১৫ বছর, ৬ ফাইনাল ও ৬৯৪ ম্যাচ অপেক্ষার পর কেইনের শিরোপা, যেভাবে করলেন উদ্যাপন
Published: 5th, May 2025 GMT
১৩ বছর ছিলেন টটেনহামে এবং ইংল্যান্ডের হয়ে খেলছেন ১০ বছর ধরে। এর মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসেবেও। কারও কারও কাছে হ্যারি কেইন এবং গোল করাও হয়ে উঠেছে সমার্থক।
কিন্তু এত কিছুর পরও কেইনের ক্যারিয়ার যেন হাহাকারের গল্প। সবকিছু করেও যে নামের পাশে ছিল না কোনো শিরোপা। সেই শিরোপা–খরা কাটাতে কেইন যান বায়ার্ন মিউনিখে, দুই মৌসুম আগে।
যা কিছুই হোক, মৌসুম শেষে কোনো না কোনো ট্রফি বায়ার্নের হাতে থাকেই। কিন্তু কেইন যাওয়ার পর বায়ার্নের প্রথম বছরটা কাটল অদ্ভুত এক শিরোপা–খরায়। ‘ডালভাত’ হয়ে যাওয়া বুন্দেসলিগা শিরোপাসহ সব শিরোপাই হাতছাড়া করল মিউনিখের ক্লাবটি। বায়ার্নের শিরোপা জিততে না পারার দায়ও এরপর এসে পড়ল কেইনের কাঁধে। বলা হলো, ‘অভাগা যেদিকে যায়, সাগর শুকিয়ে যায়।’
অভাগা কেইনের কারণেই বায়ার্ন হারিয়েছে শিরোপা—এমন অপবাদের বোঝা কাঁধে নিয়েই চলতি মৌসুমটা শুরু করেছিলেন কেইন। আর মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই গতকাল রাতে নিশ্চিত হলো কেইনের প্রথম শিরোপা। ১৫ বছর, ৬ ফাইনাল, ৬৯৪ ম্যাচ এবং ৪৪৭ গোলের পর অবশেষে কেইন জিতলেন একটা ট্রফি!
আরও পড়ুনঅবশেষে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হ্যারি কেইন১০ ঘণ্টা আগেএবারও অবশ্য শিরোপাটা সহজে পাননি কেইন। বায়ার্নের ট্রফি নিশ্চিত হতে পারত গত সপ্তাহেই। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী লেভারকুসেন না হারায় নিশ্চিত হয়নি শিরোপা জয়। এরপর গত শনিবার রাতেও স্ট্যান্ডে বসে শিরোপা জয়ের অপেক্ষায় ছিলেন কেইন।
কিন্তু ২–০ গোলে পিছিয়ে পড়া বায়ার্ন সেদিন ঘুরে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি। শেষ মিনিটে গোল খেয়ে ম্যাচ ড্র করেছে ৩–৩ গোলে। ফলে আবারও পেছাল কেইনের উদ্যাপন। গতকাল রাতেও মনে হচ্ছিল আবার হয়তো পেছাবে শিরোপা জয়। ২–০ গোলে পিছিয়ে পড়া লেভারকুসেন একপর্যায়ে ২–২ গোলে সমতা ফেরায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয়সূচক গোলটি আর পায়নি তারা। আর লেভারকুসেনের গোল না পাওয়ায় নিশ্চিত হয় কেইনের ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রফি।
সতীর্থদের সঙ্গে কেইনের উদ্যাপন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ইন র ক
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।