ঢাকার ধামরাইয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই ছুটিতে থাকা বিমান বাহিনীর এক সদস্যকে হাতকড়া পরিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিবাদ করায় তার মা-বাবা ও স্ত্রীকেও মারধর করেন দুই এএসআই। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিমান বাহিনীর সদস্য জসিম উদ্দিন শুক্রবার ধামরাই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। শনিবার অভিযুক্ত দুই এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী ও সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় ধামরাই থানার এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানসহ চারজন পুলিশ সদস্য উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পাবরাইল গ্রামে ছুটিতে থাকা বিমান বাহিনীর সদস্য (কর্পোরাল) জসিম উদ্দিনের বাড়িতে যায়। এ সময় এএসআই সেলিম ওয়ারেন্ট আছে বলে জসিম উদ্দিনকে হাতকড়া পরিয়ে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে পেটান। এ সময় জসিম উদ্দিন নিজেকে বিমান বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেন এবং ওয়ারেন্ট দেখাতে বললেও তার কথা শোনেননি ওই এএসআই। একপর্যায় মারধরের প্রতিবাদ করতে যান জসিম উদ্দিনের মা সুফিয়া বেগম, বাবা আক্কাস আলী ও স্ত্রী জিয়াসমিন। ওই সময় পুলিশ সদস্যরা তাদেরকেও মারধর করেন। এরপর এএসআই সেলিম থানায় ফোন করে জানতে পারেন জসিম উদ্দিনের নামে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। পরে খবর পেয়ে কাওয়ালিপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই অমল কুমার রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে জসিম উদ্দিনের হাতকড়া খুলে দেন। তখন এএসআই সেলিম, এএসআই শহীদুর রহমান বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানানোর অনুরোধ করে জসিম উদ্দিনের কাছে ক্ষমা চান। 
এ ঘটনায় শুক্রবার জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে এএসআই সেলিমসহ চারজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। শনিবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা করা হয়েছে। 

অভিযুক্ত এএসআই সেলিম বিমান বাহিনীর সদস্য জসিম উদ্দিন ও তার মা-বাবা এবং স্ত্রীকে মারধর করার কথা অস্বীকার করেন। 

এবিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্ত এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানকে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি আরও তদন্ত করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর ব ম ন ব হ ন র সদস য ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে হেনস্তার শিকার পুলিশ 

ঢাকার ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যদিও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির পরিবারের সদস্যদের দাবি, তারা পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। এমনকি মারধরের অভিযোগও করেন তারা। 

এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে পরিবারের এক সদস্য। ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (৪ মে) ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পাবরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

হেনস্তার শিকার দুই পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমান। তারা ধামরাই থানায় কর্মরত ছিলেন। তাদের থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্যরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মো. সুমন নামে সিআর মামলায় (২৩৭/২৪) ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি ধরতে পাবরাইল এলাকায় একটি বাড়িতে যায় পুলিশের দুইজন এএসআই ও দুইজন কনস্টেবল। সেখানে আসামির বাড়িতে থাকা এক ব্যক্তি পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যদের দেখে সন্দেহজনকভাবে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় এএসআই সেলিম তাকে ধরার চেষ্টা করেন। তবে ওই ব্যক্তি সেলিমকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। 

একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবল তাকে আটক করে হাতকড়া পরান। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। আটকের পরিবারের সদস্যরাও পুলিশকে কিল-ঘুষি দেন। এসময় আটককৃত ব্যক্তি নিজেকে বিমানবাহিনীর কর্পোরাল পরিচয় দেন। এরপর তাৎক্ষণিক তার হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সেখান থেকে চলে যান। এরমধ্যে হাতকড়া পরানোর কারণে তারা তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে। ধস্তাধস্তিতে চার পুলিশ সদস্যই শরীরে আঘাত পান।

এদিকে এ ঘটনার জেরে জসীম উদ্দিন নামে ওই বিমান বাহিনির সদস্য ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।

সাধারণ ডায়রিতে তার দাবি, পুলিশ সদস্যরা তার বাড়ি এসে তাকে উঠানে ডেকে নিয়ে হাতে হাতকড়া পরায় ও রাস্তার দিকে টানতে থাকে। এসময় পুলিশ সদস্যদের দেখে তিনি নিজের পরিচয় দেন ও তার স্ত্রী বিমানবাহিনীর পরিচয়পত্র দেখান। তবে পুলিশ সদস্যরা সেই পরিচয়পত্র ছুড়ে ফেলে। এএসআই সেলিম তার স্ত্রীকে চুলের মুঠি ধরে টেনে পেছনে কয়েকটি লাথি মারে। এরপর তাকে টেনে এনে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শুকনা ভুট্টা গাছের স্তুপের ওপর ফেলে দেয়। তার লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ করে লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করে। এতে তার মুখে রক্তাক্ত জখম হয়। 

ঘটনার শুরু থেকে একাধিকবার তিনি পরোয়ানা আছে কিনা জানতে চাইলেও পুলিশ কোনো পরোয়ানা দেখায়নি। তার পিতা আক্কাছ আলী এগিয়ে এলে তাকেও পুলিশ মারধর করে বলে অভিযোগে লেখা হয়েছে। পরবর্তীতে এএসআই সেলিম তার ফোনে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, “ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি পেয়ে এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে তিনি এএসআই সেলমিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তখন পুলিশের অন্য সদস্যরা আটক করে হ্যান্ডকাফ পরালে তিনি নিবৃত হন। 

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের নাম জসিম ও বিমান বাহিনিতে কর্মরত বলে জানান। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি তারই আপন ভাই। পরিচয় পেয়ে তার হ্যান্ডকাফ খুলে দেওয়া হয়। সেখানে অন্য কাউকে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই পুলিশ সদস্যকে জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত করা হবে। এরপর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/আরিফুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধামরাইয়ে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে হেনস্তার শিকার পুলিশ