আনন্দ, চমক আর তারকায় ভরপুর বিটিভির ‘আনন্দমেলা’
Published: 1st, June 2025 GMT
ঈদের দিন শুধু নতুন জামা আর গরুর মাংসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। এই ভাবনাতে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) প্রতি বছর সাজিয়ে তোলে তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘আনন্দমেলা’। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বরং এবারের আয়োজনে রয়েছে চমক, সুর, ছন্দ, রং ও তারকাময় এক বিশাল উপহার। ঈদের রাত ১০টায় যখন শহরের রাস্তাগুলো ফাঁকা হয়ে যাবে, বাড়ির বারান্দায় জমে উঠবে গল্প, তখনই টিভির পর্দায় শুরু হবে ‘আনন্দমেলা’।
এবার অনুষ্ঠানটির হাল ধরেছেন দুই অভিনয়শিল্পী। তারা হলেন– নুসরাত ইমরোজ তিশা ও ইন্তেখাব দিনার। তাদের উপস্থাপনাতেই খুলে যাবে আনন্দমেলার একের পর এক পর্দা। শুরুতেই দেখা যাবে কবিতার রাজ্য। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী তিন নারী চরিত্র ‘নুরজাহান’, ‘লায়লী’ আর ‘চাঁদ সুলতানা’ যেন এবার উঠে এসেছেন নতুন আলোয়, নতুন ছন্দে। আনিকা কবির শখ হয়েছেন চাঁদের কন্যা ‘চাঁদ সুলতানা’, সামিরা খান মাহি হয়েছেন স্রোতের মাঝে ভেসে আসা ‘নুরজাহান’ আর মীম চৌধুরী হয়েছেন ‘লায়লী’। তারা তিনজন একসঙ্গে অংশ নিয়েছেন নজরুলের আরেকটি ‘আমি পূরব দেশের পুরনারী’ গানে।
এরপরেই সিনেমার গান নিয়ে মঞ্চ মাতাবেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরী ও দিঘী। তাদের দু’জনকে দেখা যাবে কোলাজ গানের সঙ্গে। তাদের পরিবেশনার পর থাকছে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের গান। তাঁর কণ্ঠে ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’ গানটি যেন এক শ্রুতিমধুর শ্রদ্ধাঞ্জলি অতীত দিনের সোনালি সময়কে তুলে আনবে। রকপ্রেমীদের জন্য থাকবে ওয়ারফেজ ব্যান্ডের পরিবেশনা। গানের এই দোলাচল পেরিয়ে থাকছে তারকার ভুবনে–আর সেখানে এই প্রথমবারের মতো ‘আনন্দমেলা’র অতিথি হিসেবে আসছেন শাকিব খান। নিজের নতুন ছবির গানে পারফর্ম করবেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিশার সঙ্গে জমবে তাঁর এক গভীর আলাপচারিতা–সিনেমা, জীবন, ঈদ এবং তারকা হয়ে ওঠার গল্প।
তারপর মজার মুহূর্ত! অন্যদিকে আবু হেনা রনি হাসাবেন ‘গরুর হাট’ নিয়ে। তাঁর কৌতুকের পাশাপাশি থাকবে হালকা সামাজিক খোঁচা। এরপর থাকছে কয়েকটি নাটিকা। ‘গুজব’, ‘গরুর হাট’, ‘গ্রীষ্মকালীন ফল’ আর ‘টেলিফোন পর্ব’। প্রতিটি যেন একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য গল্প আর হাসির খোরাক। এগুলোতে অভিনয় করেছেন জিল্লুর রহমান, কচি খন্দকার, সোহেল খান, সুভাশিষ ভৌমিক, শাহীন আলম, এবিএম আজাদ, মেহেদি হাসান তরু ও শৈলী। এখানেই শেষ নয়। গেম শোতেও থাকছে টুইস্ট। ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের নিয়েও রয়েছে নানা আয়োজন। এতে অংশ নিয়েছেন সাব্বির আহমেদ, শারমিন আক্তার সুপ্তা আর আর্চার বন্যা আক্তার। এই বিশাল আয়োজনটির পেছনে আছেন তিনজন প্রযোজক। তারা হলেন সাহারিয়ার মোহাম্মদ হাসান, হাসান রিয়াদ ও মামুন মাহমুদ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।