বিমান বাহিনীর সদস্যকে মারধরের অভিযোগ ২ এএসআইয়ের বিরুদ্ধে, বাদ যাননি মা-বাবা-স্ত্রীও
Published: 3rd, May 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই ছুটিতে থাকা বিমান বাহিনীর এক সদস্যকে হাতকড়া পরিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিবাদ করায় তার মা-বাবা ও স্ত্রীকেও মারধর করেন দুই এএসআই। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিমান বাহিনীর সদস্য জসিম উদ্দিন শুক্রবার ধামরাই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। শনিবার অভিযুক্ত দুই এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী ও সাধারণ ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় ধামরাই থানার এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানসহ চারজন পুলিশ সদস্য উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পাবরাইল গ্রামে ছুটিতে থাকা বিমান বাহিনীর সদস্য (কর্পোরাল) জসিম উদ্দিনের বাড়িতে যায়। এ সময় এএসআই সেলিম ওয়ারেন্ট আছে বলে জসিম উদ্দিনকে হাতকড়া পরিয়ে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে পেটান। এ সময় জসিম উদ্দিন নিজেকে বিমান বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেন এবং ওয়ারেন্ট দেখাতে বললেও তার কথা শোনেননি ওই এএসআই। একপর্যায় মারধরের প্রতিবাদ করতে যান জসিম উদ্দিনের মা সুফিয়া বেগম, বাবা আক্কাস আলী ও স্ত্রী জিয়াসমিন। ওই সময় পুলিশ সদস্যরা তাদেরকেও মারধর করেন। এরপর এএসআই সেলিম থানায় ফোন করে জানতে পারেন জসিম উদ্দিনের নামে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। পরে খবর পেয়ে কাওয়ালিপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই অমল কুমার রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে জসিম উদ্দিনের হাতকড়া খুলে দেন। তখন এএসআই সেলিম, এএসআই শহীদুর রহমান বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানানোর অনুরোধ করে জসিম উদ্দিনের কাছে ক্ষমা চান।
এ ঘটনায় শুক্রবার জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে এএসআই সেলিমসহ চারজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। শনিবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা করা হয়েছে।
অভিযুক্ত এএসআই সেলিম বিমান বাহিনীর সদস্য জসিম উদ্দিন ও তার মা-বাবা এবং স্ত্রীকে মারধর করার কথা অস্বীকার করেন।
এবিষয়ে ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্ত এএসআই সেলিম ও শহীদুর রহমানকে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি আরও তদন্ত করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর ব ম ন ব হ ন র সদস য ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
চবির বিশেষ ভোজের টোকেনে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ‘অতিথি’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আবাসিকদের শিক্ষার্থী বলা হচ্ছে এবং অনাবাসিকদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, আবাসিকদের জন্য টাকার পরিমাণ কম ধরলেও অনাবাসিকদের জন্য বেশি ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ফরহাদ হোসেন হলে উন্নত ভোজের টোকেন আবাসিকদের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। অপরদিকে, অতিথিদের জন্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা; এই অতিথিরা হলেন হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। শামসুন নাহার হলে আবাসিকদের জন্য ৮০ টাকা, অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা। মিল পদ্ধতি চালু থাকা আমানত হলে আবাসিকদের জন্য ফ্রি হলেও অনাবাসিকদের জন্য ৭০ টাকা। তবে সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্যই ১৫৫ টাকা ধরা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন
চবিতে বিপ্লবী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ
এদিকে, বিজয়-২৪ হলের প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্য ৮০ টাকা উল্লেখ করলেও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থার কথা জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিফ মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের ফিস্ট নিয়ে হলে হলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে, সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক আলাদা করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, প্রশাসনদের ছাত্র বা সন্তান কি শুধু আবাসিকরা? আমরা যারা অনাবাসিক, তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ে এসেছি?”
তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা আমাদের হলে সিট দিতে পারেননি, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয় বন্ধ করুন। আয়োজন করলে সবার জন্য সমান করে আয়োজন করুন। আর সেটা না পারলে আয়োজন বন্ধ করুন।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম শাহ ফেসবুকে লেখেন, “কোনো একটা বিশেষ দিন এলেই দেখা যায়, হল প্রশাসনগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দাঁড় করানোর ভণ্ডামি। ৫ তারিখে আয়োজনকে ঘিরে তারা আবার সেই অতিথি টার্ম সামনে নিয়ে আসছে। ফরহাদ হলে অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজনের টোকেন আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা এবং অতিথিদের জন্য ১৭০ টাকা। বাকি হলগুলোতে বোধহয় তাই করেছে। কিন্তু এই অতিথিগুলোও তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।”
তিনি বলেন, “বাহির থেকে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসবে, তাদের থেকে ৭০ টাকা করে বেশি না নিলে তো হল প্রশাসন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে না। আর আপনাদের যদি সামর্থ্য নাই থাকে, কাউকেই খাওয়ায়েন না। কিন্তু ৫ আগস্টের দিনকে কেন্দ্র করে করা অনুষ্ঠানে প্রিভিলেজড-আনপ্রিভিলেজড বিষয়টা জিইয়ে রাখাটা নিতান্ত নোংরামি লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত।”
এ বিষয়ে শহিদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “এ সিদ্ধান্তটি শুধু ফরহাদ হলের জন্য নয়, অন্যান্য হলেও এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। মূলত উন্নত ভোজের আয়োজনটি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে। তারপরেও কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী বা কারো বন্ধুবান্ধব অংশ নিতে চাইলে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে সব হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী