গুণীজন হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র ক জ কর করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।