যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধে দেশটির সরকারের পরিকল্পনা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করেছেন দেশটির আদালত। আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরের একটি আদালত এ আদেশ দেন। বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজই মামলা করেছিল হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ।

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের মামলায় বলা হয়, কলমের এক খোঁচায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক–চতুর্থাংশ শিক্ষার্থীকে ‘মুছে’ ফেলতে চাইছে সরকার। বিদেশি এই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টি এবং এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দিয়ে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া নিজেদের ভর্তি ও নিয়োগ–সংক্রান্ত চর্চায় পরিবর্তন এনেছে তারা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ বলে একটি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। সংখ্যাটি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশের বেশি।

হার্ভার্ডের করা মামলার প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের উপ–প্রেস সচিব অ্যাবিগালি জ্যাকসন বলেছেন, হার্ভার্ড যদি তাদের ক্যাম্পাসে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী, ইহুদিবিদ্বেষী ও সন্ত্রাসবাদপন্থী উসকানিদাতাদের রুখতে গুরুত্ব দিত, তাহলে তারা শুরুতেই এমন পরিস্থিতিতে পড়ত না। অর্থহীন মামলা করার চেয়ে তাদের এখন ক্যাম্পসের পরিবেশ নিরাপদ করার দিকে নজর দেওয়া উচিত।

আরও পড়ুনট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় হার্ভার্ডপড়ুয়া বেলজিয়ামের হবু রানি এলিজাবেথের কী হবে৪ ঘণ্টা আগে

বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন এ পদক্ষেপের আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া ফেডারেল সরকারের তহবিলে কাটছাঁট শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্ববিদ্যালয়টি বৈষম্যমূলক ‘গভীর সমস্যায়’ জর্জরিত উল্লেখ করে এরই মধ্যে তাদের ২৬৫ কোটি ডলারের তহবিল কমিয়েছে তাঁর প্রশাসন। ওই বিষয়ও আদালতে তুলেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বনাম আহমদ ছফার গাভী বিত্তান্ত২৯ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

পুরান ঢাকার নৃশংস হত্যা: দ্রুত বিচারের দাবিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাজধানীর পুরান ঢাকার সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেট এলাকায় আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘটনার বিচার ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে’ করার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি দেশে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের শক্ত পদক্ষেপও দাবি করেন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

এরপর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে একটি মিছিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা প্রদক্ষিণ করে এনএসইউর ১ নম্বর গেট এলাকায় এসে শেষ হয়। এ সময় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে, ‘চব্বিশের বাংলায়, চাঁদবাজের ঠাঁই নাই’, ‘যুবদল খুন করে, ইন্টেরিম কী করে’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘যুবদলের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘চাঁদাবাজের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ বেহেস্তি বলেন, ‘মূলত আমরা ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে আজকের এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছি। আমরা শেখ হাসিনার সময়ে এসব বর্বরোচিত ঘটনা ঘটতে দেখেছি, ২৪–পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারের কাছে আমাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার নিয়ে নিশ্চিত করা, না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর ১১ মাস পার হয়ে গেছে, এরপরও দেশে এমন ঘটনা ঘটছে। সরকার কী করছে, কতটুকু সংস্কার করছে, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে। আমরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানাবো, এ ঘটনাটি “দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে” নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে বিচার শেষ করার জন্য।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ