কলেজ ভর্তির জন্য ১৩ ঘণ্টার এ পরীক্ষার নাম সুনুং

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সৌন্দর্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় লাগানো হয়েছে ফুল-ফলের গাছ। মহাসড়কের বিভাজকে এসব গাছ লাগানোর আরেকটি বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে, এক লেনের গাড়ির হেডলাইটের আলো যেন অন্য লেনের গাড়ির চালককে বিভ্রান্ত করতে না পারে, কারণ এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। দুঃখজনক হচ্ছে, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় মহাসড়কের একাংশে সবজি চাষের নামে সেখানকার অর্ধশতাধিক বকুলগাছ নিধন করেছেন এক ব্যক্তি। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মহাসড়কটি ২০১৬ সালে চার লেনে রূপান্তর করার পর সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি গাড়ির হেডলাইটের আলো নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভাজকের ওপর লাগানো হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এর মধ্য রয়েছে বকুল, কাঞ্চন, করবী, গন্ধরাজ, রাধাচূড়া, হৈমন্তী, টগর, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, কদম, পলাশসহ নানা ফুলের গাছ। এ রকম ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে অর্ধলক্ষাধিক। এ ছাড়া সড়কের পাশে ও বিভাজকের ওপর লাগানো হয়েছে জলপাই, অর্জুন, কাঁঠাল, মেহগনি, শিশু, আকাশমণি, নিম, একাশিয়া, হরীতকীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৪০ হাজারের বেশি গাছ। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী এলাকাটি বকুলগাছে সাজানো হয়েছে। গাছগুলো পুরো এলাকাটিকে ফুলে ফুলে সৌন্দর্যের শোভা বাড়িয়ে তুলত। কিন্তু মহাসড়কের পাশের এক চায়ের দোকানি বকুলগাছগুলো কেটে ফেলেন।

অভিযুক্ত মো. আজমির হোসেনের মধ্যে এ নিয়ে ন্যূনতম অনুশোচনাও দেখা যায়নি। বরং গাছগুলো কাটা নিয়ে তাঁর নির্লিপ্ত স্বীকারোক্তি হচ্ছে, ‘ডিভাইডারের এই গাছগুলো আবর্জনার মতো লাগে, কোনো কামের না। এর লাইগ্যা কাইট্টা ফালাইছি। এইখানে এখন কলা, কাঁঠাল, আম, পেঁপেগাছ লাগাইতেছি। আর জায়গাটার মধ্যে শাকসবজির চাষ করমু।’ তিনি শুধু গাছই কাটেননি, সেগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে লাকড়ির জন্য ব্যবহারও করেছেন। এই ধ্বংসাত্মক কাজকে তিনি ‘ভালো কাজ’ হিসেবে আখ্যায়িতও করেছেন। পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে আমাদের সমাজে সচেতনতার চরম ঘাটতির বিষয়টি এর মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হয়।

সড়ক বিভাজকের জায়গাটি কোনোভাবেই শাকসবজি চাষের জায়গা নয়। সরকারি সম্পদ দখল করে তিনি এ কাজ করতেও পারেন না। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করতে গিয়ে পরিবেশের প্রতি ধ্বংসাত্মক আরেকটি কর্মকাণ্ড করে বসলেন। এখানে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অবহেলা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, কয়েক মাস ধরে একটু একটু করে কেটে বা আগুন লাগিয়ে গাছগুলো মারা হচ্ছিল। অথচ সওজ কর্তৃপক্ষের বিষয়টি চোখেই পড়ল না। এটি চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয়। অভিযুক্ত আজমির হোসেনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এমন কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তি না হলে মহাসড়কের গাছগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না। ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় আবারও গাছ লাগানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ