সেন্টমার্টিনে রিসোর্টের গর্তে পড়ে প্রাণ গেল শিশুর
Published: 1st, June 2025 GMT
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে রিসোর্টের মাটি ভরাট কাজে তৈরি হওয়া গর্তে পড়ে মোহাম্মদ রায়হান স্বাদ নামে দেড় বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সেন্টমার্টিন নজরুল পাড়ার নীল দিগন্ত রিসোর্টের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রায়হান সেন্টমার্টিন দ্বীপের নজরুলপাড়ার বাসিন্দা ও মুদি দোকানদার কেফায়েত উল্লাহর ছেলে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নীল দিগন্ত রিসোর্ট নির্মাণ করার সময় কেফায়েত উল্লাহর বাড়ির পাশের ফসলি জমি থেকে মাটি ব্যবহার করা হয়। এরপর সেই গর্ত আর ভরাট করা হয়নি। ফলে সেখানে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
আজ সকাল ১১টার দিকে কয়েকজন একসঙ্গে খেলাধুলা করার একপর্যায়ে শিশু রায়হান ওই গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন স্বজনরা। এরপর সেন্টমার্টিন ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য সহকারী তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য সহকারী শহিদুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
নিহত শিশুর বাবা কেফায়েত উল্লাহ বলেন, রিসোর্টের মালিক ব্যবসা করে কোটিপতি হচ্ছেন কিন্তু আমাকে সন্তানহারা করা হয়েছে। রিসোর্টের জমি ভরাট করে ওই গর্তে বেড়া না দেওয়ায় মালিকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান তিনি।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক অজিত কুমার দাশ শিশু মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে এ ব্যাপারে পুলিশ আরও তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কক স ব জ র ন হত স ন টম র ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুলিয়ারচরের ব্যাংকটিতে কী হয়েছিল দেখা গেল সিসিটিভি ফুটেজে
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকের একটি উপশাখায় একসঙ্গে ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে এই ফুটেজ সংগ্রহ করেছে তারা।
ঘটনার পর থেকে সিসিটিভি ফুটেজকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচনায় নিচ্ছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময়ের ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেলা একটার কিছু আগে ব্যাংকে কয়েকজন গ্রাহক আসেন এবং লেনদেন শেষে চলে যান। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ব্যাংকে আর কোনো গ্রাহক ঢোকেননি। গ্রাহকশূন্য ব্যাংকের ভেতর হঠাৎ হিসাব বিভাগের কর্মী হোসনা রহমান হেলে পড়ে যান এবং বমি করতে থাকেন। এরপর একে একে আরও পাঁচজন কর্মী হেলে পড়েন। তাঁদের মধ্যে দুজন নারী। কেউ কেউ অর্ধ-অচেতন অবস্থায় বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শাখা ব্যবস্থাপক সৌমিক জামান খানসহ দুজন চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারেননি। তাঁদেরও বমি করতে দেখা যায়।
ফুটেজে দেখা গেছে, নিরাপত্তাকর্মী কামাল হোসেন তুলনামূলকভাবে সুস্থ ছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি ক্যাশ কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যান এবং টেলিফোন ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু সফল হননি। টেলিফোন ধরতে গিয়ে কাচ ভেঙে ফেলেন। এ অবস্থায় একজন গ্রাহক ব্যাংকে প্রবেশ করলে কামাল হোসেন তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। ওই গ্রাহক দ্রুত নিচে নেমে যান। কিছুক্ষণ পর ভবনের আরেক নিরাপত্তাকর্মী জুয়েল মিয়া এসে অন্যদের সহযোগিতায় অসুস্থ ব্যক্তিদের বাইরে বের করে আনেন।
আরও পড়ুনব্যাংকের ভেতরে পড়ে ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, করছিলেন বমি২০ ঘণ্টা আগেভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুস সাকিব ও কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন আজ সকালে ফুটেজের এসব তথ্যের কথা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। ফুটেজ পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে, ঘটনাটি নাশকতা নয়। ডাকাতির ঘটনাও নয়। ব্যাংকের টাকা পয়সা এদিক-ওদিক হয়নি। ভল্ট ও ক্যাশবাক্স অক্ষত আছে।
পুলিশের সন্দেহ জেনারেটর ঘিরে। ব্যাংকের ভেতরের একটি বন্ধ ঘরে রাখা ছিল জেনারেটরটি, যদিও তা বাইরে রাখার নিয়ম। দুর্ঘটনার দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চার ঘণ্টা ধরে চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ হয়ে থাকতে পারে।
ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। সিআইডির ক্রাইম টিম ঘটনাস্থল থেকে খাবার, পানি, চা ও বমির নমুনা সংগ্রহ করেছে। পরীক্ষার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে আসল কারণ।’
গতকাল দুপুরে ব্যাংকের কর্মীরা একে একে অচেতন হতে শুরু করেন। এ ঘটনার পর ব্যাংকের ভেতরের চিত্র