বিশ্বসুন্দরীর খেতাব জয়ের জন্য ১২০ দেশের সুন্দরীরা ভারতের হায়দরাবাদে জড়ো হয়েছেন। কারণ সেখানে বসেছে বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা মিস ওয়ার্ল্ডের ৭২তম আসর। গুরুতর অভিযোগ এনে এ আসর থেকে বেরিয়ে গেছেন যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি মিলা ম্যাগি। ফলে বিষয়টি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

মিস ওয়ার্ল্ডের মতো আসরে কী এমন ঘটেছে, যার জন্য প্রতিযোগিতা থেকেই নিজেকে প্রত্যাহার করলেন ২৪ বছরের মিলা? এ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। তার এ আলাপচারিতায় উঠে এসেছে অপ্রত্যাশিত কিছু বিষয়।

হায়দরাবাদে বিলাসবহুল ডিনারে ধনী পুরুষদের (স্পন্সর) আপ্যায়নের জন্য তাদের (প্রতিযোগিদের) ব্যবহার করা হতো। এ তথ্য উল্লেখ করে মিলা ম্যাগি বলেন, “ছয়জন অতিথি (পুরুষ)। তাদের প্রত্যেক টেবিলে দুজন করে মেয়ে ছিল। আশা করা হয়েছিল, আমরা পুরো সন্ধ্যা তাদের সঙ্গে বসে কাটাব। তাদের ধন্যবাদ জানাব। আমার কাছে এটি অবিশ্বাস্য একটি ব্যাপার মনে হয়েছে।”  

আরো পড়ুন:

মধুবালার প্রেমে পড়েছিলেন পাকিস্তানের যে প্রেসিডেন্ট

ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের পরিচয়পত্র পেশ

মিলা ম্যাগি পরিষ্কারভাবে বলেন, “মনে আছে, আমি ভেবেছিলাম— ‘এটা খুবই ভুল।’ আমি এখানে মানুষকে বিনোদন দিতে আসিনি।”

তার টেবিলের পুরুষ অতিথিরা তাকে অস্বস্তিতে ফেলেন। তা জানিয়ে মিলা ম্যাগি বলেন, “একপর্যায়ে যে বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম, তা শুনতে টেবিলে থাকা পুরুষেরা আগ্রহী ছিলেন না। বরং অদ্ভুত রকমের ছোট ছোট কথাবার্তা বলছিলেন, যা আমাকে অস্বস্তি দেয়।”

খানিকটা ব্যাখ্যা করে মিলা ম্যাগি বলেন, “পরিস্থিতি এমন করেছিলেন যে, নিজেকে পতিতা মনে হচ্ছিল। ১০ লাখ বছরেও নিজেকে এমন পরিস্থিতিতে খুঁজে পাব এমনটা আশা করি না। এসব লোকদের খুশি করার জন্য, বানরের মতো পারফর্ম করতে সেখানে ছিলাম। আমি এটা মেনে নিতে পারিনি।”

মিলা এসব অভিযোগ করার পর মিস ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান ও সিইও জুলিয়া মোরলে সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “মিলা তার বসকে বলেছেন, ‘তার মা শারীরিকভাবে অসুস্থ।’ সহানুভূতি দেখিয়ে তারা তাকে ইংল্যান্ডে ফেরার ব্যবস্থা করেছেন।”

জুলিয়ার এই বক্তব্যের জবাবে মিলা ম্যাগি বলেন, “আমার মা স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন এটা ঠিক। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কারণ যা বলার ছিল তা আমি বলেছি।”

“আমাদের সঙ্গে যে ভয়াবহ আচরণ করা হয়েছে, তারপর আমি কেবল বাড়ি ফেরার প্রয়োজন বোধ করেছি। আমি এমন একটি প্রতিযোগিতায় থাকতে পারি না, যা আমার কাছে নৈতিকভাবে সঠিক বলে মনে হয় না।” বলেন মিলা।

মিলা ম্যাগি পেশায় একজন লাইফগার্ড। ২০২৪ সালে ‘মিস ইংল্যান্ড’ নির্বাচিত হন। তারপর বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় দেশটির প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন মিলা

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ